বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্র সফরে খরচ বাঁচাতে পাক দূতাবাসে থাকবেন ইমরান

ইসলামাবাদের এই সিদ্ধান্তে কিছুটা মনক্ষুণ্ন ওয়াশিংটন
যাযাদি ডেস্ক
  ০৯ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান

দেশের অর্থ সংকট কাটাতে ক্ষমতায় এসেই সাবেক পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের মহিষ বিক্রি করেছিলেন তিনি। মন্ত্রী-আমলাদের জন্য বরাদ্দ খাবারের পরিমাণে কাটছাঁট করেছিলেন। এমনকি, মন্ত্রীদের বিমানে ফার্স্ট ক্লাসের বদলে বিজনেস ক্লাসে যাতায়াতেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন। এবার বিদেশ সফরে গিয়ে আরও অভিনব পন্থায় অর্থ সঞ্চয়ের পথে হাঁটতে চলেছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। আগামী ২১ জুলাই তিন দিনের যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়ে কোনো বিলাসবহুল হোটেলে না থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ইমরান। পরিবর্তে ওয়াশিংটনে অবস্থিত পাক রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে থাকবেন বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। সোমবার এমন খবরই জানা গেছে পাক সংবাদমাধ্যম সূত্রে। সংবাদসূত্র : ডন, আইএএনএস

ইসলামাবাদ সূত্রে খবর, ওই তিন দিন ওয়াশিংটন ডিসিতে অবস্থিত পাক রাষ্ট্রদূত আসাদ মজিদ খানের বাসভবন থাকবেন ইমরান খান। রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে থাকলে প্রধানমন্ত্রী ইমরানের সফরের খরচ উলেস্নখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।

কারণ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পসহ অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করতে যাবেন সেখান থেকেই। যদিও ইসলামাবাদের এই সিদ্ধান্তে কিছুটা হলেও মনক্ষুণ্ন ওয়াশিংটন। তাদের দাবি, যেকোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা যুক্তরাষ্ট্র সফরে এলে, নিরাপত্তার সব দায়িত্ব সামলায় মার্কিন গোয়েন্দা দপ্তর। তারাই সেই রাষ্ট্রনেতার নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন এবং প্রশাসন শহর নিয়ন্ত্রণ করে। এবার ইমরান খান পাক রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে থাকলে, সেই ব্যবস্থায় অনেকটাই অসুবিধা হবে বলে অনুমান মার্কিন বিশেষজ্ঞদের।

প্রত্যেক বছর বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বহু প্রেসিডেন্ট এবং প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটন সফরে যান। রাজধানী ওয়াশিংটনের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা যাতে ব্যাহত না হয়, সেটি নিশ্চিত করতে শহর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে মার্কিন ফেডারেল সরকার।

ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক প্রাণকেন্দ্রে রয়েছে পাকিস্তানি দূতাবাসের বাসভবন। ওই এলাকায় ভারত, তুরস্ক, জাপান-সহ আরও কয়েক ডজন দেশের দূতাবাস রয়েছে। কোনো রাষ্ট্রপ্রধান ওয়াশিংটন সফরে গেলে সেখানে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ছাড়াও মার্কিন কর্মকর্তা, কংগ্রেস সদস্য, গণমাধ্যম এবং থিঙ্ক ট্যাঙ্কসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পাকিস্তানের রাষ্ট্রদূতের বাসভবন ছোট হওয়ায় অনেক সময় দূতাবাসেই বৈঠক করতে হয়। সেক্ষেত্রে শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থার ওপর চাপ পড়তে পারে। আর এটি করতে হলে ইমরান ও তার সফরসঙ্গীদের যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্সের বাসভবনসহ অধিকাংশ দূতাবাসের পাশ দিয়ে যেতে হবে। এ জন্য রাষ্ট্রদূতের বাসভবনে অবস্থানে ইমরান খানের নেয়া পরিকল্পনা বাতিল হতে পারে।

প্রসঙ্গত, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর এই প্রথম ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠক করবেন ইমরান খান। যে বৈঠকের দিকে চেয়ে রয়েছে দিলিস্নও। ভারতের আশা, এই বৈঠক থেকে সন্ত্রাসবাদ ইসু্যতে পাকিস্তানকে কড়া বার্তা দেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্যসহ অন্যদের সহায়তায় এরই মধ্যেই মাসুদ আজহারকে আন্তর্জাতিক জঙ্গির তকমা দিয়েছে জাতিসংঘ। দীর্ঘ টালবাহানার পর যে প্রস্তাবকে সমর্থন করেছে পাকিস্তানের সব ঋতুর বন্ধু চীনও। এ ছাড়া গত বছরের জুন মাসেই পাকিস্তানকে 'ধূসর তালিকাভুক্ত' করেছিল 'দ্য ফিনান্সিয়াল অ্যাকশন টাস্ক ফোর্স' এফএটিএফ।

সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পাকিস্তানকে এরই মধ্যে চরম হুশিয়ারি দিয়েছে এফএটিএফ। ইমরান প্রশাসন ও পাকিস্তানের সেনাবাহিনীকে নির্দিষ্ট সময়সীমা বেঁধে দিয়ে এফএটিএফ-এর কড়া বার্তা, আগামী চার মাসের মধ্যে জাতিসংঘের নির্ধারিত জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে ইসলামাবাদকে। না হলে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে পাকিস্তানকে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<57341 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1