বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
হংকংয়ের ক্যারি লামের নতুন ঘোষণা

প্রত্যর্পণ বিলের 'মৃতু্য' হয়েছে

ম পুরোপুরি প্রত্যাহারের দাবি নিয়ে কিছু বলেননি ম বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার হুমকি
যাযাদি ডেস্ক
  ১০ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম

বিতর্কিত প্রত্যর্পণ বিলটির 'মৃতু্য' হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন হংকংয়ের প্রধান নির্বাহী ক্যারি লাম। মঙ্গলবার এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, বিলটি নিয়ে সরকারের কাজ 'সম্পূর্ণ ব্যর্থ' হয়েছে। তবে বিক্ষোভকারীরা বিলটি পুরোপুরি প্রত্যাহারের যে দাবি তুলেছিলেন, সে বিষয়ে তিনি কিছু বলেননি। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

সংবাদ সম্মেলনে লাম বলেন, 'সরকারের আন্তরিকতা এবং আইন পরিষদে প্রক্রিয়াটি আবার শুরু করা হবে কি-না, তা নিয়ে এখনো সন্দেহ ও উদ্বেগ রয়ে গেছে। তাই আমি এখানে আবার বলছি, এ ধরনের কোনো পরিকল্পনা নেই। বিলটি এখন মৃত।' এর আগে কথিত ওই অপরাধী প্রত্যর্পণ বিলে কোনো কাটছাঁট করা হবে না বলে মন্তব্য করেছিলেন ক্যারি লাম। তবে গণআন্দোলনের মুখে বিলটি স্থগিতের পর উল্টো জনগণের কাছে ক্ষমা চাইতে বাধ্য হন তিনি। তিনি বলেছিলেন, ২০২০ সালে বর্তমান আইন পরিষদের মেয়াদ শেষ হলে বিলটি 'মারা যাবে'। তবে সর্বশেষ মঙ্গলবার খোলাখুলি স্বীকার করেন, তার সরকারের ওই প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে।

প্রত্যর্পণ বিল নিয়ে গত কয়েক সপ্তাহ ধরে হংকংয়ে ব্যাপক অস্থিরতা বিরাজ করছে। বিতর্কিত এই বিলটিতে হংকংয়ের কোনো অপরাধীকে প্রয়োজন হলে চীনের কাছে হস্তান্তর করার বিধান রাখা হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের দাবি, এর মাধ্যমে হংকংয়ের বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন হবে এবং এটি চীন সরকারের সমালোচকদের বিরুদ্ধে ব্যবহৃত হতে পারে। বিক্ষোভের মুখে গত মাসে ক্যারি লাম বিলটি আইন পরিষদে উত্থাপন স্থগিত রাখেন। তবে বিক্ষোভকারীরা তার এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে বিলটি সম্পূর্ণ প্রত্যাহারের দাবি জানাচ্ছে। সর্বশেষ গত সপ্তাহে বিক্ষোভকারীরা হংকংয়ের আইন পরিষদ ভবনে প্রবেশ করে এবং সেখানে ভাঙচুর চালায়। বিলটি নিয়ে তাদের উদ্বেগ তুলে ধরতে গত ৭ জুলাই মূল ভূখন্ডের চীনা পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় হংকংয়ের এমন একটি এলাকায় কয়েক হাজার প্রতিবাদকারী সমাবেশ করেছিল।

সমালোচকরা বলছেন, এই প্রত্যর্পণ বিলের কারণে চীন হংকংয়ের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের সুযোগ পাবে। হংকংবাসীও এ আশংকার কারণে বিলটির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছে। সর্বস্তরের লাখ লাখ লোক রাস্তায় নেমে এসেছে। বলা হচ্ছে ১৯৯৭ সালে চীনের কাছে হংকংয়ের হস্তান্তরের পর থেকে এটিই হচ্ছে সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ।

সিভিক পার্টির আইনপ্রণেতা অ্যালভিন ইয়েয়াং অবশ্য বলেছেন, 'বিলটি মৃত বলা হচ্ছে রাজনৈতিক বর্ণনা এবং এটি আইন পরিষদের ভাষা নয়। আমরা বুঝতে পারছি না প্রধান নির্বাহী কেন প্রত্যাহার শব্দটির ব্যবহার প্রত্যাখ্যান করছেন।'

সাবেক ব্রিটিশ উপনিবেশ হংকং চীনের অংশ হলেও 'এক দেশ, দুই পদ্ধতিতে' পরিচালিত হয় এবং একটা পর্যায় পর্যন্ত স্বায়ত্তশাসন ভোগ করে। হংকংয়ের নিজস্ব বিচার ব্যবস্থা ও চীনের মূল ভূখন্ড থেকে পৃথক আইনি ব্যবস্থা আছে। হংকং চীনের বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে বিবেচিত হলেও ২০৪৭ সাল পর্যন্ত অঞ্চলটির স্বায়ত্তশাসনের নিশ্চয়তা দিয়েছে দেশটি। ১৫০ বছর ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনে থাকার পর লিজ চুক্তির মেয়াদ শেষে ১৯৯৭ সালের ১ জুলাই অঞ্চলটি চীনের কাছে ফেরত দেয়া হয়েছিল।

উলেস্নখ্য, ২০১৮ সালের এক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে এই বিলটি তৈরি করা হয়। তাইওয়ানে ছুটি কাটানোর সময় অন্তঃসত্ত্বা বান্ধবীকে হত্যার অভিযোগ ওঠে হংকংয়ের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। কিন্তু তাইওয়ানের সঙ্গে হংকংয়ের বন্দি বিনিময়ের কোনো চুক্তি না থাকায় সেই ব্যক্তিকে এখন তাইপেতে বিচারের জন্য পাঠানো যাচ্ছে না। কিন্তু এখন তাইওয়ানও জানিয়েছে, সন্দেহভাজন সেই খুনের মামলার আসামিকে ফেরত নিতে চায় না তারা। কেননা এটি এমন এক উদাহরণ তৈরি করবে, যা চীন ভবিষ্যতে কাজে লাগাতে পারে।

বিক্ষোভ অব্যাহত রাখার হুমকি : এদিকে, হংকংয়ের বেইজিংপন্থী নেতা ক্যারি লাম প্রত্যর্পণ বিলকে মঙ্গলবার মৃত ঘোষণা করলেও বিক্ষোভকারীরা তার মন্তব্যকে নাকচ করে আরও সমাবেশ করার হুমকি দিয়েছে। নেতৃস্থানীয় গণতান্ত্রিক কর্মী জসুয়া ওং বলেন, বিল নিয়ে লামের এই কথা আরেকটি হাস্যকর মিথ্যা। আইনি কর্মসূচির মধ্যে বিলটি আগামী জুলাই পর্যন্ত রয়ে যাবে। জসুয়া ওং ২০১৪ সালের বিক্ষোভে ভূমিকা রাখার কারণে কারারুদ্ধ হন। সম্প্রতি তিনি মুক্তি পেয়েছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<57466 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1