শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
তেহরান-ওয়াশিংটন দ্বন্দ্ব

আলোচনায় বসতে ট্রাম্পকে শর্ত দিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট

চুক্তি বহাল রাখতে বৈঠক ইউরোপীয় দেশগুলোর
যাযাদি ডেস্ক
  ১৬ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি

ওয়াশিংটন যদি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় এবং ২০১৫ সালের স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তিতে আবার ফিরে আসে; তবেই যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ইরান আলোচনায় বসতে প্রস্তুত বলে মন্তব্য করেছেন প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি। রোববার জাতির উদ্দেশে টেলিভিশনে দেয়া এক ভাষণে ইরানের প্রেসিডেন্ট এসব কথা বলেছেন। এদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন বলছে, পারমাণবিক ও নিরাপত্তা ইসু্যতে ইরানের সঙ্গে নতুন করে আরও চুক্তি নিয়ে আলোচনার জন্য প্রস্তুত রয়েছে তারা। সংবাদসূত্র : রয়টার্স

তবে ইরান বলছে, ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তি থেকে ২০১৮ সালের মে মাসে যুক্তরাষ্ট্র বেরিয়ে যাওয়ার আগে তেহরান যে পরিমাণে তেল রপ্তানি করত, ঠিক একই পরিমাণে তেল রপ্তানির সুযোগ পুনরায় না দেয়া পর্যন্ত আলোচনায় বসা হবে না। হাসান রুহানি বলেন, 'আমরা সব সময় আলোচনায় বিশ্বাস করি... তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যদি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয়, অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বাতিল করে এবং চুক্তিতে ফিরে আসে, তাহলে আজকেই, এই মুহূর্তে, যেকোনো জায়গায় আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় প্রস্তুত।'

অন্যদিকে, 'ওয়াশিংটন পোস্ট'কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ইরানের প্রেসিডেন্টের আলোচনায় বসার প্রস্তাব এবং শর্ত প্রত্যাখ্যান করেছেন। পম্পেও বলেছেন, রুহানি একই ধরনের প্রস্তাব সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামাকেও দিয়েছিলেন। পম্পেও বলেন, 'অবশ্যই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। কিন্তু এটা এমন একটি পথ, যে পথে আগের প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে এবং ইরানের পারমাণবিক চুক্তি স্বাক্ষর হতে দিয়েছে। যা প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রশাসন এবং আমি মনে করি, এই চুক্তি ছিল একটি বিপর্যয়।'

চুক্তি বহাল রাখতে বৈঠকে ইউরোপীয় দেশগুলো

এদিকে, ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি বহাল রাখতে বৈঠকে বসছে এতে স্বাক্ষরকারী ইউরোপীয় দেশগুলো। সোমবার ব্রাসেলসে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স ও জার্মানির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের এই বৈঠকে মিলিত হওয়ার কথা। বৈঠকে মধ্যপ্রাচ্যের উত্তেজনা নিরসনের চেষ্টা চালানো হবে।

চুক্তি রক্ষায় নতুন পদক্ষেপ নিতে চান ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট। তেহরানের সঙ্গে এই উত্তেজনা সত্ত্বেও ব্রাসেলসের বৈঠকে যোগ দিচ্ছেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ওই বৈঠক সামনে রেখে তিনি জানিয়েছেন, জার্মানি ও ফ্রান্সের পাশাপাশি পারমাণবিক চুক্তি রক্ষায় যা কিছু করা সম্ভব, তার সবকিছুই করা হবে। একই সঙ্গে ইরানকে চুক্তি মেনে চলতে উৎসাহ দিতে কাজ করা হবে।

২০১৫ সালের জুনে ভিয়েনায় ইরানের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, রাশিয়া, চীন ও জার্মানির স্বাক্ষরিত চুক্তি অনুযায়ী, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি না করার প্রতিশ্রম্নতি দেয় তেহরান। পূর্বসূরি ওবামা আমলে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিকে 'ক্ষয়িষ্ণু ও পচনশীল' আখ্যা দিয়ে গত বছরের মে মাসে তা থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। ওই বছরের নভেম্বর থেকে তেহরানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল শুরু করে ওয়াশিংটন। এদিকে, ইউরোপীয় দেশগুলো চুক্তি বাস্তবায়নের কথা মুখে বললেও কার্যত তারা কোনো পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ করে আসছে ইরান।

ব্রাসেলসে তিন ইউরোপীয় দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকে ইরানকে প্রতিশ্রম্নতি রক্ষায় উৎসাহিত করার চেষ্টা করার কথা। বৈঠক সামনে রেখে তিন দেশের এক যৌথ বিবৃতিতে ওই চুক্তির প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। সম্পর্ক নিয়ে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ঘটনাপ্রবাহে গভীর সমস্যায় পড়েছে তারা। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যকার উত্তেজনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে এতে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, 'আমরা বিশ্বাস করি দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করা, উত্তেজনা নিরসনের পথ খোঁজা এবং আবারও আলোচনা শুরুর সময় এসেছে। ঝুঁকি এমন যে, সব অংশীদারেরই থামার দরকার রয়েছে, আর নিজেদের কর্মকান্ডের সম্ভাব্য পরিণতি বিচার করার প্রয়োজন রয়েছে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<58439 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1