শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বর্ণবাদী মন্তব্য :সমালোচনায় আরও বেপরোয়া ট্রাম্প

যাযাদি ডেস্ক
  ১৭ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

বিরোধীদের পাশাপাশি নিজ দলের অনেকের সমালোচনার মধ্যেই মার্কিন কংগ্রেসের চার নারী প্রতিনিধির বিরুদ্ধে আক্রমণের ধার আরও বাড়িয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। গত রোববার টুইটারে ওই কংগ্রেসওম্যানদের উদ্দেশ্যে যেসব মন্তব্য করেছিলেন তা 'বর্ণবাদী', এমন ভাষ্যও সোমবার হোয়াইট হাউসে ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে দেয়া এক বক্তৃতায় উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের মতে, যারা 'যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচক' তাদের দেশটি ছেড়ে দেয়াই উচিত। সংবাদসূত্র : রয়টার্স

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, 'আপনি যদি যুক্তরাষ্ট্র নিয়ে সন্তুষ্ট না হন, যদি সবসময়ই অভিযোগ করতে থাকেন, খুবই সোজা, আপনি চলে যেতে পারেন। রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টের এ বক্তব্যের সময় বিচ্ছিন্নভাবে কাউকে কাউকে হাততালি দিতেও দেখা গেছে।

ডেমোক্রেটদের মধ্যে বাম-ঘরানার হিসেবে পরিচিত চার কংগ্রেসওম্যানের নাম উলেস্নখ না করে রোববারের টুইটের ধারাবাহিকতাতেই ট্রাম্প এসব কথা বলেন। মার্কিন প্রেসিডেন্ট তার টুইটে 'দ্য স্কোয়াড' নামে পরিচিত ওই কংগ্রেস সদস্যদের 'যেসব ব্যর্থ ও অপরাধপ্রবণ দেশ থেকে তারা এসেছে, সেখানে চলে যাওয়ার' পরামর্শ দিয়েছিলেন।

ডেমোক্রেটদের পাশাপাশি সাংবাদিক-পেশাজীবী অনেকেই ট্রাম্পের এ মন্তব্যকে 'বর্ণবাদী' হিসেবে অ্যাখ্যা দিয়েছেন। ভিনদেশ থেকে আসা মানুষদের প্রতি প্রেসিডেন্টের 'বিদ্বেষমূলক টুইটের' নিন্দা জানিয়ে ডেমোক্রেটরা নিম্নকক্ষে একটি প্রস্তাবও আনতে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিনিধি পরিষদের (হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস) স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি।

ট্রাম্প অবশ্য তার মন্তব্যকে 'মোটেও বর্ণবাদী' মনে করছেন না। শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের সঙ্গে মতের মিলকেও আমলে নিচ্ছেন না তিনি। ট্রাম্প বলেন, 'এটা আমাকে উদ্বিগ্ন করছে না, কেননা অনেকেই আমার সঙ্গে একমত।'

রোববারের টুইটে নাম না বললেও ট্রাম্প যে ডেমোক্রেট দলীয় কংগ্রেসওম্যান নিউইয়র্কের আলেকজান্দ্রিয়া ওকাসিও-কোর্তেজ, মিনেসোটার ইলহান ওমর, ম্যাসাচুসেটসের আইয়ানা প্রেসলি ও মিশিগানের রাশিদা তালিবকে উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলেছেন, তা অনেকটাই স্পষ্ট। এ চার নারী ট্রাম্পের বিরুদ্ধে নিয়মিত তোপ দাগার পাশাপাশি মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদের বর্তমান ডেমোক্রেট দলীয় নেতাদেরও কঠোর সমালোচনা করে আসছেন। সপ্তাহখানেক আগে স্পিকার পেলোসির সঙ্গেও তাদের বিরোধ হয়।

স্কোয়াডের চার কংগ্রেসওম্যানের মধ্যে তিনজনেরই জন্ম যুক্তরাষ্ট্রে; তারা বেড়েও উঠেছেন সেখানেই। চতুর্থজন ইলহান ওমর শিশু বয়সে যুক্তরাষ্ট্রে যান। এদের মধ্যে ওকাসিও-কোর্তেজের জন্ম নিউইয়র্কের ব্রংকসে, একই শহরের কুইন্স হাসপাতালে ট্রাম্পেরও জন্ম।

এদিকে, ক্যাপিটল হিলে এক সংবাদ সম্মেলনে চার কংগ্রেসওম্যান বলেছেন, ট্রাম্প বিভক্তির বীজ বপন এবং অভিবাসন, স্বাস্থ্য ও কর বিষয়ক ব্যর্থ নীতি থেকে মানুষের দৃষ্টি সরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন। ওকাসিও-কোর্তেজ বলেন, 'দুর্বল মনের মানুষ ও নেতারা নীতি নিয়ে বিতর্ক ও চ্যালেঞ্জ এড়াতে দেশের প্রতি আনুগত্যকে চ্যালেঞ্জ করে।' ট্রাম্পের মন্তব্যে নিন্দা জানিয়ে আনা প্রস্তাবটি মঙ্গলবারই আলোচনার জন্য নিম্নকক্ষে ছাড়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রতিনিধি পরিষদের প্রভাবশালী ডেমোক্রেট সদস্য স্টেনি হোয়ের।

এ ধরনের প্রস্তাব প্রতিনিধি পরিষদের রিপাবলিকান সদস্যদের জন্য 'বিব্রতকর' হতে পারে বলে ধারণা পর্যবেক্ষকদের। এমন একটা বিষয়ে প্রেসিডেন্টের বিরোধিতা কিংবা পক্ষ অবলম্বন, দুটোর যে কোনোটিই তাদের জন্য হিতে বিপরীত হতে পারে। চার কংগ্রেসওম্যানের প্রতি ট্রাম্পের 'আক্রমণ' নিয়ে অনেক রিপাবলিকান চুপ থাকলেও বেশ কয়েকজন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অবস্থানও নিয়েছেন। প্রতিনিধি পরিষদের একমাত্র আফ্রিকান-আমেরিকান রিপাবলিকান প্রতিনিধি উইল হার্ড 'সিএনএনে' দেয়া মন্তব্যে ট্রাম্পের টুইটকে 'বর্ণবাদী' অ্যাখ্যা দিয়েছেন। উচ্চকক্ষ সিনেটের একমাত্র কৃষ্ণাঙ্গ রিপাবলিকানও টুইটারে প্রেসিডেন্টের মন্তব্যকে 'জাতিগতভাবে আক্রমণাত্মক' হিসেবে অভিহিত করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<58545 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1