শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
উত্তেজনা চরমে

ব্রিটিশ ট্যাংকার আটক করেছে ইরান

আরেকটি ট্যাংকার আটক করা হলেও ছেড়ে দেয়া হয়েছে সমস্যার দ্রম্নত সমাধান না হলে মারাত্মক ফল ভোগ করতে হবে তেহরানকে :যুক্তরাজ্য
যাযাদি ডেস্ক
  ২১ জুলাই ২০১৯, ০০:০০
ব্রিটিশ ট্যাংকার স্টেনা ইমপেরিও -ফাইল ছবি

পারস্য উপসাগরের হরমুজ প্রণালিতে ব্রিটিশ পতাকাবাহী একটি তেলের ট্যাংকার আটক করেছে ইরানের বিপস্নবী রক্ষীবাহিনী (আইআরজিসি)। তেহরানের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সমুদ্র আইন লঙ্ঘন করায় শুক্রবার ব্রিটিশ ওই ট্যাংকারটি আটক করে তারা। ব্রিটিশ পররাষ্ট্র দপ্তরও তাদের ট্যাংকার আটকের খবর নিশ্চিত করেছে। 'স্টেনা ইমপেরিও' নামের ওই ট্যাংকারটি আটকের ৪০ মিনিট পর ইরানের সেনাবাহিনী যুক্তরাজ্যের দ্বিতীয় আরেকটি ট্যাংকারও আটক করেছিল। যদিও পরে 'মেসদার' নামে ওই নৌযানটিকে ছেড়ে দেয়া হয়। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স

বিশ্বের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক এই পথে ট্যাংকার আটকের এমন ঘটনায় দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। যুক্তরাজ্য বলছে, পারস্য উপসাগরে ইরান তাদের দুটি জাহাজ আটক করেছে। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেছেন, যদি এই সমস্যার দ্রম্নত সমাধান না হয় তাহলে 'মারাত্মক ফল' ভোগ করতে হবে তেহরানকে। হান্ট বলেন, 'আমরা কোনো সামরিক উপায় খুঁজছি না, বরং এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে কূটনৈতিক পথের কথা বলছি।'

ট্যাংকার আটকের ঘটনার পর বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য যুক্তরাজ্যের মন্ত্রিসভা দুবার জরুরি বৈঠক করেছে। ব্রিটিশ মন্ত্রিসভার এক মুখপাত্র জানান, ?'সরকার ইরানের এমন অগ্রহণযোগ্য কর্মকান্ডে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এর মাধ্যমে ইরান আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথে কার্যক্রম চলানোর স্বাধীনতাকে চ্যালেঞ্জ করেছে।' মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ বিষয় নিয়ে যুক্তরাজ্যের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। এদিকে আইআরজিসি এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ইরানের হরমুজগান প্রদেশের বন্দর ও সামুদ্রিক যান চলাচল বিষয়ক সংস্থার অনুরোধে 'স্টেনা ইমরো' নামের একটি ব্রিটিশ তেল ট্যাংকার আটক করা হয়েছে। ট্যাংকারটি উপকূলে আনা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়া চলছে। এটিতে তলস্নাশি চালানো হবে। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক আইনের প্রতি সম্মান না দেখানোয় ইরানের ওই সংস্থা তেল ট্যাংকারটিকে আটকের অনুরোধ জানায়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে হরমুজ প্রণালি থেকে ২৩ ক্রুসহ ট্যাংকারটি আটক করে তারা।

হরমুজগান মেরিটাইম কর্তৃপক্ষের প্রধান আলস্নামুরাদ আফিফিপুর বলেন, 'যুক্তরাজ্যের পতাকাবাহী তেলের ট্যাংকার স্টেনা ইমপেরিও সম্পর্কে কিছু প্রতিবেদন পাওয়ার পর আরও অনুসন্ধানের লক্ষ্যে আমরা সেনাবাহিনীকে ওই ট্যাংকারটিকে বন্দর আব্বাসের দিকে নিয়ে যেতে অনুরোধ করি।'

ইরানি কর্তৃপক্ষ স্টেনা ইমপেরিওর বিরুদ্ধে জিপিএস বন্ধ রাখা, হরমুজের প্রবেশপথ দিয়ে না গিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার পথ ব্যবহার করা ও ধারাবাহিক সতর্কতা অবজ্ঞা করার অভিযোগ করছে বলে জানিয়েছে 'তাসনিম'। ব্রিটিশ এ নৌযানটি তেলের অবশেষ ডাম্পিং করে দূষণ সৃষ্টি করছিল বলেও ভাষ্য তেহরানের। স্টেনা ইমপেরিওর স্বত্বাধিকারী প্রতিষ্ঠান নর্দার্ন মেরিন ম্যানেজমেন্ট জানিয়েছে, তাদের নৌযানটি সৌদি আরবের জুবেল বন্দরের দিকে যাচ্ছিল।

\হএর কিছুক্ষণ পর 'মেসদার'কেও আটক করার খবর পাওয়া যায়। ইরানের আধা সরকারি বার্তা সংস্থা 'তাসনিম' পরে জানায়, তেহরান তেলবাহী ট্যাংকার মেসদারকে আটক করেনি। নিরাপত্তা ও পরিবেশ বিষয়ে সতর্ক করে সেটিকে ছেড়ে দেয়া হয়েছে। নৌযানটি পরে নির্দিষ্ট যাত্রাপথে ফিরেছে এবং এর ক্রুরা 'ভালো ও নিরাপদ' আছেন বলে জানিয়েছে মেসদারের ব্যবস্থাপক প্রতিষ্ঠান নরবাক।

এর আগে গত ৪ জুলাই যুক্তরাজ্য নিয়ন্ত্রিত জিব্রাল্টার প্রণালি থেকে ইরানি তেলবাহী সুপার ট্যাংকার 'গ্রেস-ওয়ান' আটক করে যুক্তরাজ্যের রয়্যাল নৌবাহিনী। এরই মধ্যে জাহাজের সব ক্রুকে মুক্তি দিলেও জাহাজটির বিষয়ে এখনো তদন্ত চালাচ্ছে জিব্রাল্টার কর্তৃপক্ষ। সিরিয়ার বানিয়াস শোধনাগারে জ্বালানি নিয়ে যাচ্ছে- এমন সন্দেহে ব্রিটিশ মেরিন সেনাদের সহায়তায় জিব্রাল্টার কর্তৃপক্ষ ওই সুপার ট্যাংকারটিকে আটক করেছিল। ওই শোধনাগারের ওপর ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিষেধাজ্ঞা আছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<59143 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1