বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

মশা মারতে সামরিক প্রযুক্তি!

নতুনধারা
  ০৯ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০
এই যন্ত্র দিয়েই মশার অবস্থান জানা যাবে

যাযাদি ডেস্ক

অস্ত্র আর সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণে বিশ্বে অনেকটাই এগিয়ে চীন। এমনকি দেশটির যুদ্ধবিমান আর অস্ত্র চ্যালেঞ্জ দেয় বিশ্বের সব দেশকে। কিন্তু সেই চীনেরও রয়েছে এক শত্রম্ন, যা সেনার কামানকেও ভয় পায় না। বলা হচ্ছে, সব যুদ্ধ মিলিয়ে যত মানুষের মৃতু্য হয়েছে, তার চেয়েও বেশি মানুষের প্রাণ গেছে এই শত্রম্নর হাতে। কপালে ভাঁজ ফেলে দেয়া সেই শত্রম্নর নাম মশা! এবার সেই শত্রম্নর বিরুদ্ধেই যুদ্ধ ঘোষণা করেছে দেশটি। ধেয়ে আসা মিসাইলকে চিহ্নিত করতে যে প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়, অনেকটা সেই প্রযুক্তি ব্যবহার করেই এবার মশার বংশ ধ্বংস করতে চায় দেশটি।

'সাউথ মর্নিং চায়না পোস্ট'র একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মশা রুখতে 'মিলিটারি গ্রেড' রেডার বানাচ্ছে দেশটি। বেইজিং ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির ডিফেন্স ল্যাবরেটরিতে তৈরি হচ্ছে এই 'কাটিং এজ' রেডার। আশপাশের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে একটিও মশা খুঁজে পেলে এই রেডার জানান দেবে। আর সেই অস্ত্রে প্রত্যেকটা মশাকে খতম করা সম্ভব হবে। এটি একটি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক ওয়েভ তৈরি করবে, যা প্রত্যেকটা মশাকে খুঁজে বের করে মারবে।

আপাতত যন্ত্রটির প্রোটোটাইপ তৈরি। ঠিক মশা মারতে নয়, প্রাথমিক ধাপে মশা খুঁজে পেতে তৈরি হচ্ছে এই যন্ত্র। শত্রম্নকে নিধন করতে হলে আগে তাকে চিহ্নিত করা জরুরি, এই মন্ত্রে জোরেশোরে চলছে শেষ মুহূর্তের গবেষণা।

কল্পবিজ্ঞানের গল্পের মতো শোনালেও মশার দল খুঁজে তাদের 'টার্গেট' করতে এখন রীতিমতো সামরিক কায়দায় পদক্ষেপ নিচ্ছে চীন। এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মকর্তা (নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক) জানান, সাফল্য পেলে মানবজাতির পক্ষে আশীর্বাদ হয়ে উঠবে এই যন্ত্র। কী কাজ করবে এই যন্ত্র? উত্তরে তিনি জানালেন, 'এই যন্ত্র থেকে এক ধরনের তড়িত-চুম্বকীয় তরঙ্গ বেরোবে, যা আশপাশের দুই কিলোমিটার পর্যন্ত মশাদের খুঁটিনাটি চরিত্রও জানিয়ে দেবে নিয়ন্ত্রণ কক্ষে (কন্ট্রোল রুম) বসে থাকা বিজ্ঞানীদের। মশাটি কোন্‌ জাতের, সেটির লিঙ্গ, কত জোরে উড়ছে বা কোনদিকে উড়ে যাচ্ছে, এই সবই ল্যাবে বসেই জানা যাবে।' তারপর সেটি কীভাবে নিধন করা যায়, তার পন্থা খোঁজা হবে। সেক্ষেত্রেও সামরিক কোনো সরঞ্জাম ব্যবহারের পথে হাঁটতে পারে চীন।

কিন্তু সবকিছু ছেড়েছুড়ে হঠাৎ মশা কেন? উত্তরে প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত শীর্ষ কর্মকর্তারা জানাচ্ছেন, আধুনিক সভ্যতার কাছে মশা এক অভিশাপ। বহু জটিল রোগের ভাইরাস এই পতঙ্গ বয়ে আনে। নোংরা জীবাণুর ওপর বসে সেই জীবাণু মানবদেহে সরাসরি প্রবেশ করিয়ে ডেকে আনে ম্যালেরিয়া বা জিকার মতো রোগ। মহামারি ছড়াতে মশার জুড়ি মেলা ভার।

'ওয়ার্ল্ড হেলথ অরগানাইজেশন'র (হু) এক প্রতিদেনে বলা হয়েছে, প্রতিবছর মশার কামড়ে অন্তত ১০ লাখ মানুষ মারা যায়। তাই আধুনিক সভ্যতা ও পরবর্তী প্রজন্মকে বাঁচাতে এবার মশার বংশ শেষ করতে উদ্যোগী হয়েছে বেইজিং। ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বাড়ির ছাদে এই যন্ত্র বসিয়ে মশাদের ঘাঁটির হদিস পাওয়া যাবে।

অন্যান্য এশীয় দেশে সাধারণ রেডার বসিয়ে পাখি বা বড় পতঙ্গদের গতিপ্রকৃতির ওপর নজর রাখা হয়। আর চীন এবার মশার মতো মারাত্মক, অথচ ছোট্ট পতঙ্গকে চিহ্নিত করতে মিলিটারি গ্রেড অস্ত্র বানিয়েছে। তাদের এই উদ্যোগকে কিন্তু সাধুবাদ দেয়াই যায়। সংবাদসূত্র : ইনডিয়া টাইমস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<61865 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1