শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
ভারতের স্বাধীনতা দিবস

কাশ্মীর নিয়ে আবারও সরব মোদি

জ্জ তার সরকার জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখের জনগণের সেবা করতে চায় জ্জ প্রতিরক্ষা প্রধানের নতুন পদ হচ্ছে ভারতে
নতুনধারা
  ১৬ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০
ভারতের ৭৩তম স্বাধীনতা দিবস ছিল গতকাল বৃহস্পতিবার। এদিন রাজধানী দিলিস্নর রেড ফোর্টে আয়োজিত অনুষ্ঠানে দেয়া এক ভাষণে কাশ্মীরের অতীত গৌরব ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি দাবি করেছেন, বিশেষ মর্যাদা দেয়া ভারতের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৭০ কাশ্মীরে শুধু দুর্নীতিকেই অনুপ্রেরণা দিয়েছে। তবে গত সপ্তাহ থেকে কাশ্মীরে চলতে থাকা যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা বা অতিরিক্ত সেনা মোতায়েন করে সব কিছু বন্ধ করে রাখার বিষয়ে নিজের বক্তব্যে কিছু উলেস্নখ করেননি মোদি। দিলিস্নর সেই অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি -আউটলুক ইনডিয়া

যাযাদি ডেস্ক

ভারতের স্বাধীনতা দিবসে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পক্ষে আবারও সরব হয়েছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ ধারা বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন ও বিশেষ মর্যাদা বাতিলের পদক্ষেপকে সরদার বলস্নভভাই প্যাটেলের স্বপ্ন বাস্তবায়নের এক ধাপ অগ্রগতি আখ্যা দিয়েছেন তিনি। বৃহস্পতিবার দেশটির ৭৩তম স্বাধীনতা দিবসে রাজধানী দিলিস্নর রেড ফোর্টে দেয়া এক ভাষণে এসব কথা বলেন মোদি। এর আগে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণেও কাশ্মীরের মর্যাদার বিষয়ে বলেছিলেন তিনি। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ

গত ৫ আগস্ট ভারতীয় সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিলের মধ্য দিয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসনের অধিকার ও বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেয় বিজেপি নেতৃত্বাধীন ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার। লাদাখ ও কাশ্মীরকে দুটি পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পরিণত করতে পার্লামেন্টে বিল আনা হয়। বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে সরব হলেও প্রয়োজনীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার অভাবে ভারতের লোকসভা ও রাজ্যসভা- দুই কক্ষেই পাস হয়ে যায় বিলটি। ওই দিন সকাল থেকে জম্মু-কাশ্মীর কার্যত অচলাবস্থার মধ্যে রয়েছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, স্কুল, কলেজ ও অফিস বন্ধ রাখা হয়েছে। কোনো গণপরিবহন নেই। ইন্টারনেট-মোবাইল পরিষেবাও সীমিত।

৭৩তম স্বাধীনতা দিবসে দিলিস্নতে অবস্থিত রেড ফোর্টে জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে নরেন্দ্র মোদি বলেন, '৭০ বছর ধরে যা হয়নি, এই সরকারের ৭০ দিনেরও কম সময়ের মধ্যে আমরা অনুচ্ছেদ ৩৭০ বাতিল করেছি। পার্লামেন্টের উভয় কক্ষ এবং সদস্যদের দুই-তৃতীয়াংশ এতে আমাদেরকে সমর্থন দিয়েছেন।' যারা অনুচ্ছেদ ৩৭০ কে সমর্থন করছেন তাদের কড়া সমালোচনা করেন তিনি।

কংগ্রেসকে ইঙ্গিত করে মোদি বলেন, 'যদি এটা এতই গুরুত্বপূর্ণ হতো, তাহলে কেন এই অনুচ্ছেদ স্থায়ী করা হয়নি? সর্বোপরি তাদেরকে অনেক মানুষ ভোট দিয়েছেন। কিন্তু তারা খুব সহজেই তাদের অবস্থান বদলে ফেলতে পারেন। তাদের বিষয়ে প্রশ্ন রয়েছে ভারতের।' নরেন্দ্র মোদি বলেন, তার সরকার জম্মু, কাশ্মীর ও লাদাখের জনগণের সেবা করতে চায়। এ সময় তিনি বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সঙ্গে পূর্ণ সংহতি প্রকাশ করেন। তাদেরকে সম্ভাব্য সব সহযোগিতা দেয়ার আশ্বাস দেন।

মোদি বলেন, '২০১৩-১৪ সালে যখন আমি দেশ সফর করেছিলাম, তখন দেশের মানুষের চোখে হতাশার ছাপ দেখেছি। তাদের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল, আমাদের দেশ কি কখনো পরিবর্তন হবে? কিন্তু গত পাঁচ বছরে আমরা সবাই একত্রিত হয়ে কাজ করেছি। জাতির অবস্থান এখন পাল্টে গেছে। বিশ্বাস ও আস্থাকে আমরা পরিবর্তন করে দিতে পেরেছি। জনগণের সমস্যা সমাধানের বিষয়ে আমাদেরকে ভাবতে হবে। যদিও এ পথে বাধা আছে, তবু তা অতিক্রম করতে হবে।'

প্রধানমন্ত্রী মোদি ভারতের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ইসু্যতে এদিন বক্তব্য রাখার পাশাপাশি ঘোষণা করেন প্রতিরক্ষা প্রধানের পদের বিষয়ে। তিনি জানিয়ে দেন, এবার থেকে ভারতীয় পদাতিক, নৌসেনা, ভারতীয় বিমানসেনা সংঘবদ্ধভাবে পেতে যাচ্ছে 'চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ' বা প্রতিরক্ষা প্রধান। তিনি তার ভাষণে বলেন, 'ভারতের সশস্ত্র বাহিনী দেশের গর্ব। আর এই শক্তিকে আরও বেশি শানিয়ে নিতে দেশের প্রয়োজন আরও পোক্ত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।' মোদি ঘোষণা করেন, 'দেশ এবার পেতে চলেছে প্রতিরক্ষা প্রধান।' এই নতুন পদের দ্বারা ভারতের সশস্ত্র বাহিনী আরও মজবুত হবে বলে দাবি তার।

চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফের দায়িত্ব হবে ভারতের তিন বাহিনীর মধ্যে সমন্বয় করা এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বাহিনীগুলোর যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করা। চার তারকা জেনারেল পদমর্যাদার একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফের দায়িত্ব পাবেন। সেনা, নৌ বা বিমান- যেকোনো বাহিনী থেকে একজনকে এই দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। তিন বাহিনীর বাজেট নির্ধারণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও তার ভূমিকা থাকবে। এ রকম একটি পদ সৃষ্টির জন্য দীর্ঘদিন ধরে সরকারকে পরামর্শ দিয়ে আসছিলেন সেনা কর্মকর্তারা। ১৯৯৯ সালে কার্গিলে পাকিস্তানের সঙ্গে যুদ্ধের পরে ভারতের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার ঘাটতিগুলো চিহ্নিত করতে একটি উচ্চ-পর্যায়ের কমিটি করা হয়। সেই কমিটির প্রতিবেদনেও একজন 'সিঙ্গল পয়েন্ট' অফিসার নিয়োগের সুপারিশ করা হয়, যিনি সকল বাহিনীর প্রধান হিসেবে প্রতিরক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে সমন্বয় করবেন। নরেন্দ্র মোদির প্রথম মেয়াদের সরকারে দুই বছর প্রতিরক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা মনোহর পরিক্করও 'চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ' পদ সৃষ্টির প্রস্তাবকে জোরালো সমর্থন দিয়েছিলেন। তবে নতুন ওই পদে কে আসবেন, সে বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানায়নি নরেন্দ্র মোদির সরকার।

প্রতিরক্ষা প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখার পাশাপাশি মোদি এদিন সন্ত্রাসবাদ নিয়েও বক্তব্য রাখেন। নাম উলেস্নখ না করে এদিনও একবার পাকিস্তানকে নিশানা করে মোদি বলেন, 'যারা সন্ত্রাসবাদকে নিরাপত্তা দেয়, তাদের মুখোশ খুলে দেয়া উচিত। বাংলাদেশ, আফগানিস্তান, শ্রীলংকাও সন্ত্রাসবাদের দ্বারা বিপর্যস্ত। বিশ্বের সব দেশের একসঙ্গে আসা উচিত ও সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো উচিত।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<62420 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1