শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১
হুমকিতে পৃথিবীর ফুসফুস

আমাজন :মিনিটে পুড়ছে ১০ হাজার বর্গমিটার বন

এনজিওগুলো আগুন দিচ্ছে : অভিযোগ ব্রাজিলের প্রেসিডেন্টের
যাযাদি ডেস্ক
  ২৩ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০
দাবানলে পুড়ছে আমাজন জঙ্গল

আগের চেয়ে আরও দ্রম্নতগতিতে দাবানলে পুড়ছে 'পৃথিবীর ফুসফুস'খ্যাত আমাজন জঙ্গল। ব্রাজিলের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা 'ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্স' (আইএনপিই) বলছে, চলতি বছর এখন পর্যন্ত ব্রাজিলে ৭২ হাজার ৮৪৩টি অগ্নিকান্ড হয়েছে। এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি আগুনের ঘটনা আমাজন জঙ্গলের, যা আগের বছরের তুলনায় ৮০ শতাংশ বেশি। সংবাদসূত্র : বিবিসি, ট্রিবিউন, সিএনএন

আইএনপিইর হিসাব মতে, দাবানলে প্রতি মিনিটে আমাজনের প্রায় ১০ হাজার বর্গমিটার এলাকা পুড়ে যাচ্ছে, যা একটি ফুটবল মাঠের প্রায় দ্বিগুণ আয়তনের সমান বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা, এ অবস্থা চলতে থাকলে জলবায়ু পরিবর্তনবিরোধী লড়াইয়ে বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হতে পারে। আইএনপিই জানায়, উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবিতে তারা চলতি বছরের প্রথম আট মাসেই আমাজন বনাঞ্চলে রেকর্ড ৭২ হাজারের বেশি বার আগুন লাগার প্রমাণ পেয়েছেন। এ সংখ্যা গত বছর একই সময়ের তুলনায় প্রায় ৮৩ শতাংশ বেশি।

পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে থাকা অক্সিজেনের ২০ শতাংশেরই উৎপত্তি আমাজনে। গবেষকদের মতে এই বন প্রতিবছর ২০০ কোটি মেট্রিক টন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ করে। সে কারণে একে ডাকা হয়ে থাকে 'পৃথিবীর ফুসফুস' নামে। বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির হারকে ধীর করতে আমাজনের ভূমিকাকে বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হয়। বিশ্বের দীর্ঘতম এ জঙ্গলটির আয়তন যুক্তরাষ্ট্রের আয়তনের প্রায় অর্ধেক।

ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট ফর স্পেস রিসার্স ২০১৩ সাল থেকে আমাজন জঙ্গলে আগুন লাগা নিয়ে গবেষণা করছে। মঙ্গলবার প্রকাশিত নতুন এক প্রতিবেদনে তারা জানিয়েছে রেকর্ড হারে পুড়ছে আমাজন জঙ্গল। এরই মধ্যে ব্রাজিলের রোন্ডানিয়া, অ্যামাজোনাস, পারা, মাতো গ্রোসো অঞ্চলের কিছু অংশে আগুন ছড়িয়ে পড়েছে। আমাজনে আগুন লাগা কোনো অস্বাভাবিক ঘটনা নয়। কিন্তু এবারের মতো আগুন আগে কখনো ছড়ায়নি জঙ্গলে।

আগুন এতটাই তীব্র হয়েছে যে, ব্রাজিলের সাও পাওলোর আকাশ কালো হয়ে গেছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, এটা আসলে মেঘ নয়, হাজার কিলোমিটার দূরে ভয়াবহ এক অগ্নিকান্ডের ধোঁয়া চলে এসেছে সেখানে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও দানবীয় আকারের সেই ধোঁয়ার কুন্ডলীর ছবি ভেসে বেড়াচ্ছে। সবুজ বনের ওপর দিয়ে লাল অগ্নিশিখা বয়ে বেড়াচ্ছে শুধু অন্ধকারই রেখে যাচ্ছে পেছনে। সেই ধোঁয়াই ১৭০০ মাইল পাড়ি দিয়ে পৌঁছেছে সাও পাওলোতে।

সামাজিক মাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত ছবিতে দেখা যাচ্ছে মধ্য দুপুরেও সেখানকার আকাশ কালো, সূর্য ঢেকে গেছে ধোঁয়া ও ছাইয়ে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের স্যাটেলাইট প্রকল্প কোপের্নিকাস আগুনের ধ্বংসযজ্ঞের একটি ম্যাপ প্রকাশ করেছে। ব্রাজিল থেকে পূর্ব আটলান্টিক উপকূল পর্যন্ত পুরো 'আগুন পথের' চিহ্ন আঁকা হয়েছে। দেশটির অর্ধেক এলাকাজুড়েই এখন কালো ধোঁয়া। সেই ধোঁয়া পৌঁছে গেছে পার্শ্ববর্তী পেরু, বলিভিয়া এবং প্যারাগুয়েতেও।

'এনজিওগুলো বনে আগুন দিচ্ছে'

এদিকে, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জার বোলসোনারো অভিযোগ করেছেন, এনজিওগুলো বনে আগুন দিচ্ছে। ক্ষমতায় এসে বিভিন্ন এনজিওর তহবিল বরাদ্দ কমিয়ে দেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট।

আর তাতেই ক্ষুব্ধ হয়ে তার সরকারকে লজ্জায় ফেলতে এ কাজ করছে। যদিও বোলসোনারো তার এ অভিযোগের পক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি। আর ব্রাজিলের কট্টরপন্থি প্রেসিডেন্ট বোলসোনেরো কাঠুরে ও কৃষকদের বনটি উজাড়ে উৎসাহ দিচ্ছেন বলে পরিবেশ সংরক্ষণবাদীরা অভিযোগ করেছেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<63489 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1