বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
ব্রেক্সিট সংকট

বরিস জনসনের হাতে ৪ বিকল্প

নতুনধারা
  ১২ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন

যাযাদি ডেস্ক

ব্রেক্সিট নিয়ে ব্রিটিশ পার্লামেন্টে এ পর্যন্ত ছয়বার অনুষ্ঠিত হওয়া ভোটে হেরে গেছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। ফলে স্বাভাবিকভাবেই তিনি সাময়িক সময়ের জন্য হলেও পার্লামেন্ট স্থগিত করে দিতে পারেন, তাতে আশ্চর্য হবার কিছু নেই। তবে বছরের এই সময়টাতে সাধারণত রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের সম্মেলন করে থাকে, ফলে পার্লামেন্ট এই সময়ে সাধারণত বন্ধই থাকে। কিন্তু পাঁচ সপ্তাহের মত দীর্ঘদিন বন্ধ থাকে না, এবং বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটা আশা করাও উচিত নয় যে এত দীর্ঘ সময় ধরে পার্লামেন্ট বন্ধ থাকবে।

ব্রিটিশ গণতন্ত্রকে 'চুরমার' করে দেয়ার জন্য জনসনকে দুষছেন বিরোধী নেতারা। তারা বলছেন, কার্যত এর মাধ্যমে দলের এমপিদের বিরোধীদের সঙ্গে জোট বাধা ঠেকানোর চেষ্টা করছেন, যাতে সময় স্বল্পতার কারণে তার চুক্তিহীন ব্রেক্সিট আটকাতে না পারেন তারা। তবে এটা ঠিক যে, এর মাধ্যমে জনসন কিছু বাড়তি সময় হাতে পাবেন। কিন্তু তিনি ঠিক কী করতে যাচ্ছেন?

ব্রেক্সিট বিশেষজ্ঞ রব ওয়াটসনের মতে, প্রধানমন্ত্রী জনসনের হাতে মূলত চারটি বিকল্প উপায় রয়েছে, এর যেকোন একটিকে তার বেছে নিতে হবে। প্রথমত, আইন অমান্য করে ৩১শে অক্টোবরের মধ্যে ইইউ ত্যাগ করা। দ্বিতীয়ত, দ্রম্নত একটি চুক্তি করা। তৃতীয়ত, পদত্যাগ করা অন্যথায় ইইউ ছাড়ার জন্য সময় বাড়িয়ে নেয়া। এখন দেখা যাক ব্রিটেন এবং তার জনগণের জন্য এইসব বিকল্পের মানে কী?

৩১ অক্টোবরের মধ্যে একটি চুক্তি না হলে, ইইউ ছাড়া ঠেকাতে পার্লামেন্টে একটি বিল পাস হয়েছে। তার মানে হচ্ছে, ব্রেক্সিটের জন্য সময় বাড়ানোর জন্য এখন দেশটির এমপিরা আইনগতভাবে বাধ্য। কিন্তু সরকার এই আইন সরাসরি অমান্য না করলেও, ইতিমধ্যেই আইনের সীমা নির্ধারণের বিষয়ে কঠিন ভাষায় বক্তব্য দিচ্ছে। চ্যান্সেলর সাজিদ জাভিদ বলেছেন, 'সরকার ইইউ এর কাছে সময় চাইবে না এবং ৩১ অক্টোবরের মধ্যেই ব্রেক্সিট হবে।' এছাড়া জনসন নিজেও সবসময় বলে এসেছেন, ৩১ শে অক্টোবরের মধ্যেই ব্রেক্সিট হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলছেন, পার্লামেন্ট বন্ধ থাকার সময়টিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছানোর কাজে ব্যবহার করবে সরকার। একইসঙ্গে চুক্তি ছাড়া ইইউ ত্যাগের বিষয়েও প্রস্তুতি নেয়া হবে। কিন্তু ইইউ বলছে, একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য ব্রিটিশ সরকারের তেমন কার্যকর উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। কয়েকদিন আগে পদত্যাগ করা কর্মসংস্থান মন্ত্রী আম্বার রাড জানিয়েছেন, বরিস জনসন কোন চুক্তিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন, এমন প্রমাণ কেউ দিতে পারবে না।

গত বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তিনি 'খাদে পড়ে মরে যাবেন' তবু ব্রেক্সিটের সময় বাড়াতে চাইবেন না। একটু বাড়াবাড়ি শোনালেও, জনসনের হাতে থাকা বিকল্পের একটি হচ্ছে পদত্যাগ করা এবং বলা যে, 'অন্য কেউ চাইলে সময় বাড়াক, আমি সময় বাড়াতে চাইবো না।'

এখন যদিও কনজারভেটিভ পার্টি পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারিয়েছে, এমনিতেও হয়ত সাধারণ নির্বাচন দিতে হবে তাদের। কিন্তু ইউরোপীয় ইউনিয়নকেও তো সে জন্য রাজি হতে হবে এবং ব্রিটেনকে চাইতে হবে যে কোন চুক্তি ছাড়া যেন ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে বেরিয়ে যেতে না হয় তাকে। জনসন পদত্যাগ করলে, পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী যিনি হবেন হাউজ অব কমন্সের মাধ্যমে ইইউ এর কাছে সময় বাড়ানোর আবেদন জানানোর জন্য ১৪দিন সময় হাতে পাবেন। সেটা হতে পারেন জেরেমি করবিন বা কেন ক্লার্ক। আবার শীর্ষস্থানীয় কোন আমলাকেও এ দায়িত্ব দেয়া হতে পারে, যদিও তেমন দৃষ্টান্ত বিরল।

সোমবার রাজকীয় সম্মতি পাওয়া নতুন আইন অনুযায়ী, ১৯ শে অক্টোবরের মধ্যে এমপিরা চুক্তিসমেত অথবা চুক্তিহীন ব্রেক্সিটে সম্মতি না দিলে, প্রধানমন্ত্রীকে ২০২০ সালের ৩১শে জানুয়ারি পর্যন্ত ব্রেক্সিট পেছানোর জন্য সময় চাইতে হবে। এখন এটিও জনসনের জন্য একটি বিকল্প, কারণ তাতে তার কিছুটা মানহানি হলেও তাৎক্ষণিক সংকট কাটবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<66360 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1