ইন্দোনেশিয়ার ভ‚মিকম্প বিধ্বস্ত পযর্টনদ্বীপ লম্বোক থেকে আরও অনেক আহতকে সরিয়ে নিয়েছে দেশটির উদ্ধারকারী ও সামরিক বাহিনীর সদস্যরা। জীবিত মানুষের খেঁাজে মঙ্গলবার ভোর থেকে নিখেঁাজ ফের তল্লাশি শুরু করে উদ্ধারকারী দল। গত রোববারের ৬ দশমিক ৯ মাত্রার ওই ভ‚মিকম্পের পর এখন পযর্ন্ত ৯৮ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে, বহু গ্রাম ধ্বংস হয়েছে এবং সেখানে অনেকে আটকা পড়ে আছেন। নিকটবতীর্ পযর্টনদ্বীপ বালিতেও কম্পন অনুভ‚ত হয়েছে, সেখানে দুইজন মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন কমর্কতার্রা। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়বে বলে তাদের ধারণা। সংবাদসূত্র : রয়টাসর্, বিবিসি
দেশটির দুযোর্গ প্রশমন সংস্থার (বিএনপিবি) মুখপাত্র সুতোপো পুবোর্ নুগ্রোহো টুইটারে জানিয়েছেন, ধ্বংসস্তূপ তন্ন তন্ন করে জীবিতদের খেঁাজ করছেন উদ্ধারকারীরা। পৃথক আরেক বিবৃতিতে বিএনপিবি জানিয়েছে, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা লম্বোকের উত্তরাঞ্চলে উদ্ধারকারীরা বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছেন। গত সোমবার এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে নুগ্রহো জানিয়েছিলেন, সেতু ধসে পড়ায় কিছু এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
লম্বোকের আংশিক ধ্বংসপ্রাপ্ত এলাকা কারাংকাউহানের ৪৫ বছর বয়সী বাসিন্দা রিদুয়ান জানিয়েছেন, এখন পযর্ন্ত কোনো ত্রাণ না পাওয়ায় নিজের খাবার কিনে খেতে হচ্ছে তার। নিজের ধ্বংস হয়ে যাওয়া বাড়ি থেকে কিছু দলিল-দস্তাবেজ উদ্ধারের চেষ্টার সময় তিনি বলেন, ‘আমরা কিছুই পাইনি।’
রোববারের ভ‚মিকম্পের পর থেকে একটার পর একটা পরাঘাতে (আফটার শক) লম্বোক দ্বীপ বারবার কেঁপে কেঁপে উঠছে বলে জানিয়েছে ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া ও ভ‚-পদাথির্বদ্যা সংস্থা (বিএমকেজি)। এসব পরাঘাতের মধ্যে একটি ছিল ৫ দশমিক ৫ মাত্রার, রাত ২টার দিকে এটি অনুভ‚ত হয়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। মঙ্গলবার সকাল পযর্ন্ত মোট ২৩০টি পরাঘাত রেকডর্ করা হয়েছে বলে বিএমকেজির তথ্য থেকে জানা গেছে।
এর আগে ২৯ জুলাই লম্বোকে ৬ দশমিক ৪ মাত্রার এক ভ‚মিকম্পে ১৭ জন নিহত হয়েছিলেন এবং দ্বীপটির একটি আগ্নেয়গিরির ঢালে ট্রেকিংরত কয়েকশ ট্রেকার আটকা পড়েছিলেন। মঙ্গলবারও পযর্টকদের দ্বীপটি ছেড়ে যেতে দেখা যায়। পযর্টকদের কিছু অংশ সামরিক বাহিনীর বাসে ও বাকিরা পশ্চিম লম্বোক থেকে বালিমুখি ফেরিতে করে দ্বীপ ছেড়েছেন।
কমর্কতার্রা জানিয়েছেন, লম্বোকের উত্তর-পশ্চিম উপক‚লের তিনটি গিলি দ্বীপ থেকে দুই হাজারের বেশি লোককে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। ভ‚মিকম্পের পর এই দ্বীপগুলোতে সুনামির শঙ্কা ছড়িয়ে পড়েছিল। ইন্দোনেশিয়ার তল্লাশি ও উদ্ধার সংস্থা জানিয়েছে, পযর্টকদের পাশাপাশি গিলির বাসিন্দারাও দ্বীপগুলো ছেড়ে যেতে চাইছে। দ্বীপগুলোতে কতজন পযর্টক আছেন, সে বিষয়ে দাপ্তারিক কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে দ্বীপগুলোতে হাজারখানেক পযর্টক আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।
প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলা বা প্যাসিফিক রিং অব ফায়ার এলাকায় অবস্থান হওয়ায় ইন্দোনেশিয়ায় প্রায়ই ভূমিকম্প হয়। ২০০৪ সালে ভারত মহাসাগরের এক সুনামিতে ইন্দোনেশিয়াসহ ১৩টি দেশে মোট দুই লাখ ২৬ হাজার মানুষ নিহত হয়েছিলেন। এর মধ্যে ইন্দোনেশীয় ছিলেন এক লাখ ২০ হাজার জনের বেশি।