আজকের যায়যায়দিন

ভারতের গান্ধী পরিবারের সদস্যদের জন্য রাষ্ট্রীয় বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা বা 'স্পেশাল প্রোটেকশন গ্রপ' (এসপিজি) তুলে নেয়া হয়েছে। এবার থেকে আর এসপিজি ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পাবেন না সোনিয়া, রাহুল এবং প্রিয়াঙ্কা গান্ধীরা। তার বদলে শুধু 'জেড পস্নাস' ক্যাটাগরির নিরাপত্তা পাবেন তারা। শুক্রবার সন্ধ্যায় এই সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয়া হয়। সংবাদসূত্র : এনডিটিভি, এবিপি নিউজ

এ নিয়ে গান্ধী পরিবার এবং কংগ্রেসের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। তবে সোনিয়া-রাহুলদের সরকারের পক্ষ থেকে এ নিয়ে কিছু জানানো হয়নি বলে দাবি গান্ধী পরিবারের ঘনিষ্ঠদের।

রাজনীতিকদের ওপর হামলার আশঙ্কার পরিপ্রেক্ষিতেই তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করা হয়। সম্প্রতি গান্ধী পরিবারের নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনা করে দেখার পরই এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। এক সরকারি কর্মকর্তা বলেন, 'এসপিজি নিরাপত্তার আওতায় যারা রয়েছেন, প্রতিবছরই তাদের ওপর হামলার আশঙ্কা কতটা রয়েছে, তা পর্যালোচনা করে দেখা হয়। গান্ধী পরিবারের ওপর হামলা আশঙ্কা অনেকটাই কমে এসেছে বলে সম্প্রতি দেখা গেছে।'

দেহরক্ষীদের হাতে ইন্দিরা গান্ধী নিহত হওয়ার পর ১৯৮৫ সালে বিশেষ প্রশিক্ষিত বাহিনীর সদস্যদের নিয়ে গঠিত হয় এসপিজি নিরাপত্তা ব্যবস্থা। প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের নিরাপত্তার দায়িত্ব তুলে দেয়া হয় তাদের হাতে। ১৯৯১ সালে গান্ধী পরিবার থেকেই ফের রাজীব গান্ধী নিহত হলে বদল আনা হয় ওই আইনে।

ইউক্রেন ও ইসরাইলকে সহায়তা বিল মার্কিন সিনেটে অনুমোদন

সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং তার পরিবারের সদস্যদের জন্যও এসপিজি নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়। ঠিক হয়, তিন হাজার সুশৃঙ্খল বাহিনী সারাক্ষণ তাদের নিরাপত্তা দেবে। ২০০৩ সালে অটলবিহারি বাজপেয়ির আমলে আবার ওই আইনে বদল ঘটিয়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রীদের ক্ষেত্রে এসপিজি নিরাপত্তার মেয়াদ ১০ থেকে কমিয়ে এক বছর করা হয়। তবে হামলার আশঙ্কা পর্যালোচনা করে বিশেষ ক্ষেত্রে ছাড় দেয়ার ব্যবস্থাও রাখা রাখা হয় সেই সময়।

২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদি ক্ষমতায় আসার পর এতদিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং ও তার পরিবার এসপিজি নিরাপত্তা পেতেন। একই পরিবারের দুই প্রধানমন্ত্রী আঁততায়ীদের হাতে খুন হওয়ায় গান্ধী পরিবারকেও ওই নিরাপত্তা দেয়া হতো। কিন্তু গত আগস্টে প্রথমে মনমোহন সিং ও তার পরিবারের এসপিজি নিরাপত্তা তুলে নেয়া হয়। তারপরই সোনিয়া-রাহুলদের নিরাপত্তা কাটছাঁট করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো।

এ নিয়ে দেশটির রাজনীতিতে ফের বিতর্ক শুরু হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের ৩৭০ ধারা বিলোপের পর একদিকে অমিত শাহের নিরাপত্তা যেখানে বাড়িয়ে 'জেড পস্নাস' থেকে 'জেড স্পেশাল' করা হয়েছে, সেখানে সোনিয়া-রাহুলদের নিরাপত্তা কেন কমিয়ে দেয়া হলো, তা নিয়ে এরই মধ্যে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই বিজেপি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে এরই মধ্যে কেন্দ্রকে আক্রমণ করেছেন কংগ্রেস নেতা আহমেদ প্যাটেল। টুইটারে তিনি লিখেছেন, 'রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই দেশের দুই সাবেক প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তার সঙ্গে আপস করেছে বিজেপি।'