শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
ন্যাটোর ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী

ঘরে গদি টলমল, লন্ডনে ট্রাম্প

তুর্কি অভিযান নিয়ে সম্মেলনে বিতর্ক, নেতাদের বৈঠক আজ ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য জঘন্য :মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফরাসি পণ্যে শুল্কের হুমকি
যাযাদি ডেস্ক
  ০৪ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০
সামরিক জোট ন্যাটোর ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ২৮টি দেশের শীর্ষ নেতারা মঙ্গলবার লন্ডনে একত্রিত হয়েছেন। দুই দিনের এই শীর্ষ সম্মেলনের এক ফাঁকে অনুনাষ্ঠনিক এক বৈঠকে লন্ডনের উইনফিল্ড হাউসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ -ডেইলি মেইল

সামরিক জোট 'নর্থ আটলান্টিক ট্রিটি অর্গানাইজেশন'র (ন্যাটো) ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ২৮টি দেশের শীর্ষ নেতারা মঙ্গলবার লন্ডনে মিলিত হয়েছেন। দুই দিনের এই শীর্ষ সম্মেলনে ঐক্য ও সংহতির তুলনায় সিরিয়ায় তুর্কি অভিযানসহ বেশ কিছু চলমান বিতর্কিত ইসু্য প্রাধান্য পেয়েছে। এদিকে ট্রাম্প যখন লন্ডন সফর করছেন, ঠিক তখনই মার্কিন প্রতিনিধি পরিষদে তার বিরুদ্ধে ইমপিচমেন্ট বা অভিশংসন প্রক্রিয়া আরও জোরালো হয়ে উঠেছে। কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিদেশ সফরের সময় এমন পদক্ষেপের তীব্র সমালোচনা করেছেন ট্রাম্প। সংবাদসূত্র : ডয়চে ভেলে, এএফপি

এরই মধ্যে সামরিক জোট ন্যাটোর প্রয়োজনীয়তা ও কৌশলগত লক্ষ্য নিয়ে প্রতিনিধি দেশগুলোর মধ্যে মতপার্থক্য দানা বাঁধতে শুরু করেছে। এমন প্রেক্ষাপটে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাস জোটের মধ্যে রাজনৈতিক সহযোগিতা আরও জোরদার করার প্রস্তাব দিয়েছেন। বিশেষ করে সম্প্রতি সিরিয়ার উত্তরে তুর্কি বাহিনীর সামরিক অভিযানকে ঘিরে জোটের মধ্যে চরম মতপার্থক্য দেখা গেছে। যুক্তরাষ্ট্র আচমকা সেনা প্রত্যাহার করার পর ন্যাটোর সদস্যভুক্ত দেশ তুরস্ক সেখানে বর্বরোচিত হামলা শুরু করে। ন্যাটোর মধ্যে বিষয়টি নিয়ে কোনো সমন্বয় বা ঐকমত্যের প্রচেষ্টা দেখা যায়নি।

তুরস্কের বর্তমান ভূমিকার কারণে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বড় সংকট দেখা দিয়েছে। ন্যাটোর সদস্য দেশ হওয়া সত্ত্বেও যাবতীয় আপত্তি উপেক্ষা করে সে দেশ রাশিয়া থেকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরোধ প্রযুক্তি কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উলেস্নখ্য, ন্যাটোর সদস্য দেশগুলো সাধারণত এমন সামরিক সরঞ্জাম কেনে, যা ন্যাটোর কাঠামোয় খাপ খায়। এছাড়া সিরিয়ায় একতরফাভাবে সামরিক অভিযান চালিয়েও তুরস্ক চরম বিরক্তি সৃষ্টি করেছে।

লন্ডন সম্মেলনে ট্রাম্প কী বলবেন বা করে বসবেন, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছিল আগে থেকেই। মহাসচিব স্টলটেনবার্গের সঙ্গে প্রাতরাশ করার পর তিনি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ম্যাখোঁর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। ট্রাম্প, ম্যাখোঁ, মার্কেল, বরিস জনসন ও এরদোয়ান সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে প্রাথমিক স্তরে আলোচনা করেছেন। তবে আজই (বুধবার) শীর্ষ নেতাদের আনুষ্ঠানিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। প্রায় ৫০টি সিদ্ধান্তে অনুমোদন জানাতে পারেন তারা।

এদিকে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ন্যাটোকে আক্রমণ করে চলেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বিশেষ করে জার্মানিসহ অন্যান্য সদস্য দেশের ওপর কর বাড়ানোর জন্য চাপ দিয়ে চলেছেন। অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক অবদান কমাতে চান তিনি। সেই চাপের ফলে কিছুটা কাজ হয়েছে। ন্যাটোর মহাসচিব জেন্স স্টলটেনবার্গ গত সপ্তাহে জানিয়েছেন, ৯টি সদস্য দেশ ন্যাটোর নীতি অনুযায়ী প্রতিরক্ষা খাতে জিডিপির দুই শতাংশ ব্যয় করছে।

ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য

জঘন্য :মার্কিন প্রেসিডেন্ট

এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোকে নিয়ে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। মঙ্গলবার লন্ডনে পৌঁছেই তিনি বলেন, 'ন্যাটোর প্রয়োজনীয়তা ফ্রান্সের চেয়ে বেশি আর কারও নেই। কিন্তু তিনি যে মন্তব্য করেছেন তা জঘন্য।'

গত নভেম্বরে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁ বলেছিলেন, পুরো দুনিয়া ন্যাটো জোটের 'ব্রেন ডেথ' (অকেজো) প্রত্যক্ষ করছে। এ জোটের সদস্যরা আর যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভর করতে পারে না। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বাধীন এ জোট এখন এতটাই অকার্যকর হয়ে পড়েছে যে, এর 'ব্রেন ডেথ' হয়ে গেছে।

এর আগে শুক্রবার ম্যাখোঁর এ সংক্রান্ত বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানান তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়ে্যপ এরদোয়ান। তিনি বলেন, ব্রেন ডেথ যদি কারও হয়, তাহলে ম্যাখোঁর হয়েছে, ন্যাটোর নয়। এরদোয়ানের মন্তব্যের জেরে পরে প্যারিসে নিযুক্ত তুর্কি রাষ্ট্রদূতকে তলব করে ফ্রান্সের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।

ফরাসি পণ্যে শুল্ক বসানোর

হুমকি যুক্তরাষ্ট্রের

মার্কিন অনলাইন কোম্পানিগুলোর ব্যবসায় কর আরোপের প্রতিক্রিয়ায় ফ্রান্সের ২৪০ কোটি ডলারের রপ্তানি পণ্যে শুল্ক বসানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। জুলাইয়ে অনুমোদিত ফ্রান্সের ওই নতুন কর মার্কিন 'টেক জায়ান্ট' প্রতিষ্ঠানগুলোকে 'অন্যায্য' লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে বলে দেশটির বাণিজ্য বিষয়ক শীর্ষ প্রতিনিধি রবার্ট লাইটহাইজার দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ফ্রান্সের মতো অন্য কোনো দেশ যেন এ ধরনের কোনো পদক্ষেপ না নেয়, তা ঠেকাতেই যুক্তরাষ্ট্র সম্ভাব্য এ শুল্কের কথা ভাবছে। যুক্তরাষ্ট্রের এ পদক্ষেপের ফলে পনির, শ্যাম্পেন জাতীয় ওয়াইন, প্রসাধনী ও হাতব্যাগের মতো ফরাসি রপ্তানি পণ্যের শুল্ক ১০০ শতাংশ পর্যন্ত উন্নীত হতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<78312 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1