বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
ব্রেক্সিটের ফয়সালা

যুক্তরাজ্যে সাধারণ নির্বাচন আজ

জ্জ বরিসের দলের পালস্না ভারী হলেও সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে অনিশ্চয়তা থাকছেই জ্জ সব সমীকরণ পাল্টে প্রধানমন্ত্রীর পদ গ্রহণে প্রস্তুত করবিন জ্জ বিশ্লেষকদের মতে, ঝুলন্ত পার্লামেন্টের সম্ভাবনা বেশি
যাযাদি ডেস্ক
  ১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যুক্তরাজ্যের সাধারণ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ আজ। এ নির্বাচন কেবল দেশটির শাসনক্ষমতা কার হাতে যাবে, সেটি নির্ধারণ করবে না, সে সঙ্গে ব্রেক্সিটের ভবিষ্যৎ কী হবে, তাও নির্ভর করছে এই ভোটের ফলাফলের ওপর। তাই আগে থেকেই এই নির্বাচনকে 'ঐতিহাসিক' আখা দেওয়া হয়েছিল। আজ স্থানীয় সময় সকাল ৭টায় শুরু হয়ে রাত ১০টা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স ব্রেক্সিট কার্যকর কিংবা গণভোটের জটিল সমীকরণ সামনে রেখেই ভোটের লড়াইয়ে অংশগ্রহণকারী দলগুলোর নির্বাচনী প্রচার বুধবার শেষ হয়েছে। কনজারভেটিভ নেতা ও প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন তার দলের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পুনরুদ্ধারের চেষ্টায় ব্যস্ত ছিলেন। কট্টর ব্রেক্সিটপন্থি জনসনের ঠিক বিপরীত অবস্থানে প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি। দলটির নেতা জেরেমি করবিন প্রধানমন্ত্রী হলে ব্রেক্সিট ইসু্যতে আরেকটি গণভোট দেওয়ার প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছেন। তাতে সফল না হলে ইইউর সঙ্গে 'নরম' ব্রেক্সিট চুক্তি করতে চান তিনি। ব্রেক্সিট ইসু্যকে কেন্দ্র করে পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ হাউস অব কমন্সে সংখ্যাগরিষ্ঠতা হারায় জনসনের কনজারভেটিভ নেতৃত্বাধীন জোট। তারপরই প্রধানমন্ত্রীর আগাম নির্বাচনের প্রস্তাবটি পাস হয় কমন্সে। এদিকে, আজকের ভোটকে ঘিরে জরিপসংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে আভাস পাওয়া গেছে, এই নির্বাচনে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন অল্প ব্যবধানে জয় পাবেন এবং পূর্ব ধারণা মতো নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন না। গত দুই সপ্তাহে দেশটির নির্বাচনের দৌড় অনেকটা প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হয়ে উঠেছে বলেও মঙ্গলবার প্রকাশিত বিভিন্ন জরিপের ফলাফলে দেখা গেছে। এ নির্বাচনে বরিসের কনজারভেটিভ পার্টি ২৮ আসনের ব্যবধানে জয় পাবে বলে ব্রিটিশভিত্তিক আন্তর্জাতিক জনমত জরিপ ও তথ্য বিশ্লেষক কোম্পানি ইউগভের অনুমান। দুই সপ্তাহ আগে একই প্রতিষ্ঠান আভাস দিয়েছিল, ক্ষমতাসীন রক্ষণশীল দল ৬৮ আসনের ব্যবধানে বড় ধরনের জয় পেতে যাচ্ছে। ব্যবধান কমার ধারা অব্যাহত থাকলে জনসন নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে ব্যর্থ হতে পারেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। নির্বাচনের ফলাফলে ইউগভের এই পূর্বাভাস প্রতিফলিত হলে বেক্সিটের অনিশ্চয়তা আরও দীর্ঘায়িত হতে পারে। 'এর ভিত্তিতে আমরা ঝুলন্ত পার্লামেন্টের সম্ভাবনা বাতিল করতে করতে পারি না', গণমাধ্যমকে বলেছেন ইউগভের পলিটিক্যাল রিসার্চ বিভাগের পরিচালক অ্যান্থনি ওয়েলস। এই সংবাদপত্রই ইউগভের জরিপের ফলাফল প্রকাশ করেছে। মঙ্গলবার সকালে স্বল্প পরিসরে আরেকটি বাজার বিশ্লেষক কোম্পানি 'ফোকালপয়েন্ট' একই ধরনের পূর্বাভাস দিয়েছে। জনসন ২৪ আসনের ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবেন বলে তাদের পূর্বাভাসে দেখানো হয়েছে। গত মাসে তাদের বলা ৮২ আসনের ব্যবধানে সংখ্যাগরিষ্ঠতা থেকে এটি অনেক কম। 'ঝুলন্ত পার্লামেন্ট' হলে ব্রেক্সিট নিয়ে চলা অচলাবস্থার সমাধান কোনো দলই করতে পারবে না, এমন ধারণা প্রচলিত থাকায় তা অল্প সময়ের জন্য হলেও ব্রিটেনের অর্থনীতির জন্য সবচেয়ে খারাপ পরিণতি ডেকে আনবে বলে অনেক বিশ্লেষকের ধারণা। দুই সপ্তাহ আগে প্রকাশিত জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে ইউগভের অনুমান ছিল, ব্রিটিশ পার্লামেন্টের ৬৫০টি আসনের মধ্যে রক্ষণশীলরা ৩৫৯টি আসনে জিতে ৬৮ আসনের ব্যবধানে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। কিন্তু সর্বশেষ জরিপের ফলাফলের ভিত্তিতে রক্ষণশীলরা ৩৩৯টি আসনে জয় পাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। এর অর্থ ২০১৭ সালের নির্বাচনে পাওয়া ৩১৭ আসন থেকে এবার আসন বাড়লেও নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে না জনসনের দল। প্রধান বিরোধীদল লেবার পার্টি আসন হারাবে বলে ফের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালে লেবার পার্টি ২৬২ আসনে জিতলেও এবার ২৩১ আসন ধরে রাখতে পারবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে ইউগভ। স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টি ও লিবারেল ডেমোক্রেট পার্টি উভয়েরই অল্প কিছু আসন বাড়বে বলে আভাস দিয়েছে তারা। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের বিরোধী দল লেবার পার্টির প্রান জেরেমি করবিন আশা করছেন এ সপ্তাহের নির্বাচনের পর তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিতে পারবেন। যদিও ব্রিটিশ রাজনীতিতে ব্যক্তি করবিনের ভূমিকা নিয়ে আলাদা কোনো বিশেষ আলোচনা খুব একটা শোনা যায় না। ধীর-স্থির স্বভাবের নীতিবাগীশ এই মানুষটি ব্রেক্সিট ইসু্যতে আগাগোড়াই নিরপেক্ষ অবস্থান অবলম্বন করেন। কনজারভেটিভরা জাতীয় স্বাস্থ্যসেবাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গেছে এবং ব্রেক্সিট কার্যকর হলে তারা স্বাস্থ্যসেবাকে মার্কিন কোম্পানিগুলোর হাতে তুলে দেবে, এমন অভিযোগ তুলে প্রচারণার শুরু থেকেই কনজারভেটিভদের ঘায়েল করার চেষ্টা করছে লেবার পার্টি। তাই মঙ্গলবার স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে জনসনের ওই কান্ড প্রচারণার মাঠে লেবারের জন্য বড় সুযোগ এনে দেয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে