শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
করোনার বিস্তার

ঠেকানোর সুযোগ কমে আসছে

মহামারি রোধে আরও প্রস্তুতির আহ্বান ডবিস্নউএইচওর
যাযাদি ডেস্ক
  ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০, ০০:০০
ভয়াবহ কভিড-১৯ করোনাভাইরাস মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে বিশ্ব। ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকাতে কোনো টনিকই দৃশ্যত কাজ করছে না। করোনার প্রতিষেধক এখনো আবিষ্কৃত না হওয়ায় আশঙ্কা আর ভয় ক্রমেই বাড়ছে। এদিকে, ভাইরাসটির উৎপত্তিস্থল চীন কার্যত স্থবির হয়ে পড়েছে। শুক্রবার দেশটির উহানের একটি কোয়ারেন্টাইনে ল্যাপটপে সময় পার করছেন এক ব্যক্তি -এপি/আউটলুক ইনডিয়া

চীন থেকে উৎপত্তি হয়ে বিশ্বজুড়ে দ্রম্নত ছড়িয়ে পড়ছে প্রাণঘাতী কভিড-১৯ করোনাভাইরাস। প্রতিদিনই বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। এ নিয়ে গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডাবিস্নউএইচও)। সংস্থাটির প্রধান ড. ট্রেড্রোস অ্যাডহ্যানম গেব্রেইসুস শনিবার বলেন, 'ভাইরাসটির বিস্তার ঠেকানোর সুযোগ ক্রমেই কমে আসছে।' সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, এএফপি

ট্রেড্রোস বলেন, 'চীনের বাইরে করোনাভাইরাসে আক্রান্তদের সংখ্যা কম। কিন্তু যেভাবে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটছে তা উদ্বেগজনক।' তিনি আরও বলেন, 'চীনে ভ্রমণ বা আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শের মতো স্পষ্ট মহামারির সংযোগ না থাকার কারণে বিভিন্ন দেশে আক্রান্তের সংখ্যা নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন।'

চীনের বাইরে এশিয়ার অন্যান্য দেশে মৃতু্য ও নতুন আক্রান্ত শনাক্ত হওয়া খুব উদ্বেগজনক বলে উলেস্নখ করেছেন স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান। তবে তিনি মনে করেন, চীনসহ অপর দেশগুলো যেসব পদক্ষেপ নিয়েছে তাতে এখনো ভাইরাসটির আরও বেশি ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোর সুযোগ রয়েছে। সম্ভাব্য মহামারি ঠেকাতে আরও বেশি প্রস্তুতি নেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

শনিবার চীনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মৃতের সংখ্যা কমে যাওয়া ও করোনাভাইরাসে নতুন রোগী আক্রান্ত হওয়ার কথা জানিয়েছে। তবে দক্ষিণ কোরিয়া, ইতালি, ইরান ও অন্যান্য দেশে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এ পর্যন্ত শুধু চীনেই প্রাণ হারিয়েছেন দুই হাজার ৩৪৫ জন, আক্রান্ত ৭৬ হাজার ২৮৮। চীনের বাইরে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত জাপানের ইয়োকোহামা বন্দরে কোয়ারেন্টাইনে রাখা প্রমোদতরী 'ডায়মন্ড প্রিন্সেস'র যাত্রীরা। এর তিন হাজার ৭০০ আরোহীর মধ্যে অন্তত ৬৩৪ জনের শরীরে কভিড-১৯ ধরা পড়েছে।

এদিকে প্রথমবারের মতো সংক্রমণ ধরা পড়েছে ইসরাইল ও লেবাননে। প্রাণঘাতী এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে ইরানের আধা ডজন শহরে। নতুন রোগীর সংখ্যা বেড়েছে ইতালি ও জাপানেও। ইতালির চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ৭৮ বছরের এক ব্যক্তির মৃতু্য হয়েছে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে। এর আগে দেশটিতে ১৬ জন আক্রান্তকে শনাক্ত করা হয়েছিল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ইরান এবং লেবাননে করোনাভাইরাস শনাক্ত করার মতো মৌলিক সামর্থ্য রয়েছে এবং আরও সহায়তা দেওয়ার জন্য সংস্থাটি দেশ দুটির সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু টেড্রোস বলেন, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা উদ্বেগ প্রকাশ করেছে, কারণ ধারণা করা হচ্ছে, যেসব দেশে দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থা রয়েছে, সেসব দেশেই হয়তো ভাইরাসটির সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ছে।

দক্ষিণ কোরিয়ায় এক দিনে

আক্রান্ত বেড়েছে দ্বিগুণ

এদিকে এক দিনের ব্যবধানে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দ্বিগুণ বেড়ে যাওয়ার কথা জানিয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া। শনিবার দেশটির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, শুক্রবার থেকে এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ২২৯ জন। এ নিয়ে দেশটিতে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪৩৩ জনে দাঁড়িয়েছে।

চীনে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ কমে আসার খবরের মধ্যে প্রতিবেশী দক্ষিণ কোরিয়ায় উদ্বেগজনক হারে বেড়ে চলেছে এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা। এখন পর্যন্ত দেশটিতে দুইজন মারা গেছেন। আশঙ্কা করা হচ্ছে, এই সংখ্যা আরও বাড়বে। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দায়েগু এবং নিকটবর্তী চেয়োংদো শহরের হাসপাতালগুলোকে 'স্পেশাল কেয়ার জোন' ঘোষণা করা হয়েছে। আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকায় দায়েগু শহরের রাস্তাঘাট জনশূন্য হয়ে পড়েছে।

দক্ষিণ কোরিয়ার চিকিৎসাকর্মীরা শনিবার প্রথমে নতুন ১৪২ জন রোগীর সংক্রমণের কথা জানান। এর কয়েক ঘণ্টা পর আরও ৮৭ জন আক্রান্তের কথা জানানো হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার 'সেন্টার ফর ডিজেস কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন' (কেসিডিসি) জানিয়েছে, নতুন আক্রান্ত ২২৯ জনের মধ্যে ৯৫ জন চেয়োংদো শহরের দায়েনাম হাসপাতাল সংশ্লিষ্ট। বর্তমানে এই হাসপাতালে মোট ১১৪ জন আক্রান্ত রোগী রয়েছেন। এর মধ্যে ৯ জন হাসপাতাল কর্মী এবং ১০২ জন রোগী।

কেসিডিসি জানিয়েছে, আক্রান্তদের মধ্যে দায়েগু শহরে খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বেশি। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ওই জনগোষ্ঠীর সদস্যরা একটি শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার পর ভাইরাসটির সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। দক্ষিণ কোরিয়ার বার্তা সংস্থা জানিয়েছে, ওই জনগোষ্ঠীর ৯ হাজারেরও বেশি মানুষকে নিজস্ব তত্ত্বাবধানে আলাদা স্থানে রাখা হয়েছে। এ ছাড়া ৫০০ জনের বেশি মানুষের করোনাভাইরাস পরীক্ষা করা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<89681 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1