বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১
গোপন নথি প্রকাশ

কল্পিত মহড়াই রক্ষা করেছে দক্ষিণ কোরিয়াকে

যাযাদি ডেস্ক
  ০১ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
দক্ষিণ কোরিয়ায় সেই কল্পিত মহড়া

কল্পিত রহস্যময় একটি প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় জরুরি ভিত্তিতে পরিচালিত মহড়া পরীক্ষা এক মাসেরও কম সময়ের পর এসে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস ঠেকানোর হাতিয়ার তৈরিতে দক্ষিণ কোরিয়াকে সহায়তা করেছে। ওই মহড়া সংশ্লিষ্ট এক বিশেষজ্ঞ এবং সরকারি এক গোপন নথির ভিত্তিতে মঙ্গলবার প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ কথা জানানো হয়েছে। সংবাদসূত্র : রয়টার্স

ওই নথিতে দেখা যায়, গত ১৭ ডিসেম্বর দক্ষিণ কোরিয়ার সংক্রামক ব্যাধি বিষয়ে দুই ডজন শীর্ষ বিশেষজ্ঞ একটি উদ্বেগজনক পরিস্থিতি সামাল দেন। চীন ভ্রমণ করে আসা এক দক্ষিণ কোরীয় পরিবারের মধ্যে নিউমোনিয়ার লক্ষণ পান তারা। ততদিনে চীনে ছড়িয়ে পড়েছে অজ্ঞাত এক রোগ।

নতুন ধরনের করোনাভাইরাস হিসেবে কল্পনা করে নেওয়া রোগটি দ্রম্নতই পরিবারের সদস্য ও তাদের সংস্পর্শে আসা স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় দক্ষিণ কোরিয়ার রোগ নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র (কেসিডিসি) রোগটির জীবনশক্তি ও উৎপত্তি খুঁজতে অ্যালগরিদমের পাশাপাশি দ্রম্নত পরীক্ষার কৌশলও তৈরি করে ফেলে।

গোপন ওই নথি অনুসারে, ২০ জানুয়ারি দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রথম করোনাভাইরাসের সন্দেহভাজন রোগী দেখা দিলে তখনকার মহড়া থেকে পাওয়া ওই ব্যবস্থা প্রয়োগ করা হয়। মহড়া পরিচালনাকারী কেসিডিসির অন্যতম বিশেষজ্ঞ লি স্যাং অন বলেন, 'গত ২০ বছরের দিকে তাকালে দেখা যায়, মানুষের জীবন ইনফ্লুয়েঞ্জা অথবা করোনার আক্রমণে বিপর্যস্ত ছিল। আমরা তা ভালোভাবেই মোকাবিলা করেছি। কিন্তু নতুন ধরনের একটি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে আমরা উদ্বিগ্ন ছিলাম।'

তিনি বলেন, 'এটা ছিল একটা অন্ধ ভাগ্য। ওই পরিস্থিতি বাস্তবে রূপ নিতে দেখে আমরা হতবাক হয়ে পড়েছি। কিন্তু মহড়া থেকে পরীক্ষা পদ্ধতি ও রোগ শনাক্তের পদ্ধতিতে আমাদের অনেক সময় বাঁচিয়ে দিয়েছে।'

বিশেষজ্ঞ লি বলেন, ২০১৫ সালে 'মিডল-ইস্ট রেসপিরেটরি সিনড্রোম' (মার্স) ভাইরাস প্রতিরোধে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ার পর ২০১৮ সালে বৃহদাকারে ডিএনএ বিশ্লেষণ ক্ষমতা জোরদারে 'স্টাডি গ্রম্নপ' হিসেবে কেসিডিসির অধীনে বিশেষজ্ঞ দলটি গঠন করে দক্ষিণ কোরিয়া।

'ওই মহড়ার পরপরই চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হয়। তখনই বিশেষজ্ঞ দলটি ধারণা করে, এটা বোধহয় নতুন করোনাভাইরাস। এমনকি চীন এটির আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়ার আগেই কেসিডিসি পরীক্ষার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায়।'

আগ্রাসী ও টেকসই পরীক্ষা পদ্ধতি ব্যবহার করে চীনের বাইরে এশিয়ার সবচেয়ে বড় করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের গতি শ্লথ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল ওই মহড়া। শুরুতে বড় আকারে ছড়িয়ে পড়ার পর কয়েক দিনের মধ্যেই দক্ষিণ কোরিয়া ব্যাপকভাবে পরীক্ষা শুরু করে। উপসর্গ না থাকলেও অন্যকে সংক্রমিত করতে পারে, এমন লোকদের পরীক্ষা করা, নিশ্চিত রোগীদের বিচ্ছিন্ন করে রাখা এবং তাদের সংস্পর্শে আসা ব্যক্তিদের শনাক্ত করার মতো বিস্তৃত কর্মসূচি নিয়েছিল দেশটি।

বেশি একটা বিপর্যয় সৃষ্টির আগেই করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব মোকাবিলায় দক্ষিণ কোরিয়ার নেওয়া কার্যকর পদক্ষেপ খুবই প্রশংসিত হয়। এই মহামারিতে ৯ হাজার ৭৮৫ জন আক্রান্ত হয়েছে, যাদের মধ্যে ১৬২ জনের মৃতু্য হয়েছে। কিন্তু গত তিন সপ্তাহ ধরে সেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ বা তার নিচে রয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<94819 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1