শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
করোনার হানা

জীবন-মৃতু্যর 'সন্ধিক্ষণে' বরিস!

তার স্বাস্থ্যগত অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে :গণমাধ্যম বরিসের অবর্তমানে দায়িত্বে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোমিনিক রাব উদ্বেগ ও আতঙ্কে ব্রিটিশরা
যাযাদি ডেস্ক
  ০৮ এপ্রিল ২০২০, ০০:০০
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিজ জনসন

কোভিড-১৯ করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে দু'দিন ধরে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তবে আশঙ্কার বিষয় হচ্ছে, তার স্বাস্থ্যগত অবস্থার কোনো উন্নতি হয়নি, বরং প্রতিমুহূর্তে তা আরও খারাপের দিকে যাচ্ছে। ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করতে হচ্ছে তাকে। তার শরীরে এরই মধ্যে করোনা মারাত্মক প্রভাব ফেলেছে। ফলে কয়েকটি ব্রিটিশ মিডিয়ার দাবি, জীবন-মৃতু্যর সন্ধিক্ষণে রয়েছেন তিনি। এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর অবর্তমানে এই মুহূর্তে করোনা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার দায়িত্বে রয়েছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডোমিনিক রাব। সংবাদসূত্র : বিবিসি, রয়টার্স, ডেইলি মেইল

স্থানীয় সময় রোববার রাতে লন্ডনের সেইন্ট থমাস হাসপাতালে ভর্তি করা হয় প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে। করোনা পজেটিভ আসার ১০ দিন পর তার শরীরে উচ্চ তাপমাত্রা এবং তীব্র কাশির কারণে তাকে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বরিসের করোনায় আক্রান্তের ঘটনা পুরো ব্রিটিশ সরকারকে নাড়িয়ে দিয়েছে। দেশটির একেবারে শীর্ষস্থানীয় নেতার করোনায় আক্রান্তের ঘটনা সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্কের জন্ম দিয়েছে। এর আগে গত শুক্রবার আইসোলেশনে থাকা অবস্থায় টুইটারে এক ভিডিও বার্তায় বরিস জানিয়েছিলেন যে, তার শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেশি। করোনায় আক্রান্ত হয়েও সে সময় আইসোলেশনে থেকে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছিলেন তিনি।

বেশ কয়েকজন দাবি করেছেন, ভিডিও কনফারেন্সের সময় বরিস জনসনকে প্রচন্ড কাশতে দেখা গেছে। যুক্তরাজ্যের আবাসনমন্ত্রী রবার্ট জেনরিক জানিয়েছেন, করোনা পজেটিভ আসার পরেও গত কয়েক দিন ধরে কঠোর পরিশ্রম করে গেছেন তিনি।

শুরুতে বরিসের হাসপাতালে ভর্তি হওয়াকে রুটিন চেকআপ ও সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে অভিহিত করেছিল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় ১০ ডাউনিং স্ট্রিট। তবে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম এর পরপরই এক বিশ্লেষণে আভাস দিয়েছিল, বরিসের স্বাস্থ্য অবস্থার অবনতি হয়েছে। প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, হাসপাতালে এখন যে ধরনের চাপ, তাতে ছোটখাটো সমস্যার জন্য বরিস হাসপাতালে ভর্তি হতেন না। ছোটখাটো পরীক্ষা ডাউনিং স্ট্রিটে বসেই করানো যেত।

দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী নাদিন দোরিস প্রথম কোনো মন্ত্রী হিসেবে করোনায় আক্রান্ত হলেও তিনি এখন সুস্থ হয়ে উঠেছেন। নাদিনের মতে, প্রধানমন্ত্রীর ঘুমানো প্রয়োজন এবং সুস্থ হওয়া দরকার। ১০ দিন আগে করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ার পর থেকেই আইসোলেশনে ছিলেন তিনি।

গত ২৪ ঘণ্টায় বরিসের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়েছে। সে কারণেই তাকে ইনটেনসিভ কেয়ারে রাখা হয়েছে। সেখানে মূলত গুরুতর রোগীদেরই সেবা দেওয়া হয়। যদিও তাকে অক্সিজেন সাপোর্টে রাখা হয়েছে, তবে তার কার্যালয় বলছে, এখনো তার জ্ঞান আছে।

অবশ্য এখনো ভেন্টিলেটরের (শ্বাস নেওয়ার যন্ত্র) প্রয়োজন পড়েনি বলে জানিয়েছেন কেবিনেট মন্ত্রী মাইকেল গোভ। গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গোভ বলেন, 'সেইন্ট থমাস হাসপাতালে সর্বোচ্চ সেবা দেওয়া হচ্ছে বরিস জনসনকে। তিনি দেশবাসীকে আশ্বস্ত করে বলেছেন, ইনটেনসিভ কেয়ারে তাকে রাখার অন্যতম কারণ হলো মেডিকেল টিম যেন তার চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা করতে পারে।'

মাইকেল গোভ আরও বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী হাসপাতালে থাকায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রীর সহকারী হিসেবে কাজ করছেন। এছাড়া যখন যেখানে প্রয়োজন, সেখানেই সরকারি কার্যক্রম নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রীর একটি দল আছে। প্রধানমন্ত্রীর সভাগুলোয় সভাপতিত্বের দায়িত্ব নিয়েছেন ডোমিনিক। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর নির্ধারিত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আমরা সবাই একসঙ্গে কাজ করছি।'

বরিস জনসনের প্রধান স্বাস্থ্য উপদেষ্টাও সেলফ আইসোলেশনে আছেন। এছাড়া তার অন্তঃসত্ত্বা হবু স্ত্রী ৩২ বছর বয়সী কেরি সিমন্ডসের শরীরে করোনার প্রাথমিক উপসর্গ দেখা দিলেও তিনি এখন আগের চেয়ে ভালো আছেন।

অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের পরামর্শ, সপ্তাহ শেষে যদি শুষ্ক কাশি, শরীরের তাপমাত্রা, অবসাদ ভাব না যায়, কিংবা সেগুলো আরও বাড়ে, তবে আক্রান্তদের চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে। সুস্বাস্থ্যের অধিকারী এবং উচ্চ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষ আক্রান্ত হওয়ার প্রথম সপ্তাহেই ভাইরাসকে মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়। বিপত্তি তৈরি হয় অসুস্থতা দ্বিতীয় সপ্তাহে গড়ানো মানুষদের ক্ষেত্রে। এ সময় আক্রান্তের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভাইরাসটির প্রতি অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখায় এবং এতে নিজের শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ আক্রান্ত হতে শুরু করে। আর তাই গুরুতর অসুস্থ ব্যক্তিরা এক্ষেত্রে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের অকার্যকারিতার কারণে মারা যায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<95637 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1