শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
গণমাধ্যমে নথি প্রকাশ

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় আংশিক অর্থায়নে রাজি ট্রাম্প

চলতি বছরের মধ্যেই টিকা চান মার্কিন প্রেসিডেন্ট যুক্তরাষ্ট্র-চীন দ্বন্দ্ব : হুয়াওয়ের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা
যাযাদি ডেস্ক
  ১৭ মে ২০২০, ০০:০০
আপডেট  : ১৭ মে ২০২০, ১০:২৯
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় (ডবিস্নউএইচও) অর্থায়ন বন্ধ করে দেওয়ার একমাস পর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সংস্থাটিতে আগের তুলনায় সামান্য পরিমাণ অর্থ দিতে রাজি হয়েছেন। শুক্রবার রাতে ট্রাম্প প্রশাসনের একটি খসড়া নথির বরাত দিয়ে মার্কিন গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে। সংবাদসূত্র : রয়টার্স, ফক্স নিউজ 'চীনের অর্থায়নের পরিমাণ পর্যালোচনা করে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় অর্থ দিতে ট্রাম্প প্রশাসন রাজি হয়েছে'- খসড়া চিঠিটিতে এমনটাই লেখা ছিল বলে জানিয়েছে গণমাধ্যম। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে 'চীনঘেঁষা' অ্যাখ্যা দিয়ে ট্রাম্প গত ১৪ এপ্রিল সংস্থাটিতে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থায়ন বন্ধের নির্দেশ দিয়েছিলেন। করোনাভাইরাস বিষয়ে ডবিস্নউএইচও চীনের দেওয়া 'ভুলভাল তথ্যকে' সমর্থন ও ছড়িয়ে দিতে ভূমিকা রেখেছে বলে সে সময় অভিযোগ করেছিলেন ট্রাম্প। তিনি তার প্রশাসনকে আন্তর্জাতিক এ সংস্থার অব্যবস্থাপনা খতিয়ে দেখতেও নির্দেশনা দিয়েছিলেন। ডবিস্নউইএইচওর কর্মকর্তারা অবশ্য শুরু থেকেই তাদের বিরুদ্ধে ওঠা এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন। চীনও নতুন করোনাভাইরাস সংক্রান্ত তথ্য নিয়ে কোনো ধরনের লুকোচুরি বা 'অস্বচ্ছতার' আশ্রয় নেওয়া হয়নি বলে দাবি করেছে। অর্থায়ন বন্ধের আগে যুক্তরাষ্ট্রই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থায় সবচেয়ে বেশি অর্থ দিত। গত বছর সংস্থাটিকে ৪০ কোটি ডলার দিয়েছিল তারা, যা ডবিস্নউএইচওর মোট বাজেটের প্রায় ১৫ শতাংশ। ওই নথি অনুযায়ী, ট্রাম্প প্রশাসন যদি এবার চীনের অর্থায়নের সমপরিমাণ বা এর কাছাকাছি তহবিল বরাদ্দ করে, তাহলেও এর পরিমাণ দাঁড়াতে পারে সর্বোচ্চ ৪০ কোটি ডলারে। এ অঙ্ক গত বছর দেওয়া অর্থের দশ ভাগের একভাগ। চলতি বছরের মধ্যেই টিকা চান ট্রাম্প এদিকে, চলতি বছরের শেষ নাগাদ করোনাভাইরাসের টিকা বাজারে আনতে 'একটানা গতি' কর্মসূচির বিস্তারিত প্রকাশ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। অবশ্য বিশেষজ্ঞরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, স্বল্প সময়ের মধ্যে টিকা বাজারে নিয়ে আসতে গেলেও ১৮ মাসের বেশি সময় প্রয়োজন। শুক্রবার হোয়াইট হাউসের রোজ গার্ডেনে সাংবাদিকদের ট্রাম্প বলেন, শরতেই স্কুলগুলো খুলে দেওয়া হবে এবং 'টিকা আসুক বা না আসুক আমরা ফিরছি।' 'অপারেশন স্পিড'র উদ্বোধনকালে ট্রাম্প বলেন, 'এর মানে হচ্ছে, বড় এবং এর অর্থ হচ্ছে দ্রম্নত। ম্যানহাটন প্রজেক্ট ছাড়া আর কখনোই এত বড় বৈজ্ঞানিক, শিল্প ও লজিস্টিক প্রয়াস আমাদের দেশ দেখেনি।' ট্রাম্প বলেন, 'এর উদ্দেশ্য হচ্ছে যত দ্রম্নত সম্ভব করোনাভাইরাসের পরীক্ষিত টিকার উন্নয়ন, উৎপাদন ও বিতরণ শেষ করা। আবার অগ্রাধিকার ভিত্তিতে চলতি বছরের শেষ নাগাদ এটি দেখতে পাওয়াটা আমরা পছন্দ করব।' এ সময় ট্রাম্পের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিলেন 'ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব অ্যালার্জি অ্যান্ড ইনফেকশাস ডিজিজ'র পরিচালক অ্যান্থনি ফাউচি। ট্রাম্পের এই টিকার ভাষণের সময় ফাউসি মাথা নিচু করে দাঁড়িয়েছিলেন। এর আগে মঙ্গলবার কংগ্রেসে দেওয়া এক সাক্ষ্যে ফাউচি বলেছিলেন, করোনার 'টিকা যে কার্যকর হবে, তার কোনো নিশ্চিয়তা নেই।' ওবামার সময়কার কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প অন্যদিকে, মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মহাপরিদর্শক স্টিভ লিনিককে বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নির্দেশে বরখাস্ত হওয়া সর্বশেষ কর্মকর্তা তিনি। এর আগেও বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে বরখাস্ত করেছেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন, এমন একটি অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত শুরু করেছিলেন স্টিভ লিনিক। তবে ট্রাম্প বলছেন, স্টিভ লিনিক আগের মতো পুরোপুরি আস্থা নিয়ে কাজ করতে পারছিলেন না। তাই তাকে ৩০ দিনের মধ্যেই সরিয়ে দেওয়া হবে। যুক্তরাষ্ট্র-চীন দ্বন্দ্ব : হুয়াওয়ের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা এদিকে, চীনের সঙ্গে চলমান উত্তেজনার মধ্যেই দেশটির বহুমাত্রিক প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের ওপর নতুন নিষেধাজ্ঞা এনেছে যুক্তরাষ্ট্র। জাতীয় নিরাপত্তার শঙ্কায় এই নিষেধাজ্ঞা আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে ওয়াশিংটন। ট্রাম্প প্রশাসন শুক্রবার হুয়াওয়ের একটি সেমি-কন্ডাক্টরের চালানে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। হুয়াওয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নির্মিত এসব সেমি-কন্ডাক্টর ব্যবহার করে আসছে। নতুন নিষেধাজ্ঞার আওতায় সেমিকন্ডাক্টর নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অনুমতি ছাড়া হুয়াওয়েকে সেমি-কন্ডাক্টর দিতে পারবে না। সাম্প্রতিক সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে চীনের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। বিশেষ করে প্রাণঘাতী করোনাভাইরাসের প্রকোপ ছড়িয়ে পড়ার পেছনে প্রথম থেকেই চীনকে দায়ী করে আসছে যুক্তরাষ্ট্র।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে