শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১
কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে

কমেছে পারিবারিক উপার্জন

নতুনধারা
  ০৩ জুন ২০২০, ০০:০০

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার কারণে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও উন্নয়ন একটি সংকটময় মুহূর্তে উপনীত হয়েছে। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, এই মহামারির কারণে নিম্নআয়ের মানুষকে অস্বাভাবিকভাবে প্রভাবিত করেছে। এতে দেশের প্রায় ১০ কোটি ২২ লাখ (১০০.২২ মিলিয়ন) মানুষ অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগত দুর্বলতার ঝুঁকিতে রয়েছেন। এছাড়া প্রায় ৭৪ শতাংশ পরিবারের উপার্জন কমে গেছে। আর ১৪ লাখেরও বেশি প্রবাসী শ্রমিক চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরে এসেছেন বা ফিরে আসছেন। উলেস্নখ্য, ব্র্যাক, ডেটা সেন্স এবং উন্নয়ন সমন্বয়ের এক যৌথ সমীক্ষায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

আমরা বলতে চাই, করোনাভাইরাসের সংক্রমণে পুরো বিশ্বই দিশাহারা এবং মহামারি আকারে ছড়িয়ে পড়া এ ভাইরাসের সংক্রমণের কারণে প্রায় প্রতিটি খাতই বিপর্যস্ত। এর আগেও করোনাভাইরাসের কারণে অর্থনৈতিক ঝুঁকির বিষয়টি সামনে এসেছিল। আমরা মনে করি, এখন যখন দেশের প্রায় ১০ কোটি ২২ লাখ (১০০.২২ মিলিয়ন) মানুষ অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগত দুর্বলতার ঝুঁকিতে রয়েছেন এবং প্রায় ৭৪ শতাংশ পরিবারের উপার্জন কমে যাওয়ার বিষয়টি সমীক্ষায় আসছে, তখন বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের আমলে নিতে হবে এবং পরিস্থিতি মোকাবিলায় কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না- করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে যে কঠিন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা মোকাবিলায় সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ এবং তার যথাযথ বাস্তবায়ন করতে হবে।

উলেস্নখ্য, গবেষণা ফলাফলে দেখানো হয়েছে, দেশে অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীর মধ্যে ৫ কোটি ৩৬ লাখ (৫৩.৬৪ মিলিয়ন) মানুষ চরম দরিদ্র যাদের দৈনিক আয় ১.৯ ডলার। এদের মধ্যে নতুন করে চরম দরিদ্র হয়ে পড়া পরিবারগুলোও রয়েছে। উচ্চ অর্থনৈতিক ঝুঁকিতে থাকা চরম দরিদ্রের সংখ্যা ৪ কোটি ৭৩ লাখ এবং উচ্চ স্বাস্থ্যঝুঁকিতে রয়েছেন ৩ কোটি ৬৩ লাখ মানুষ। এছাড়া জরিপে উঠে এসেছে, কোভিড-১৯ এর কারণে নিম্নআয়ের মানুষের ওপর বহুবিধ নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তথ্য সংগ্রহ করা পরিবারগুলোর মধ্যে ৩৪.৮% পরিবারের কমপক্ষে একজন সদস্য চাকরি হারিয়েছে বলেও জানা যাচ্ছে।

আমরা বলতে চাই, সারা বিশ্বে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে, বাড়ছে মৃতু্যর সংখ্যাও। অন্যদিকে দেশেও হু হু করে বাড়ছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা এবং মৃতু্য। এমন অবস্থায় লকডাউন তুলে দেওয়া এবং গণপরিবহণও চলছে- ফলে পরিস্থিতি আরও আশঙ্কাজনক হতে পারে এমন আলোচনাও সামনে আসছে। কিন্তু জীবন ও জীবীকার প্রয়োজনে গণপরিবহণ, অফিস আদালত খুলে দেওয়া হলেও- স্বাস্থ্যবিধি মানতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সঙ্গত কারণেই এই বিষয়গুলো আমলে নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। নিম্নআয়ের পরিবারের উপার্জনশীল সদস্যের মৃতু্য হলে নারী ও শিশুদের মধ্যে অনাহার এবং অপুষ্টির শিকার হওয়ার উচ্চ আশঙ্কা সৃষ্টি হবে। এছাড়া দেশব্যাপী সমন্বয়ের অভাবের কারণে দরিদ্র ও অতি দরিদ্রদের কাছে সরকারের দেওয়া খাদ্য এবং নগদ সহায়তা সঠিকভাবে পৌঁছাচ্ছে না বলে বিভিন্ন প্রতিবেদন ও গবেষণা-সমীক্ষায় উঠে এসেছে। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্টদের এই বিষয়গুলো আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি।

এছাড়া লক্ষণীয় যে, প্রবাসী শ্রমিক চাকরি হারানোর কারণে ফিরে এসেছেন বা দেশে ফিরে আসছেন এমনটি যেমন জানা যাচ্ছে, তেমনি বিদেশে থাকা অভিবাসীরাও এখন ঋণচক্র ও সামাজিক কলঙ্কের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন এবং অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মুখে পড়েছেন। এছাড়া কোভিড-১৯ এর এই মহামারিতে সবচেয়ে হুমকির মুখে স্বাস্থ্যব্যবস্থা। মধ্যবিত্তরাই চিকিৎসাসেবা পাবেন কিনা সেই আতঙ্কে আছেন, দরিদ্রদের অবস্থা আরও করুণ। আর স্বাস্থ্য খাত ঠিক না করলে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না, আমাদের অর্থনীতিও আগাবে না- এমন বিষয়ও সামনে আসছে।

আমরা বলতে চাই, কোভিড-১৯ নতুন অর্থনৈতিক বিভাজন, সামাজিক বিভাজন এবং ডিজিটাল বিভাজন সৃষ্টি করেছে। এমনকি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কেবল ৩৪% পরিবারের স্মার্টফোন রয়েছে এবং ৫৪% পরিবারের টিভি দেখার সুযোগ রয়েছে। ফলে এর নিচের অংশে বসবাসকারী শিশুরা ডিজিটাল মাধ্যমে পরিচালিত শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বাদ পড়ে যাচ্ছে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিক দিক বিবেচনায় নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণে সংশ্লিষ্টরা সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<101036 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1