মাদকাসক্ত ব্যক্তির সংখ্যা দিন দিন যে হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে মাদকাসক্ত তরুণ-তরুণীর জীবনে নেমে আসবে অন্ধকারের তীব্র কালো ছায়া। এ ছায়া জাতির জন্য কখনো ভালো কিছু বয়ে আনতে পারে না। লাখ লাখ মাদকাসক্ত সারা বাংলার আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে, এর সংখ্যা দিন দিন অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পাচ্ছে। মাদকাসক্তের মধ্যে বিশেষ করে কিশোর থেকে শুরু করে তরুণ-তরুণীরা সংখ্যায় বেশি। রাষ্ট্রের ভালো কাজে নেই তাদের বিন্দুমাত্র ছোঁয়া অথচ যে তরুণ প্রজন্ম আমাদের আগামীর অহঙ্কার। যাদের যোগ্য নেতৃত্বে এ দেশ এগিয়ে যাবে বহুদূর, তাদের এমন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি জাতির জন্য বিরাট অভিশাপস্বরূপ। মাদক গ্রহণের মূল কারণ হিসেবে বিবেচিত হয় হতাশা, কৌতূহল নিবারণ ও প্রবল আগ্রহ এবং কুসঙ্গ। পরিবার এবং সমাজের জন্য মাদকাসক্ত ব্যক্তি হুমকিস্বরূপ। এরা ছিনতাই থেকে শুরু করে খুন, ধর্ষণের মতো জঘন্যতম কাজ তাদের মাধ্যমে অনায়াসে হয়ে থাকে। দিন দিন বৃদ্ধি পায় অপকর্মের সংখ্যা আর পরিবারকে বহন করতে হয় তীব্রমাত্রার অসহনীয় যন্ত্রণা। মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে যখন পরিবার থেকে টাকা দেয়া বন্ধ করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সমাজের নানাবিধ অপকর্মের সঙ্গে জড়িয়ে যায় মাদক গ্রহণের টাকা জোগাড় করার জন্য। এমন এক সময় চলে আসে যখন সমাজেও তাদের কোনো গ্রহণযোগ্যতা থাকে না। মাদকদ্রব্য সেবনের ফলে মানবদেহে একাধিক রোগের প্রকোপ দেখা দেয় স্ট্রোক থেকে শুরু করে হেপাটাইটিস, ক্যান্সার, ফুসফুসে ক্যান্সার, হৃদরোগসহ মরণব্যাধি এইডস রোগ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। একজন মাদকসেবীর অতিরিক্ত মাদক সেবনের শেষ পরিণতি মৃতু্য পর্যন্ত হতে পারে।
অনতিবিলম্বে মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে পারিবারিক দায়িত্বে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তুলতে হবে।
প্রতিটি পরিবারকে লক্ষ্য রাখতে হবে তার সন্তান কোথায় যাচ্ছে? কার সঙ্গে চলাফেরা করছে? এবং টাকা-পয়সা কোথায় খরচ করে? তা ছাড়া জনসচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পত্রিকা, টেলিভিশনসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমগুলোকে মুখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে। একমাত্র জনসচেতনতা ও প্রশাসনের 'জিরো টলারেন্স নীতি' বাস্তবায়নের মাধ্যমেই সম্ভব মাদকাসক্ত নির্মূল করা।