বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

ইভিএম বিতকর্

যথাযথ পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ে বিতকর্ সামনে এসেছে। বিশেষজ্ঞদের ধারণা নিবার্চন কমিশনের (ইসি) দ্বিধান্বিত অবস্থানই বিষয়টি নিয়ে বিতকর্ বাড়িয়েছে। তারা বলছেন, আট বছর আগে শুরু করা এই উদ্যোগের ধারাবাহিকতা বজায় থাকলে এত দিন এই প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে বিরোধিতার সুযোগ থাকত না। উল্লেখ্য, কে এম নুরুল হুদার বতর্মান নিবার্চন কমিশন ছাড়া আগের কমিশনের সদস্যরা বিষয়টি সম্পকের্ যথাযথ সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি। বরং এর ব্যবহার নিয়ে সংশয় প্রকাশের ঘটনাও ঘটেছে। বতর্মান নিবার্চন কমিশনের একজন সদস্য মাহবুব তালুকদার এ বিষয়ে তার ‘নোট অব ডিসেন্ট’-এ সংশয় প্রকাশ করেছেন। সাবেক মন্ত্রিপরিষদসচিব ও সরকারি কমর্কমিশনের (পিএসসি) সাবেক চেয়ারম্যান ড. সা’দত হুসাইন বলেছেন, বতর্মান সংসদ নিবার্চনে ইভিএম ব্যবহারের প্রস্তুতি নেই জানিয়েও ইসি হঠাৎ এ বিষয়ে উদ্যোগী হয়ে ওঠায় নানা প্রশ্ন উঠেছে।

আমরা বলতে চাই, জাতীয় সংসদ নিবার্চন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূণর্ বিষয়। এটি অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য হোক এমনটি কাম্য। বলার অপেক্ষা রাখে না, একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন কোন পদ্ধতিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তা নিয়ে দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কৌত‚হলের অন্ত নেই। ইভিএম নিয়ে সাবেক মন্ত্রিপরিষদসচিব আলী ইমাম মজুমদার বলেছেন, স্থানীয় সরকার নিবার্চনের মাধ্যমে ইভিএম ব্যবহার ধাপে ধাপে বাড়ানো উচিত ছিল। জাতীয় নিবার্চনেও এর ব্যবহার ব্যাপকভাবে না করে সীমিতভাবে করা যেতে পারে। আমরা মনে করি, সাবির্ক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে নিবার্চন কমিশনের সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। বিশ্লেষকদের মত আমলে নেয়া এবং পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে ইভিএম ব্যবহারের বিষয়টি ভাবা জরুরি।

বলা দরকার, কে এম নুরুল হুদার বতর্মান নিবার্চন কমিশন একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন উপলক্ষে গত বছর ১৬ জুলাই যে কমর্পরিকল্পনা বা রোডম্যাপ প্রকাশ করে তার খসড়াতে বলা ছিল, ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন ব্যবহারের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। ফেব্রæয়ারিতে ইভিএম ব্যবহারে উপযোগী করা, সময়সূচি ঘোষণার ৩০ দিন আগে ইভিএম ব্যবহারের উপযোগিতাসংক্রান্ত প্রচারণা চালানো হবে। কিন্তু চ‚ড়ান্ত কমর্পরিকল্পনায় ইভিএমের বিষয়টি বাদ দেয়া হয়। এ অবস্থায় গত বছর নিবার্চন কমিশনের সঙ্গে সংলাপে ইভিএমের মাধ্যমে আগামী জাতীয় সংসদ নিবার্চন অনুষ্ঠানের প্রস্তাব রাখে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ। তবে ওই সংলাপে বেশির ভাগ দলই এ নিবার্চনে ইভিএম ব্যবহারের বিপক্ষে মত দেয়।

মূলত, ২০০২ সালের আগস্টে এম এ সাঈদের নিবার্চন কমিশন ভারতের তৈরি কয়েকটি ইভিএম এনে এ প্রযুক্তি দেশে ব্যবহারের সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখার উদ্যোগ নিয়েছিল, কিন্তু বিষয়টি শুরুতেই থেমে যায়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তার আগের মেয়াদে ২০১০ সালের ২১ নভেম্বর ইসিকে দেশের সব নিবার্চনে ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহার করতে পরামশর্ দিয়েছিলেন। ২০১১ সালের ২৯ মাচর্ জাতীয় অথৈর্নতিক পরিষদের নিবার্হী কমিটির (একনেক) সভায় ইসি সচিবালয়কে বলা হয়, ইভিএম চালুর লক্ষ্যে দ্রæত প্রকল্প প্রস্তাব পেশ করতে হবে। তবে সে সময়ের ড. এ টি এম শামসুল হুদার এবং পরে কাজী রকিবউদ্দীন আহমদের কমিশন প্রস্তাব পেশ করতে পারেনি। আমরা মনে করি, ইভিএম ব্যবহারসহ সামগ্রিক বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোনো বিকল্প নেই। কেননা, আগামী জাতীয় সংসদ নিবার্চন সুষ্ঠু হবে এমনটি কাম্য।

আমরা বলতে চাই, ইভিএমের ব্যবহার নিয়ে নানা ধরনের মত সামনে আসছে। নিবার্চনে ইভিএম ব্যবহার নিয়ে তাড়াহুড়া করা ঠিক হবে না, এমনটি বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আমরা মনে করি, ইভিএমের ব্যবহার নিয়ে বিতকের্র অবসান হওয়া জরুরি। সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নিবার্চনের লক্ষ্যে নিবার্চন কমিশনকে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হবে। মনে রাখা দরকার, ভোট প্রদান নাগরিকের ন্যায্য অধিকারের প্রয়োগ এবং গণতন্ত্রের অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য। আর যেখানে আমাদের দেশে বিভিন্ন সময়েই নিবার্চন নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন সামনে আসে, সেখানে যে পদ্ধতিতেই নিবার্চন হোক তা যেন রাজনৈতিকভাবে ঐকমত্যের ভিত্তিতেই নিধাির্রত হয় সেটা নিশ্চিত করতে হবে। নিবার্চন কমিশনের যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন অনুষ্ঠিত হবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<10641 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1