মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শহর ছেড়ে যাওয়া শিশুদের লেখাপড়া অনিশ্চিত প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে

নতুনধারা
  ২৩ জুলাই ২০২০, ০০:০০

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের কারণে সারা বিশ্ব এক বিপর্যস্ত ও ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখোমুখি। এ ক্ষেত্রে বলা দরকার, পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে সেটাও অনিশ্চিত। আর দেশেও ক্রমাগত বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা। বলার অপেক্ষা রাখে না, এই পরিস্থিতিতে সবকিছুই কার্যত বাধাগ্রস্ত হয়েছে। মানুষের জীবনযাপনের স্বাভাবিকতা বিঘ্নিত হয়েছে। অর্থনীতিসহ অন্যান্য খাতেও নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এমন অবস্থায় শিক্ষা খাতেও নেমে এসেছে আশঙ্কাজনক বাস্তবতা। বিশেষ করে করোনাভাইরাসের প্রভাবে অনেক পরিবারকে শহর ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে, সে পরিবারগুলোর শিশুদের লেখাপড়ার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, করোনা পরিস্থিতিতে চাকরি বা কাজ হারিয়ে অনেক মানুষ পরিবার-পরিজন নিয়ে ঢাকা ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। এছাড়া মাসিক বেতন বা দৈনিক আয় কমে যাওয়ায় উপার্জনে অক্ষম ব্যক্তি ভাড়াবাসা ছেড়ে স্ত্রী-সন্তানদের গ্রামে পাঠিয়ে দিয়ে নিজে মেসে উঠেছেন। বিভিন্ন বিভাগীয় ও জেলা শহর থেকেও নিম্নআয়ের অনেক মানুষ উপার্জনহীন হয়ে গ্রামে ফিরে গেছেন। আর এ ক্ষেত্রে আলোচনায় এসেছে যে, করোনার প্রকোপ শূন্যের কোটায় নামলেও এদের সিংহভাগেরই পরিবার নিয়ে শহরে ফেরার সম্ভাবনা নেই। মূলত এ অবস্থায় গ্রামে ফিরে যাওয়া পরিবারগুলোর শিশুসন্তানদের শিক্ষাজীবন অনেকটা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সঙ্গত কারণেই সৃষ্ট পরিস্থিতি গুরুত্বসহকারে আমলে নিতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে মনোযোগী হতে হবে। কেননা, এটা সত্য যে, করোনা পরিস্থিতি অত্যন্ত ভীতিপ্রদ কিন্তু এই বাস্তবতাকে মেনেই শিশুদের লেখাপড়ার বিষয়টিকে আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে।

এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ করা দরকার, শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গ্রামে ফিরে যাওয়া পরিবারগুলোর শিশুদের শিক্ষাজীবনে এরই মধ্যে ছন্দপতন ঘটেছে। এছাড়া করোনার প্রকোপ আরও দীর্ঘমেয়াদি হলে তার সঙ্গে পালস্না দিয়ে শিশু শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার সংখ্যা আরও বাড়বে। কেননা, তাতে নতুন করে শহরের বিপুলসংখ্যক মানুষের কর্মহীন হয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা মনে করি, এই সংকট কোনোভাবেই এড়ানোর সুযোগ নেই। ফলে কঠিন পরিস্থিতি কীভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব তা বিচার বিশ্লেষণ করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, যখন সারা বিশ্বেই কারোনভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে এবং সংক্রমণ বাড়ছে, তখন স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করাসহ বিশ্বের স্বাস্থ্যব্যবস্থা ঠিক রাখতে যেমন কার্যকর পদক্ষেপ অব্যাহত রাখা জরুরি, তেমনিভাবে শিক্ষা খাতের বিষয়টিকে সামনে রেখেও সংশ্লিষ্টদের সর্বাত্মক প্রস্তুতির বিকল্প নেই। এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না, মানুষের মধ্য আতঙ্ক বাড়ছে, জীবনযাপনের স্বাভাবিকতা বিঘ্নিত হয়েছে। করোনাভাইরাসের কারণে বিশ্বের প্রত্যেকটি খাতই বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। এর আগে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্ব ব্যাপক দুর্ভিক্ষের ঝুঁকির মুখে আছে বলেও সতর্ক করেছে জাতিসংঘ। একদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণে পুরো বিশ্বই বিপর্যস্ত, অন্যদিকে দুর্ভিক্ষের ঝুঁকি- সঙ্গত কারণেই সামগ্রিকভাবে বিশ্ব এক ভয়ংকর পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আর এর মধ্যই কীভাবে শিক্ষাকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব সেই বিষয়টি খতিয়ে দেখে উদ্যোগী হতে হবে।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, শিক্ষা সংক্রান্ত নানা সংকট সৃষ্টি হয়েছে এবং গ্রামে ফিরে যাওয়া পরিবারগুলো শিশুর শিক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে; ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। শিক্ষাবিদরাও মনে করছেন, এই বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে গেলে কিংবা এক বা দুই বছরের জন্য তারা পিছিয়ে গেলে তাদের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। যার প্রভাব শুধু শিক্ষাব্যবস্থাই নয়, সামাজিকভাবেও পড়বে। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্টদের এই পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সব ধরনের পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। অনেক শিশু শিক্ষার্থীর ভাগ্য বিড়ম্বনা ঘটবে বলে যে আশঙ্কার বিষয় উঠে আসছে তা আমলে নিতে হবে। একদিকে করোনা পরিস্থিতিতে অনেক পরিবার উচ্চ মধ্যবিত্ত থেকে মধ্য মধ্যবিত্ত হয়েছে, মধ্য মধ্যবিত্ত থেকে নিম্নমধ্যবিত্ত হয়েছে- অন্যদিকে কর্মহীন মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। অন্যদিকে গ্রামে ফিরে যাওয়ার পরিবারগুলোর শিশুদের শিক্ষা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে- এমন পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<106721 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1