শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্তি থেকে রক্ষা করতে হবে

নতুনধারা
  ২৫ জুলাই ২০২০, ০০:০০

গতানুগতিক পদ্ধতি থেকে বেরিয়ে এসে উন্নত ও আধুনিক পদ্ধতিতে মাছ চাষের মাধ্যমে দেশি প্রজাতির মাছকে বিলুপ্তি থেকে রক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, মৎস্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগের ফলে একদিকে যেমন নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র সৃষ্টি হবে, তেমনি সমৃদ্ধ হবে জাতীয় অর্থনীতি। প্রধানমন্ত্রী গত বুধবার সকালে গণভবনের লেকে মাছ অবমুক্ত করে 'জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২০' উদ্বোধন ঘোষণা করতে গিয়ে এই কথা বলেন। আমরাও তার কথার সঙ্গে একমত পোষণ করছি।

বলা হয়ে থাকে মাছে-ভাতে বাঙালি। বাঙালির খাদ্যতালিকায় নানা ধরনের মাছ থাকে। বিশেষ করে অতিথি আপ্যায়নের ক্ষেত্রে পরিবেশন করা বিভিন্ন ধরনের সুস্বাদু মাছ। ফলে খাদ্যতালিকায় মাছের জুড়ি মেলা ভার। মৎস্যসম্পদ (মাছ, আবরণযুক্ত জলজপ্রাণী ও শামুক) উৎপাদনে বিশ্বে অষ্টম স্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষিবিষয়ক সংস্থা (এফএও) সূত্রে এই তথ্য পাওয়া গেছে। ইকোনমিস্ট ইন্টেলিজেন্ট ইউনিট (ইইইউ) ওয়ার্ল্ড ইন ফিগার নামের একটি হালনাগাদ প্রকাশনায় এই তথ্য দেওয়া হয়েছে। ২০১৭ সালের তথ্যে বাংলাদেশ এ অবস্থান অর্জন করেছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। উলেস্নখ্য, আলোচিত সময়ে মৎস্যসম্পদ উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষ অবস্থানে রয়েছে চীন। দেশটি মৎস্য উৎপাদনের পরিমাণ ৬২.২ মিলিয়ন বা ৬ কোটি ২২ লাখ টন। দ্বিতীয় ইন্দোনেশিয়া, দেশটির উৎপাদন ১ কোটি ২৮ লাখ টন। তৃতীয় অবস্থানে ভারতের উৎপাদন ১ কোটি ১৬ লাখ টন। এরপর রয়েছে ভিয়েতনাম ৭১ লাখ টন, যুক্তরাষ্ট্র ৫৫ লাখ টন, রাশিয়া ৫১ লাখ টন ও পেরু ৪৩ লাখ টন। অষ্টম স্থানে থাকা বাংলাদেশের মৎস্যসম্পদ উৎপাদনের পরিমাণ ৪১ লাখ টন। নবমে থাকা জাপান ৩৮ লাখ টন এবং নরওয়ে উৎপাদন করেছে ৩৭ লাখ টন মৎস্যসম্পদ। এ ছাড়া ১১ থেকে ২০তম স্থানে থাকা দেশগুলো হলো মিয়ানমার, চিলি, ফিলিপাইন, থাইল্যান্ড, মেক্সিকো, দক্ষিণ কোরিয়া, মিসর, মালয়েশিয়া, মরক্কো ও ব্রাজিল।

পরিসংখ্যান বু্যরোর হিসাবে, বর্তমানে মোট দেশজ উৎপাদনে (জিডিপি) মৎস্যসম্পদের অবদান এখন ৩ দশমিক ৬১ শতাংশ। এ ছাড়া প্রাকৃতিক উৎস থেকে দেশে ২০১৭ সালে ১০ লাখ ৪৮ হাজার টন মাছ উৎপাদিত হয়। এই খাতে গত ১১ বছরে বাড়তি প্রায় ৬৫ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে এবং বেড়েছে চাষি ও মৎস্যজীবীদের আয়।

আশার কথা, প্রাকৃতিক উৎস থেকে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ বিশ্বে পঞ্চম থেকে তৃতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে। আমরা মনে করি এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে হবে। মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ সাফল্য লাভ করলেও একদিকে দেশি প্রজাতির মাছ বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে বাজারে মাছের লাগাম ছাড়া দাম। স্বাভাবিক নিয়মে মাছের উৎপাদন ও সরবরাহ বেশি থাকলে দাম কমার কথা। অথচ বাজারে উল্টো চিত্রই চোখে পড়ে। নদী, জলাশয়ে, খালে-বিলে প্রাকৃতিক মাছ কমে যাওয়ায় এখন অধিকমাত্রায় মাছের চাষ হচ্ছে। এর ফলে মাছের চাহিদা পূরণ হচ্ছে, পাশাপাশি কর্মসংস্থানও হচ্ছে। বন্যার সময়ে পরিস্থিতিটা ভিন্ন।

তবে মৎস্য উৎপাদকের ক্ষেত্রে কিছু নেতিবাচক দিকও রয়েছে। মৎস্য চাষকে উৎসাহিত করার জন্য সব প্রতিবন্ধকতাকে আমলে নিতে হবে। সরকারের কার্যকর পদক্ষেপই কেবল পারে মৎস্য উৎপাদনে আরও সমৃদ্ধি লাভ করতে। সেজন্য বর্তমান সাফল্য ধরে রাখতে হবে। পাশাপাশি বিলুপ্তি থেকে রক্ষা করতে হবে দেশি প্রজাতির মাছ।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<106968 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1