বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

চিন্তায় দুই সিটি করপোরেশন

মশক নিধনে কাযর্কর পরিকল্পনা নিন
নতুনধারা
  ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮, ০০:০০

রাজধানীতে মশার প্রাদুভাের্বর বিষয়টি বহুল আলোচিত। পাশাপাশি মশক নিয়ন্ত্রণে দুই সিটি করপোরেশনের ব্যথর্তার বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসে নানা সময়। মশককুলের বংশবৃদ্ধির লাগাম টেনে ধরতে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা ব্যয়ও করছে। এরপরও মশক নিমূর্ল না হওয়া অত্যন্ত পরিতাপের। ‘মশা মারতে কামান দাগা’র পরও মশার উৎপাত থেকে রাজধানীবাসীর রেহাই মিলছে না। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, মশক নিধনের জন্য যে পরিকল্পনা এবং তার জন্য যে বাজেট আছে, তা যথাযথভাবে খরচ করলে, নগরীতে মশার উৎপাত থাকার কথা নয়। এমনও অভিযোগ আছে, সিটি করপোরেশনের মশা নিধনের জন্য বরাদ্দকৃত টাকার বড় অংশই সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের হাতে চলে যায়, যদিও তা কোনো সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে কখনো স্বীকার করা হয় না। আমরা মনে করি, অভিযোগ স্বীকার করা না হোক, অন্তত মশা তো নিমূর্ল হবে। এতে সান্ত¡নার একটা জায়গা অন্তত থাকে নগরবাসীর।

সম্প্রতি গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, বিগত দুই-তিন বছরের তুলনায় মশাবাহিত রোগ ডেঙ্গুর প্রবণতা বাড়লেও রাজধানীর মশা নিয়ন্ত্রণে সিটি করপোরেশনের কাযর্কর কোনো পদক্ষেপ নেই বলে অভিযোগ রাজধানীবাসীর। খোদ দুই সিটি করপোরেশন সংশ্লিষ্টরাও এ ব্যাপারে তাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, দুই সিটি করপোরেশন এডিস মশার লাভার্ ও প্রজননস্থল ধ্বংস করতে গত ২৫ জুন ৫৭টি ওয়াডের্ একযোগে ‘বিশেষ কমর্সূচি’ শুরু করে। দুই দফায় ওই কমর্সূচির আওতায় ৩৩ হাজার ৫০৮টি বাড়িতে গিয়ে এডিস মশার লাভার্ ও প্রজননস্থল ধ্বংস করার পাশাপাশি সচেতনতামূলক কাযর্ক্রম পরিচালনা করা হয়েছে। এ ছাড়া এডিস মশা ধ্বংস করতে তৃতীয় ধাপে চলতি মাসের ৩ তারিখ থেকে ‘বিশেষ ক্র্যাশ কমর্সূচি’ চালু করেছে। এ ছাড়া গত ৪ আগস্ট থেকে ১৭ আগস্ট পযর্ন্ত মশা নিয়ন্ত্রণের ‘বিশেষ কমর্সূচি’ পালন করে। ডেঙ্গু রোগের প্রকোপ দেখে চলতি মাসের ৯ সেপ্টেম্বর আবার সেটি চালু করেছে ডিএনসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ।

এক হিসাব অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে আগস্ট পযর্ন্ত ৮ মাসে ২ হাজার ৬৩২ জন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে। সংশ্লিষ্টরাও বলছেন, রাজধানীতে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। রাজধানীতে মশাবাহিত ডেঙ্গুর এমন ভয়াবহতা নিয়ে সবার মধ্যে উদ্বেগ সৃষ্টি হলেও মশক নিধনে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের কাযর্কর পদক্ষেপ কারো চোখে পড়ছে না। তারা বলছে, এ বিষয়ে ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। মশা নিধনের জন্য ক্র্যাশ ও লাবির্ সাইড ওষুধ ছিটানোর কাযর্ক্রম চলছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডেঙ্গুর এমন ভয়াবহ রূপ নিয়ন্ত্রণে আরও ব্যাপক কাযর্ক্রম পরিচালনা করা উচিত ছিল দুই সিটি করপোরেশনের।

পত্রিকার তথ্য মতে, ২০১৮-২০১৯ অথর্বছরের বাজেটে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশন যথাক্রমে ২১ কোটি এবং ২৬ কোটি টাকা ব্যয় ধাযর্ করেছে মশক নিধন কাযর্ক্রমে। মশক নিধন ওষুধ ও যন্ত্রপাতি ক্রয় ছাড়াও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতায় এসব অথর্ ব্যয় করা হবে। অথর্বছরে প্রায় তিন মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও মশক নিধন অভিযান দৃশ্যমান না হওয়া এবং রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রকোপের কারণে সিটি করপোরেশনের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজধানীবাসী। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, এডিস মশার কামড়ে এবার বেশির ভাগই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। বিদ্যমান এ বাস্তবতায় মশক নিয়ন্ত্রণে কতৃর্পক্ষের গাফিলতির বিষয়টিই স্পষ্ট হতে পারে। পাশাপাশি বরাদ্দকৃত অথের্র সদ্ব্যবহার নিশ্চিতের ব্যাপারেও প্রশ্ন থেকে যায়।

সবোর্পরি বলতে চাই, রাজধানীতে মশাবাহিত ডেঙ্গু রোগসহ বিভিন্ন জটিল রোগ সৃষ্টিকারী ভাইরাসের বাহক হিসেবে কাজ করে মশা। ফলে সব ধরনের মশা নিয়ন্ত্রণে কতৃর্পক্ষ ব্যথর্তার পরিচয় দিলে সংকট বাড়তে থাকবে। মশক নিধনে সংশ্লিষ্ট কতৃর্পক্ষের উদাসীনতা কিছুতেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। নিয়মিত মশক নিধন কাযর্ক্রম পরিচালনাসহ রাজধানীর আশপাশের জলাধারগুলোও পরিচ্ছন্ন রাখার অভিযান অব্যাহত না থাকলে মশক নিধনে যে সুফল পাওয়া যাবে না এটিও বহুল আলোচিত। কয়েক বছর ধরে রাজধানীতে এডিস মশার উপদ্রব বহুগুণে বেড়েছে। এ বাস্তবতা বিবেচনায় নিয়ে মশক নিধনে সংশ্লিষ্টরা দায়িত্বশীলতার পরিচয় দিক। মশক-নিধনে প্রয়োজনে সমন্বিত কাযর্কর পরিকল্পনা গ্রহণ ও তার বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টরা দ্রæত উদ্যোগ নিক, এটাই প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<12785 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1