মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জামদানিতে বাঙালি রমণীর বিশ্বজয়

মাজহার খান ঢাকা
  ০১ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

‘বাংলার নারী, মানায় ভালো শাড়ি’Ñ প্রবাদটি বহু পুরনো। কথাটির মমার্থর্ হচ্ছে, বাঙালি নারী আর যাই পরুক না কেন শাড়ির চেয়ে তাদের আর কোনোকিছুতেই ততটা মানায় না। শাড়ি আর বাঙালি রমণী যেন একই সূত্রে গঁাথা। শাড়ির মধ্যে আবার জামদানিই হচ্ছে সবার প্রিয়। যুগ যুগ ধরে বাঙালি রমণীদের মনে জায়গা করে নিয়েছে এই জামদানি শাড়ি। তাই বাঙালি রমণীর পছন্দের পোশাক তালিকায় জামদানিই থাকে সবার প্রথমে। এই জামদানি শুধু বাংলাদেশেই নয় এশিয়া মহাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের রুচিশীল রমণীদের কাছেও ব্যাপক সমাদৃত এই জামদানি। একমাত্র জামদানি শাড়িতেই রয়েছে হাজারো রং আর বাহারি ডিজাইনের সন্নিবেশ। রয়েছে বিভিন্ন আয়ের মানুষের জন্য বিভিন্ন মূল্যের এবং বিভিন্ন কোয়ালিটির জামদানি শাড়ি। তাই যে কারোরই সাধ্যের মধ্যে থাকে জামদানি শাড়ি। জামদানি শাড়ি পছন্দ করে না এমন নারীদের সংখ্যা খুবই নগন্য। যে নারী শাড়ি পরে না সেও কিন্তু শখের বশে হলেও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে বছরে দু-চারবার জামদানি শাড়ি পরে থাকে।

আর এ সৌখিন জামদানি শাড়িকে বিশ্বের বুকে স্বগৌরবে পরিচয় করিয়ে দিচ্ছেন আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সবর্দাই জামদানির ভালোবাসায় সিক্ত। তিনি বিশ্বের যে কোনো দেশেই যান না কেন একমাত্র জামদানি শাড়িই যেন উনার পোশাক তালিকায় আর পছন্দের শীষের্। জামদানিই ওনার নিত্যদিনের সঙ্গী। জামদানি শাড়ি ছাড়া অন্য কোনো শাড়ি পরতে খুব কমই দেখা যায় তাকে। সাংবাদিক শাহানা হুদা একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলের ওয়েবসাইটে মতামত দিতে গিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে ‘জামদানি শাড়ির ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডর’ বলে আখ্যায়িত করেছেন। আসলে তিনি ভুল বলেননি। কারণ আমরা সবসময়ই প্রধানমন্ত্রীকে জামদানি শাড়ি পরা অবস্থায় দেখি। তিনি যে কোনে রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানাদি, সংসদ অধিবেশন ও মন্ত্রিপরিষদের মিটিংয়েও জামদানিকেই প্রাধান্য দিয়ে থাকেন।

সাংবাদিক শাহানা হুদা আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন অনুষ্ঠানের বা দিবসের থিমের সঙ্গে ম্যাচিং করে জামদানি পরেন। যেমন স্বাধীনতা বা বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে দেখেছি লাল-সবুজের শাড়ি পরতে, একুশে ফেব্রæয়ারিতে পরেন সাদা-কালো, নারী দিবসে পরেন বেগুনী জামদানি। এতেই বোঝা যায় উনি মন থেকে জামদানিকে গ্রহণ করেছেন এবং সাধারণ মানুষ তথা নারীদের কাছেও এর গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে দিয়েছেন বহুগুণ।

রাহুল গান্ধী যখন বাংলাদেশে এসেছিলেন তখন তিনি তার মা আর বোনের জন্য অনেক জামদানি শাড়ি কিনে নিয়ে গিয়েছিলেন। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নিজেও নাকি কাউকে শাড়ি উপহার দিলে একমাত্র জামদানি শাড়িই দিয়ে থাকেন। বিভিন্ন গণমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরির স্ত্রী থেরেসা হেইঞ্জকে জামদানি শাড়িই উপহার দিয়েছিলেন। এর আগে ২০১৫ সালের ফেব্রæয়ারি মাসে মমতা ব্যানাজির্র ঢাকা সফরের সময় তার দলের নারী সদস্য এবং পুরুষ সদস্যদের স্ত্রীদের জন্যও প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে জামদানি শাড়ি উপহার দেয়া হয়।

সবমিলিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববাজারে জামদানিকে করেছেন বেশ সমাদৃত আর বাংলাদেশের জামদানি তথা তঁাত শিল্পকেও দিয়েছেন যথাযোগ্য মযার্দা। জামদানি শাড়িতে তিনি করেছেন বিশ্বজয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে