বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত

বাড়তি সতকর্তা জরুরি
নতুনধারা
  ০৩ জুলাই ২০১৮, ০০:০০

যশোরে বিমানবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছে। আর এই ঘটনায় দুই পাইলট স্কোয়াড্রন লিডার মো. সিরাজুল ইসলাম এবং স্কোয়াড্রন লিডার এনায়েত কবির পলাশ নিহত হয়েছেন। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যায়, রোববার রাত ৯টার দিকে প্রশিক্ষণ বিমানটি যশোর সদরের চান্দুটিয়া গ্রামে বুকভরা বঁাওড়ে পড়ে ডুবে যাওয়ার পর পাইলটদের বিষয়ে কিছু জানাতে পারছিল না স্থানীয় প্রশাসন। রাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) পক্ষ থেকে দুই পাইলট সিরাজুল ও এনায়েতের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করা হয়। বলার অপেক্ষা রাখে না যে, নেই এই ঘটনাটি অত্যন্ত হৃদয়বিদারক এবং একই সঙ্গে যে ক্ষতি হলো তা অপূরণীয়।

উল্লেখ্য, স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য জানিয়েছেন হঠাৎ দুটি বিকট শব্দ শুনতে পান তারা, এরপর একটি বিমানকে বঁাওড়ে পড়ে ডুবে যেতে দেখেন। আর ওই সময় পানিতে তেল ভাসতে দেখা যায়। আইএসপিআর জানিয়েছে, নৈশ মহড়ার অংশ হিসেবে স্কোয়াড্রন লিডার সিরাজুল ও এনায়েত বিএএফ ঘঁাটি মতিউর রহমান থেকে কে-এইটডবিøউ বিমানটি নিয়ে উড়াল দিয়েছিলেন। কী কারণে বিমানটি দুঘটর্নায় পড়ল, তা জানা না গেলেও ঘটনাটি তদন্তের জন্য উচ্চ পযাের্য়র একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে আইএসপিআর জানিয়েছে।

আমরা বলতে চাই যে, এই ঘটনাটি যেমন বেদনাদায়ক তেমনিভাবে অপ্রত্যাশিত। বলার অপেক্ষা রাখে না, পাইলটরা এই দেশের সম্পদ। ফলে তাদের মৃত্যু শুধু ব্যক্তি বা পরিবারের নয়, বরং এই ক্ষতি দেশের ক্ষতি। সঙ্গত কারণেই এই ঘটনাকে আমলে নিয়ে পরবতীর্কালে বাড়তি সতকর্তা অবলম্বন করা অপরিহাযর্ বলেই আমরা মনে করি। যেহেতু ঘটনাটি তদন্তের জন্য উচ্চ পযাের্য়র একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে, ফলে আমরা এও আশা করি যে, ঘটনাটির কারণ অনুসন্ধান করে এমন অনাকাক্সিক্ষত ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে। প্রসঙ্গত বলা দরকার, প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ঘটনা এই প্রথম নয়। এর আগে রাজশাহীর হযরত শাহ মাখদুম বিমানবন্দরে একটি প্রশিক্ষণ বিমান বিধ্বস্ত হয়েছিল। সেই ঘটনাতেও পাইলট নিহত হয়েছিল। প্রশিক্ষণ বিমানটি উড্ডয়নের পর পরই বিমানবন্দরের রানওয়ে থেকে ১৫-২০ হাত দূরে আছড়ে পড়ে এবং সঙ্গে সঙ্গে আগুন ধরে যায়। এ ছাড়া তারও আগে ফায়ারিং প্রশিক্ষণ চলাকালে টাঙ্গাইলের ঘাটাইল শহীদ সালাউদ্দিন সেনানিবাসের মাইধারচালা এলাকায় মটার্র শেল বিস্ফোরণে সেনা ও বিজিবির ৬ সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল। আমরা মনে করি, যারা দেশ ও মানুষের জন্য নিবেদিত তাদের এইভাবে দুঘর্টনাজনিত মৃত্যু অত্যন্ত বেদনাদায়ক এবং মেনে নেওয়া কষ্টকর। মনে রাখতে হবে, একজন পাইলট তৈরি করতে যেমন রাষ্ট্রের অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়; তেমনি জনগণের অথর্ ব্যয়ে তাদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিয়ে দেশসেবায় আত্মনিয়োগের জন্য গড়ে তোলা হয়। ফলে এরকম ভয়ানক দুঘর্টনা যেন না ঘটে সেই লক্ষ্যে বাড়তি সতকর্তা অবলম্বন করা হবে এমনটি কাম্য।

সবোর্পরি আমরা বলতে চাই যে, প্রশিক্ষণ বিমানের যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা সাপেক্ষ উড্ডয়নসহ সাবির্ক পরিবেশ, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার বিষয়টি লক্ষ্য রাখা জরুরি। মনে রাখতে হবে, যে কোনো অসাবধানতায় শুধু ব্যক্তি বিশেষেই নয় বরং রাষ্ট্রের অপূরণীয় ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। সঙ্গত কারণেই আমরা বলতে চাই, এরকম অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা রোধে সংশ্লিষ্টরা কাযর্কর উদ্যোগ জারি রাখবে এমনটি জরুরি। এ ক্ষেত্রে এবারের ঘটনাটিসহ আগের ঘটনাগুলোকে পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে আকস্মিক যে কোনো দুঘর্টনা রোধে সংশ্লিষ্টরা বাড়তি সতকর্তা অবলম্বন করবেন এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে