শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিদ্যার সাথর্কতা বজায় থাকুক

মো. মাসুদ রানা শিক্ষাথীর্, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
  ২১ অক্টোবর ২০১৮, ০০:০০

বিদ্যা অজের্নর মূল উদ্দেশ্য হলো মনুষ্যত্বের বিকাশসাধন করে মানুষের কল্যাণে তার ব্যবহারিক প্রয়োগ ঘটানো। যে বিদ্যা অজির্ত হয়েছে কিন্তু শুধুমাত্র ব্যক্তিগত স্বাথর্ ছাড়া মানুষের কল্যাণে আসেনি, তবে বুঝতে হবে ওই বিদ্যার সাথর্কতা অজির্ত হয়নি, তা শুধু কণ্ঠস্থই হয়েছে, আত্মস্থ নয়। আত্মস্থ বিদ্যা অবশ্যই আত্মার সংকীণর্তাকে দূর করে মনুষ্যত্বের বিকাশসাধন করবেই। রাশি রাশি কিতাবাদী পাঠ করলাম, বিদ্যা অজর্ন করে ডিগ্রিধারী হলাম, দেশ-বিদেশে খ্যাতি অজর্ন করলাম, পÐিত বলে সমাদৃত হলাম, এমনকি বড় ধরনের চাকরিও পেলাম কিন্তু এতে অন্যের কি কোনো প্রকার কল্যাণ সাধিত হয়েছে? না, হয়নি। এ পযর্ন্ত হলো বিদ্যা অজর্নকারীর প্রতি এক ধরনের পরিশ্রমের মুনাফা যা তার ব্যক্তিগত উন্নতি বয়ে আনবে।

একজন রোগী চায় ডাক্তার তাকে সঠিক পথ্যনিদের্শনা দিক, ছাত্রছাত্রী চায় শিক্ষক তাদের সঠিক পাঠদান করুক ইত্যাদি। এটাই কাম্য, এটাই আশা? সঠিক রোগ নিণর্য় ও প্রয়োজনীয় ওষুধের ব্যবস্থাপত্র দিতে না পারলে কিংবা সঠিক পাঠদান না হলে বিদ্যার সাথর্কতায় নিশ্চয়ই হানি ঘটবে? ধরি, আমি রাষ্ট্রের বড় কোনো পদে আসীন হয়েছি। রাষ্ট্র, জনগণ নিশ্চয়ই আমার কাছ থেকে সঠিক পরিচালনাই আশা করবে। আমার মধ্যে যদি মনুষ্যত্ব অথার্ৎ প্রকৃত শিক্ষা না থাকে, তবে দুনীির্ত করতে আমার বিবেক বিরোধিতা করবে না? দেশের ক্ষতি হবে? তবে হ্যঁা, কোনটা ভালো কোনটা মন্দ, কোন পথে চলা উচিত কিংবা উচিত নয়, এই চিন্তার বোধগম্যতাও এক প্রকার শিক্ষা। যে এগুলো বোঝার চেষ্টা করে না, নিশ্চয়ই তার মধ্যে প্রকৃত বিদ্যার ঘাটতি রয়েছে। মানুষের জীবনে বিদ্যার পাশাপাশি ধনও প্রয়োজন? মনুষ্যত্বের বিকাশে বিদ্যা ও ধন উভয়ই ভ‚মিকা পালন করে। তবে এমন যেন না হয়, শুধু ধন পাওয়ার স্বাথের্ আমরা বিদ্যাজর্ন করি?

মলাটবদ্ধ হাজারো কিতাব পাঠ করে শুধু তোতাপাখির মতো মুখস্থ করা, এটা কিন্তু কাম্য নয়? এ কিতাবসমূহের মধ্যে নিহিত জ্ঞানের প্রতিফলন নিজ জীবনে ঘটিয়ে দেশ ও দশের কল্যাণে ব্রতী হওয়াÑ এটাই কাম্য।

বিদ্যা ক্রয় বিক্রয়ের মাধ্যমে মূল্যায়ন হয় না, তাই বিদ্যা অমূল্য সম্পদ। কিন্তু এ বিদ্যা যদি কাজে লাগানো না যায়, ব্যক্তিপযাের্য় কুক্ষিগত থাকে, কৃপণতার ফলে অন্যের নিকট প্রয়োগ না হয়, মানবজাতির কল্যাণ না হয় তবে সে বিদ্যা, বিদ্যা নয় এবং তা মূল্যহীন হয়ে পড়ে। তাই উচিত এ বিদ্যা নামক অমূল্য সম্পদকে সঠিকভাবে আত্মস্থ করি, মনোজগতের দ্বার উন্মোচন করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের পথকে কণ্টকমুক্ত করি। বিদ্যাকে পুঁথিতে আবদ্ধ রাখলেই চলবে না, দেশের কল্যাণে মানুষের প্রয়োজনে এর যথাযথ প্রয়োগ ঘটাতে হবে, মুখস্থ বিদ্যা ত্যাগ করতে হবে, পরিপূণর্ সৃজনশীলতায় বুদ্ধি দ্বারা বিদ্যাকে আত্মস্থ করতে হবে? এ প্রসঙ্গে চাণক্য পÐিত যথাথর্ মন্তব্য করেছেন,

‘পুঁথিতে যে বিদ্যা থাকে আর পরের হাতে যে ধন থাকে দুটিই সমান। দরকারের সময় সে বিদ্যা বিদ্যা নয়। সে ধন ধন নয়।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<18529 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1