শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

পাঠক মত

নতুনধারা
  ০৩ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

বাড়ছে রপ্তানি আয়: বহুমুখীকরণের

আরও উদ্যোগ জরুরি

বাংলাদেশের রপ্তানি আয় উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা অজর্ন করতে না পারলেও আগের অথর্বছরের চেয়ে বেড়েছে। প্রবৃদ্ধির পরিমাণ ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে চীন ও মিয়ানমার বাদে অন্যসব দেশে বাংলাদেশের রপ্তানি বেড়েছে গত অথর্বছরে। বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে বিশ্বের প্রথম অথৈর্নতিক শক্তি যুক্তরাষ্ট্রে। গত বছর যুক্তরাষ্ট্রে ৫ হাজার ৯৮৩ মিলিয়ন ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। আগের বছরের চেয়ে রপ্তানি বৃদ্ধির পরিমাণ ৩৬ মিলিয়ন ডলার বেশি। যুক্তরাষ্ট্রের পর সবোর্চ্চ রপ্তানি আয় এসেছে জামাির্ন ও যুক্তরাজ্য থেকে। বিগত অথর্বছরে এ দুই দেশ থেকে আয় হয়েছে যথাক্রমে ৫ হাজার ৮৯০ ও ৩ হাজার ৯৮৯ মিলিয়ন ডলার। ফ্রান্স, স্পেন, ইতালি, কানাডা, নেদারল্যান্ডস, অস্ট্রেলিয়া ও রাশিয়ায় বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানিও বৃদ্ধি পেয়েছে।

বাংলাদেশ সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি করে চীন থেকে। দুই দেশের অথৈর্নতিক সম্পকর্ দিন দিন বাড়ছে। কিন্তু চীনে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি আয় আগের বছরের চেয়ে কমেছে। একসময় ভারত থেকে সবচেয়ে বেশি পণ্য আমদানি হতো। এখন সে স্থানে রয়েছে চীন। কিন্তু চীনে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি বাড়ার বদলে কমে যাওয়া হতাশাজনক। এশীয় দেশগুলোর মধ্যে বিগত অথর্বছরে জাপানে সবচেয়ে বেশি বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানি হয়েছে। গত অথর্বছরে জাপানে রপ্তানি করে বাংলাদেশ ১ হাজার ১৩২ মিলিয়ন ডলার আয় করেছে। এ পরিমাণ আগের বছরের চেয়ে ১১৯ মিলিয়ন ডলার বেশি। বিশাল দেশ চীনে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি এর প্রায় অধের্ক। গত অথর্বছরে চীন থেকে অজির্ত হয়েছে ৬৯৫ মিলিয়ন ডলার। ভারতে বাংলাদেশি পণ্যের রপ্তানি আয় ৮৭৩ মিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশের রপ্তানি আয় এখনো তৈরি পোশাকনিভর্র। আশার কথা, ওষুধসহ বিভিন্ন পণ্যের রপ্তানিও বাড়ছে। রপ্তানি আয় বাড়াতে ওষুধসহ অপ্রচলিত পণ্য আমদানি বাড়ানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

পরিসংখ্যানে দেখা যায়, অথর্বছরের প্রথম ৯ মাসে মোট রপ্তানি আয় হয়েছে ৩০৩ কোটি ১৯ লাখ ২০ হাজার ডলার। ২০১৬-১৭ অথর্বছরের একই সময়ে আয়ের পরিমাণ ছিল ২৫১ কোটি ৫৫ লাখ ৬০ হাজার ডলার। এ হিসাবে সেবা খাতে রপ্তানি আয় বেড়েছে ২০.৫ শতাংশ। ইপিবির পরিসংখ্যান বলছে, একক মাসভিত্তিতে মাচের্ সেবা রপ্তানির মাধ্যমে আয় হয়েছে ৩৯ কোটি ৬৫ লাখ ৮০ হাজার ডলার। গত বছরের একই সময়ে আয় হয়েছিল ২৭ কোটি ৯০ লাখ ডলার। এ হিসাবে মাচের্ সেবা খাতে রপ্তানি আয় বেড়েছে ৪২.১৪ শতাংশ।

বাংলাদেশ যেসব সেবা পণ্যের রপ্তানি থেকে আয় হয়েছে এগুলোর মধ্যে রয়েছে ম্যানুফ্যাকচারিং সাভিের্সস অন ফিজিক্যাল ইনপুটস, মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড রিপেয়ার, ট্রান্সপোটের্শন, কনস্ট্রাকশন সাভিের্সস, ইনস্যুরেন্স সাভিের্সস, ফিন্যানশিয়াল সাভিের্সস, চাজের্স ফর দি ইউজ অব ইন্টেলেকচুয়াল প্রপাটির্, টেলিকমিউনিকেশন সাভির্স, অন্য ব্যবসায়িক সেবা, পাসোর্নাল-কালচার-রিক্রিয়েশনাল ও গভনের্মন্ট গুডস অ্যান্ড সাভিের্সস। সেবা খাতের রপ্তানি আয়ের মধ্যে ২৯৭ কোটি ৫৩ লাখ ডলারই এসেছে সরাসরি সেবা খাত থেকে। অথার্ৎ মোট রপ্তানির ৯৮.১৩ শতাংশই এসেছে সরাসরি সেবা খাত থেকে। বাকিটা দেশের বন্দরগুলোতে পণ্যবাহী জাহাজগুলোর কেনা পণ্য ও সেবা এবং মাচেির্ন্টংয়ের অধীনে পণ্য বিক্রির আয়। কোনো অনাবাসীর কাছ থেকে পণ্য কিনে একই পণ্য কোনো অনাবাসীর কাছে বিক্রি করাকে মাচেির্ন্টং বলে। এই প্রক্রিয়ায় মোট বিক্রি থেকে মোট ক্রয় বাদ দিয়ে নিট মাচেির্ন্টং রপ্তানি আয় হিসাব করা হয়।

দেশের স্মল, সমুদ্র বা বিমানবন্দরে বিদেশি পরিবহনগুলো সেসব পণ্য ও সেবা যেমনÑ জ্বালানি তেল ও মেরামত সেবা কিনে থাকে সেগুলোকে সেবা খাতের আওতায় ধরা হয়েছে। সেবা খাতের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় হয়েছে সরকারি পণ্য ও সেবা রপ্তানি থেকে। এ উপখাত থেকে এসেছে ১৩১ কোটি ৩২ লাখ ডলার।

অন্য উপখাতগুলোর মধ্যে ‘অন্যান্য ব্যবসায় সেবা’ থেকে এসেছে ৫০ কোটি ২৮ লাখ ডলার। টেলিযোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি থেকে আয় হয়েছে ৩৭ কোটি ৬৫ লাখ ডলার। বিভিন্ন ধরনের পরিবহন সেবা (সমুদ্র, বিমান, রেল এবং সড়ক) থেকে ৪৩ কোটি ৬৩ লাখ ডলার আয় হয়েছে। আথির্ক সেবা খাত থেকে আট কোটি ৮৫ লাখ ডলার এবং ভ্রমণ সেবা উপখাত থেকে ২৯ কোটি ডলার রপ্তানি আয় হয়েছে। এই ৯ মাসে বিভিন্ন পণ্য রপ্তানি করে বাংলাদেশ আয় করেছে দুই হাজার ৭৪৫ কোটি ১৫ লাখ (২৭.৪৫ বিলিয়ন) ডলার। তার সঙ্গে সেবা রপ্তানির আয় ৩০৩ কোটি ১৯ লাখ ডলার যোগ করে দেশের মোট রপ্তানি আয় হয়েছে তিন হাজার ৪৮ কোটি ৩৪ লাখ (৩০.৪৮ বিলিয়ন) ডলার।

পরিশেষে বলছি রপ্তানি আয় বাড়াতে ল্যাটিন আমেরিকা ও আফ্রিকার বাজারে প্রবেশের উদ্যোগও নেয়া দরকার। বিশেষ করে চীন যাতে আরও বেশি বাংলাদেশি পণ্য আমদানি করে সে ব্যাপারে দূতিয়ালি জোরদার করার উদ্যোগ নিতে হবে।

সালাহ্উদ্দিন আহ্মেদ

ঢাকা

অপসংস্কৃতির জয়গান বন্ধ হোক

নব্বই দশকের শেষের দিকে ক্যাবল নেটওয়াকের্র মাধ্যমে বৈপ্লবিক পরিবতর্ন ঘটে আমাদের দেশে। হঁাটি হঁাটি পা পা করে এই নেটওয়াকর্ আজ শহর থেকে গ্রামেও শোভা পাচ্ছে। একটা সময় ছিল, যখন শহুরে মায়েরা তাদের ছেলেমেয়েদের সন্ধ্যা হলে পড়াতে বসতেন আর গ্রামের গৃহবধূরা সঁাঝের বেলায় সাংসারিক কাজ শেষ করে হাতের তৈরি রকমারী পণ্য বানাতে বসতেন বা গল্প করে সময় পার করতেন; কিন্তু আজ তাদের বিনোদিত করতে ডিশ ক্যাবলের বিকল্প বোধহয় খুঁজে পাওয়া দুষ্কর।

এখনকার সময়ে আমাদের দেশে ডেইলি সোপ-খ্যাত সিরিয়ালগুলো জায়গা করে নিয়েছে দশর্কদের হৃদয়ে। কিন্তু এগুলোর পাশাপাশি পাশ্চাত্য বা পাশের দেশ ভারতের অনুষ্ঠানগুলোও স্থান দখল করে নিচ্ছে। এসব অনুষ্ঠানের মধ্যে ডেইলি সোপ-খ্যাত সিরিয়াল অন্যতম। হোক সেটা বাংলা বা হিন্দি। এর মূল আকষর্ণ থাকে অগভীর কাহিনী, বাহারি পোশাক, কড়া মেকআপ, উগ্রজীবনবোধ, অশালীন সংলাপ, অশালীন দৃশ্যায়ন ও অশালীন পোশাক। এগুলো যখন একটি অনুষ্ঠানের উপজীব্য হয়, তখন দশর্কদের বিব্রত অবস্থায় পড়াটা অস্বাভাবিক কিছু নয়।

আজকাল আমাদের দেশে তাদের প্রোগ্রাম বা ড্রেসের স্টাইল দিয়ে পোশাকের নামকরণ করা হয়। তাদের সাজপোশাকে এসব অশালীন ভাব দেখে মনে হয় ‘যাত্রাপালা’ দেখছি। কাহিনীর মধ্যে নেই কোনো গভীরতা। একমাত্র বিষয় ‘প্রেম’ ও প্রতিহিংসা। একজনের একাধিক স্বামী বা স্ত্রী থাকতে পারে। অনৈতিক সম্পকের্ জড়ানোটাও তাদের কাছে ছেলেখেলা এবং ‘জারজ’ সন্তানকেও তারা হাইলাইট করে গল্পে টুইস্ট আনার জন্য। আরো রয়েছে বিজ্ঞাপন বিরতি, যার দৈঘর্্য সেই ঊঢ়রংড়ফব-এর সমান। এসব বিজ্ঞাপনের কিছু আবার অশালীন দৃশ্যে ভরপুর।

এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের শিশু-কিশোর তথা টিনএজার। তারা ‘পনোর্’ আর ‘সামাজিক অনুষ্ঠানের মধ্যে খুব বেশি পাথর্ক্য করতে পারছে না।’ হিন্দি ফিল্ম এক্ষেত্রে মধ্যে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখছে। কারণ স্বল্পবসনা এসব নারী তাদের পদার্য় যেভাবে উপস্থাপন করছে, তাতে নৈতিকতাবোধ বা মানসিক বিকাশ কেমন হবে তা বোদ্ধামাত্রই বুঝেছেন। মানসিক বিকৃতিপূণর্ এসব সিরিয়াল বা ছবি দেখে স্বাভাবিক বিকাশই অস্বাভাবিক। আকাশ সংস্কৃতির নামে এই অপসংস্কৃতির জয়গান বন্ধ করা হোক।

মাহফুজা রহমান

ঢাকা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<20689 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1