শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

রাজনৈতিক সংলাপ

ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হোক
নতুনধারা
  ০৩ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

বৃহস্পতিবার গণভবনে অনুষ্ঠিত হলো তিন ঘণ্টাব্যাপী রাজনৈতিক সংলাপ। ১৮ দলীয় জোটের ২৩ নেতার সঙ্গে এই সংলাপে অংশ নেন ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের ২০ নেতা। সংলাপ শেষে রাজনৈতিক দলের নেতারা সংলাপের বিষয়বস্তু নিয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন, তাদের প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিছুটা হলেও টলায়মান, যা হয়তো অস্বীকার করা যায় না। নিবার্চন ঘিরে দেশবাসীর উদ্বেগ উৎকণ্ঠারও অন্ত নেই। এমন একটি পরিবেশে স্বাভাবিকভাবে সংলাপের দিকেই দেশবাসীর দৃষ্টি ছিল। নিবার্চন কতটুকু গ্রহণযোগ্য হবে, অংশগ্রহণমূলক হবে কিনাÑএমন সব প্রশ্নও আছে দেশবাসীর মনে।

সংলাপ শেষে সংলাপ নিয়ে রাজনৈতিক নেতাদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া লক্ষ করা গেছে। সংলাপে সন্তুষ্ট নন ঐক্যফ্রন্টের নেতারা এমন তথ্যও এসেছে গণমাধ্যমে। আমরা বলতে চাই, যখন নিবার্চন নিয়ে নানা ধরনের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার বিষয়গুলো সামনে আসছে, তখন সংলাপের মাধ্যমে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা হবে, এটাই দেশবাসীর প্রত্যাশা। ঐক্যফ্রন্টের নেতারা ৭ দফা দাবি আদায়ে আন্দোলনের ঘোষণা দিয়েছেন। অপরদিকে সংলাপ শেষে ড. কামাল হোসেন বলেছেন সংলাপ থেকে তেমন কোনো সমাধান পাওয়া যায়নি। ঐক্যফ্রন্টের সাত দফা অসাংবিধানিক আখ্যা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ দূত ও জাতীয় পাটির্র চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ। আর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়কমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সংবিধানের বাইরে যাব না।

আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশের নিবার্চন অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হোকÑএমনটি দেশবাসী প্রত্যাশা করে। এ ছাড়াও বিদেশি ক‚টনীতিকদের পরামশর্ও এটি। অপরদিকে নিবার্চন অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠুভাবে সম্পাদন করতে হলে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার যে বিকল্প নেই, এটাও বহুল উচ্চারিত। নিবার্চনে সব দলের সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা এবং সব দলকে নিবার্চনে অংশগ্রহণ করানো নিঃসন্দেহে বড় একটি চ্যালেঞ্জ, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা এমনটি বলে আসছেন বারবার। সংলাপের মাধ্যমে ঐক্য প্রতিষ্ঠিত হলে বলাই বাহুল্য, দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নানা ধরনের টানাপড়েন, মত-দ্বিমতের অবসান ঘটবে। যেহেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নিবার্চন আমরাও চাই, সেহেতু নিবার্চনের আগে রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হোক এটাই প্রত্যাশা। তফসিল ঘোষণার আগে সংলাপ অথর্বহ হলে সরকার ও বিরোধী পক্ষের মধ্যে দূরত্ব যে কমে আসবে, তাও বলা যায়। বৃহস্পতিবারের সংলাপে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সবাই মিলে দেশটাকে গড়তে হবে। চাইলে ফের আলোচনা হতে পারে এমন আভাসও দেয়া হয়েছে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে।

সবোর্পরি আমরা এটাই বলতে চাই, রাজনৈতিক সংলাপ সফল করতে হলে উভয় রাজনৈতিক দলকে নিজ নিজ অবস্থানে অনড় থাকলে সংলাপ অথর্বহ যে হতে পারে না, অতীতেও তার দৃষ্টান্ত রয়েছে। এ জন্য উভয় দলেরই কতর্ব্য হওয়া দরকারÑছাড় দেয়ার মানসিকতা নিয়েই সংলাপে অংশ নেয়া। আবার এটাও ঠিক যে, এমন কোনো দাবি উত্থাপন করা সঙ্গত হতে পারে না, যা সংবিধান পরিপন্থি। সংবিধানের আলোকেই নিবার্চনকেন্দ্রিক সমঝোতায় পেঁৗছাক রাজনৈতিক দলগুলো, এটা দেশবাসীর প্রত্যাশা। দেশকে সাবির্কভাবে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিতে হলে সমঝোতা অত্যন্ত জরুরি এবং বলার অপেক্ষা রাখে না, নিবার্চন নিয়ে রাজনৈতিক ঐক্য প্রতিষ্ঠিত না হলে, নিবার্চন এগিয়ে আসার সঙ্গে সঙ্গে মানুষও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে উঠবে, যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। সাধারণ মানুষের আতঙ্ক দূর করতে রাজনৈতিক সদিচ্ছা যে অত্যন্ত জরুরি, তা নিশ্চিত করেই বলা যায়। সঙ্গত কারণেই অবাধ, সুষ্ঠু ও সবর্জনগ্রাহ্য নিবার্চন অনুষ্ঠিত হবেÑ এমন বিষয়কে সামনে রেখে দ্রæত রাজনৈতিক ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হোকÑ এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<20691 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1