বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

তফসিল ঘোষণা

অংশগ্রহণমূলক নিবার্চনই প্রত্যাশিত
নতুনধারা
  ১০ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

চলতি বছরের ২৩ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠানের দিন ধাযর্ করে একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের তফসিল ঘোষণা করেছেন প্রধান নিবার্চন কমিশনার (সিইসি)। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশ্যে দেয়া এক ভাষণে তিনি এ নিবার্চনী তফসিল ঘোষণা করেন। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ১৯ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই ২২ নভেম্বর। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ২৯ নভেম্বর। এর ২৪ দিন পর ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে ২৩ ডিসেম্বর। সিইসি দেশের সব রাজনৈতিক দলকে নিবার্চনে অংশগ্রহণ করার আহŸান জানিয়ে অনুরোধ করেছেন, তাদের মধ্যে কোনো বিষয়ে মতানৈক্য বা মতবিরোধ থাকলে তা যেন রাজনৈতিকভাবে মীমাংসার উদ্যোগ নেয়া হয়। পাশাপাশি দলগুলোকে একে অন্যের প্রতি সহনশীল, সম্মানজনক ও রাজনীতিসুলভ আচরণ করারও অনুরোধ জানিয়েছেন। তফসিল ঘোষণার মধ্যদিয়ে একাদশ জাতীয় সংসদের নিবার্চন কবে অনুষ্ঠিত হবে, এমন জল্পনা-কল্পনারও অবসান ঘটল।

বলার অপেক্ষা রাখে না, বেশ কিছুদিন আগে থেকেই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নিবার্চনী আমেজ বিরাজমান। আর তফসিল ঘোষণা হওয়ায় গতকাল থেকেই নিবার্চনের কাউনডাউন শুরু হয়েছে। যদিও ১ মাস ১৩ দিন পর যে নিবার্চনটি অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, তা শেষ পযর্ন্ত কেমন পরিবেশে এবং কীভাবে অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে অবশ্য দুশ্চিন্তা রয়েছে অনেকের মধ্যে। বিশেষত জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের সঙ্গে সরকারের দুই দফা আনুষ্ঠানিক সংলাপে ঐক্যফ্রন্ট সন্তুষ্ট হতে না পারায় এই দুশ্চিন্তা দেখা দিয়েছে। এটা ঠিক, অন্য দল অংশ নিলেও ঐক্যফ্রন্ট নিবার্চনে অংশগ্রহণ না করলে নিবার্চনটি যথাথর্ অংশগ্রহণমূলক হবে না। শুধু তাই নয়, সে ক্ষেত্রে দেশে বিরাজমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার অবসান ঘটবে না। দেশের মানুষ শান্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চায়। মানুষের সেই আকাক্সক্ষা বিবেচনায় নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টসহ সব রাজনৈতিক দল নিবার্চনে অংশ নেবে এটাই প্রত্যাশা।

উল্লেখ্য, সংবিধান অনুযায়ী ২০১৯ সালের ২৮ জানুয়ারির মধ্যে একাদশ সংসদ নিবার্চন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ফলে নিবার্চনী তফসিল ঘোষণা যে সঠিক সময়ের মধ্যেই করা হয়েছে, সে বিষয়ে দ্বিমতের কোনো সুযোগ নেই। আর তফসিল ঘোষণার ভেতর দিয়ে দেশে একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের আনুষ্ঠানিকতাও শুরু হয়ে গেছে। আমরা মনে করি, এখন উভয় পক্ষেরই স্মরণে রাখা কতর্ব্য যে, নিবার্চন যে কোনো দেশেরই গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অংশ। সব দলের অংশগ্রহণে নিবার্চন শুধু যে গ্রহণযোগ্যতা পায় তা নয়, গণতন্ত্রের সৌন্দযর্ও বিকশিত হয়। জনসাধারণের কাছে রাজনৈতিক নেতাদের যাওয়ার বড় উৎসবও নিবার্চনকে। আর এই গণতান্ত্রিক অভিযাত্রায় অংশ নেয়া দেশের সব রাজনৈতিক দলের দায়িত্ব হিসেবেই বিবেচিত হতে পারে।

অন্যদিকে দেশের বিদ্যমান বাস্তবতায় অংশগ্রহণমূলক এবং সবর্জনগ্রাহ্য নিবার্চন অনুষ্ঠানেরও বিকল্প নেই। এ জন্য উভয়পক্ষেরই দায়িত্ব আছে। সরকার পক্ষের উচিত হবে, ঐক্যফ্রন্টসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত সংলাপের ভিত্তিতে নিবার্চন অনুষ্ঠানে নিবার্চন কমিশনকে এমনভাবে সহায়তা প্রদান করা, যাতে নিবার্চনে সরকারের ভ‚মিকা প্রশ্নবিদ্ধ না হয়। সংলাপে এখনো যেসব বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়নি, সেগুলোর ব্যাপারে সরকার ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হতেই পারে। দুই পক্ষের মধ্যে যে সৌহাদর্পূণর্ পরিবেশে সংলাপ আমরা লক্ষ্য করেছি, এই পরিবেশ বজায় থাকলে তা সুষ্ঠু নিবার্চনের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূণর্ ভ‚মিকা পালন করবে। সরকার ও বিরোধী পক্ষ উভয়েই যদি পরস্পরের প্রতি ছাড় দেয়ার মানসিকতা দেখাতে পারে, তাহলে সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নিবার্চনের ক্ষেত্রে একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন দৃষ্টান্ত তৈরি করবে বৈকি।

সবোর্পরি প্রত্যাশা থাকবে, সিইসি যে আহŸান রেখেছেন- সেই আহŸানেও সাড়া দিতে হবে সব পক্ষকে। আগামী দিনগুলোয় দেশে যেন এমন কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব না ঘটে, যা দেশ ও সমাজকে অস্থিতিশীল ও সংঘাতময় করে তুলতে পারেÑ এ বিষয়ে দায়িত্বশীল থাকতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে। সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকে নিবার্চনে স্থিতিশীল পরিবেশও নিশ্চিত করতে হবে রাজনৈতিক দলগুলোকে। পাশাপাশি অংশগ্রহণমূলক ও সবর্জনগ্রাহ্য নিবার্চন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে নিবার্চন কমিশন সব ধরনের ব্যবস্থা নেবেÑ এটাই সবার প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<21700 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1