শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নিবার্চনে যাচ্ছে সব দল

গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থাকুক
নতুনধারা
  ১৩ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

দেশের উল্লেখযোগ্য সব রাজনৈতিক দল ও জোট আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে অংশ নিচ্ছে। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, ঘোষিত তফসিল বাতিল করে ভোট এক মাস পেছানোর দাবি জানিয়ে রোববার নিবার্চনে অংশ নেয়ার আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেয় বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দল এবং সরকারবিরোধী প্রধান জোট জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। অন্যদিকে ভোট পেছাতে ঐক্যফ্রন্ট, যুক্তফ্রন্ট এবং অন্য রাজনৈতিক দলের দাবি মোতাবেক ইসিও ২৩ ডিসেম্বরের পরিবতের্ এক সপ্তাহ পিছিয়ে আগামী ৩০ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণের দিন পুননিধার্রণ করেছে। আর এর মধ্যদিয়ে আপাতত দেশে একটি অংশগ্রহণমূলক নিবার্চনের আবহ তৈরি হলো। পাশাপাশি, ‘অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নিবার্চন’ নিয়ে জনমনে যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা এবং শঙ্কার পারদ ঊধ্বর্মুখী ছিল, তারও অবসান ঘটলÑ এমন ভাবনা অমূলক হতে পারে না। বলার অপেক্ষা রাখে না, গণতন্ত্র ও দেশের উন্নয়নের ধারাকে শক্তিশালী করতে অংশগ্রহণমূলক নিবার্চনের কোনো বিকল্প থাকা উচিত নয়। এখন সব রাজনৈতিক দলের সহযোগিতায় নিবার্চন কমিশন একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও সবর্জনগ্রাহ্য নিবার্চন উপহার দেবে, এটাই প্রত্যাশা।

জানা গেছে, বিএনপি নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোট, জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট, যুক্তফ্রন্ট এবং বাম গণতান্ত্রিক জোট একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনে অংশ নেয়ার ঘোষণায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সব রাজনৈতিক দলকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, জনগণের রায়ের প্রতিফলন ঘটাতে আমরা একসঙ্গে নিবার্চনে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করব। পক্ষান্তরে, ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র বিএনপি মহাসচিব মিজার্ ফকরুল ইসলাম আলমগীর সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, ভীষণ প্রতিক‚ল পরিস্থিতিতেও দেশের গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের অংশ হিসেবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট নিবার্চনে অংশগ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বলাই বাহুল্য, সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে নিবার্চন অনুষ্ঠিত হলে তাতে সৌন্দযর্ বৃদ্ধি পায়। গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রার জন্যও এটা জরুরি। নিবার্চন হলো এমন একটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে জনগণের কাছে পেঁৗছে তাদের আস্থা অজর্ন করাও সঙ্গত কারণে জরুরি।

তথ্যমতে, পুননির্ধাির্রত তফসিল অনুযায়ী চলতি মাসের ২৮ তারিখ পযর্ন্ত মনোনয়নপত্র দাখিল করা যাবে। ৮ নভেম্বর ঘোষিত তফসিলে ২৩ ডিসেম্বর ভোটগ্রহণের দিন ধাযর্ করেছিলেন সিইসি। কিন্তু নিবার্চনে যাওয়া-না যাওয়া নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতার পর বিএনপিসহ জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট সংবাদ সম্মেলন ভোটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়ায় এবং ভোট পেছানোর দাবি জানানোর কারণে, ইসি নিবার্চনী তফসিল পুননির্ধার্রণ করল। জানা গেছে, নিবার্চন পেছানোতে সরকারি দল আওয়ামী লীগেরও কোনো আপত্তি ছিল না। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এসব ঘটনা দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নিবার্চন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত ইতিবাচক।

আমরা মনে করি, শুধু নিবার্চনে অংশ নেয়ার ঘোষণার মধ্যেই রাজনৈতিক দলগুলোর দায়িত্ব শেষ হয়ে যায় না। আসন্ন নিবার্চন যাতে সবর্জনে গ্রহণযোগ্যতা অজর্ন করতে পারে সে ব্যাপারেও রাজনৈতিক দলগুলোর কতর্ব্য হওয়া দরকার নিবার্চন কমিশনকে সবোর্তভাবে সহযোগিতা অব্যাহত রাখা জরুরি। অন্যদিকে ইসিরও কতর্ব্য হওয়া দরকার, নিবার্চনে সব দলের সমান সুবিধা নিশ্চিত করা। আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, নিবার্চনে যে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরির কথা বারবার বলা হয়ে থাকে, নিবার্চন কমিশন তাদের ক্ষমতার সবটুকু প্রয়োগের মধ্যদিয়ে তা নিশ্চিত করবে। জনগণ যাতে উৎসবমুখর পরিবেশ, সম্পূণর্ ভীতিহীন ও শঙ্কামুক্তভাবে তাদের পছন্দের প্রাথীের্ক বেছে নিতে পারে তার সুব্যবস্থা করাও অত্যন্ত জরুরি। মনে রাখা দরকার, ভোটাধিকার জনগণের মৌলিক এবং সাংবিধানিক অধিকার। নিবার্চন এলেই জনগণের মধ্যে ভীতি তৈরি হবে, এটা কাম্য নয়। আমরা মনে করি, রাজনৈতিক দলগুলোই পারে জনগণের সব শঙ্কা দূর করতে। অতীতে নিবার্চন নিয়ে সহিংস ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে হয়েছে দেশবাসীকে। সুতরাং নিবার্চন নিয়ে দেশে যাতে আর কোনো ধরনের সহিংস ঘটনার পুনরাবৃত্তি না ঘটে, তার জন্য প্রশাসনেরও কতর্ব্য হওয়া দরকার কঠোর অবস্থানে থাকা।

সবোর্পরি সব রাজনৈতিক দলকে বলতে চাই, আসন্ন নিবার্চন যাতে অথর্বহ হয়ে ওঠে, দেশের উন্নয়ন ও গণতন্ত্র যাতে আরও একধাপ এগিয়ে যায়Ñ সে ব্যাপারে দায়িত্বশীল হতে হবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন ‘অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নিবার্চনের ক্ষেত্রে মাইলফলক’ হিসেবে প্রতিষ্ঠার জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সদিচ্ছার প্রতিফলন ঘটুকÑ এটাই জনগণ প্রত্যাশা করে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<22206 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1