শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

অবাধ সুষ্ঠু নিবার্চনে উন্নয়ন ও পরিবতর্ন সম্ভব

আমাদের দেশে নিবার্চন এলে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের নিবার্চনমুখী দৌড়ঝঁাপ শুরু হয়ে যায়। বড় বড় দলের নমিনেশন পেতে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করতেও তারা পিছু হটেন না। নিবার্চনে একবার জয়ী হতে পারলেই দুই হাতে আয় করা সম্ভব। যাদের ন্যূনতম রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, দূরদশির্তা, দেশপ্রেম ও মাতৃভূমির প্রতি দায়িত্ব¡শীলতার পরিচয় নেই, এমন ধরনের মানুষকেও নিবার্চনের প্রাথীর্ হতে দেখা যায়। যাদের হাতে অবৈধ টাকার পাহাড়, তারাই অথর্ দিয়ে বড় বড় দলের নীতিনিধার্রকদের বশ করে দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন।
ড. ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ
  ১৫ নভেম্বর ২০১৮, ০০:০০

ভোট নাগরিকের মৌলিক অধিকার। ভোটের মাধ্যমে ক্ষমতার পরিবর্তন হয়। এ পরিবর্তন যেন দুনীির্তকে এগিয়ে না আনতে পারে। অব্যাহত উন্নয়নের শৃঙ্খলা ধরে রাখতে হবে। উন্নয়নে অথর্ দুনীির্তর মাধ্যমে যাতে অন্যের পকেটে ঢুকতে না পারে, সে দায়িত্ব¡ কঠিনভাবে পালন করতে হবে জনগণকে। যুগ যুগ ধরে যারা দুনীির্তর মাধ্যমে পকেট ভতির্ করছে, আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়েছে, এ জাতীয় প্রাথীের্দর বয়কট করতে হবে। তাদের সম্পকের্ সজাগ থাকতে হবে রাজনৈতিক দল এবং জনগণকে। আগামী জাতীয় নিবার্চনে যেসব দল অংশগ্রহণ করবে, তারা যেন সৎ, যোগ্য, আদর্শবান ও দেশপ্রেমিক লোককে মনোনয়ন দেয়। অথর্ আর কালো টাকার দাপটে যেন চোরাকারবারি, মাদক পাচারকারী, দুনীির্তগ্রস্ত কেউ যেন প্রাথীর্ হতে না পারে। সে বিষয়ে রাজনৈতিক দল নিবার্চন কমিশনকে কঠোর হতে হবে। অব্যাহত উন্নয়নের ধারা ধরে রাখতে হলে অবশ্যই গতিশীল, দায়িত্ব¡শীল দেশপ্রেমিক সরকার দরকার। যাদের পক্ষে উন্নয়ন এবং দুনীির্ত নিয়ন্ত্রণ সম্ভব তাদেরই ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠা করা জনগণের দায়িত্ব। কোনো ধরনের দেশি-বিদেশি ষড়যন্ত্র আর চক্রান্ত যেন দেশের উন্নয়নের গতিকে থামিয়ে দিতে না পারে, সে দায়িত্ব¡ জনগণকে সঠিকভাবে পালন করতে হবে। উন্নয়ন দেশবিরোধী সব চক্রান্ত ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে একাদশ জাতীয় নিবার্চনকে চ্যালঞ্জে হিসেবে নিয়ে জাতিকে সফল হতে হবে। এ সফলতার মাধ্যমে আগামী দিনের জাতীয় সমস্যা কোটি কোটি শিক্ষিত বেকার জনগোষ্ঠী যাতে কমর্সংস্থান পায়, সে চিন্তা এখন থেকে করতে হবে। প্রতি বছর সবগুলো বাজেটে অধিকহারে কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে। ইতোমধ্যেই সারা পৃথিবীতে শ্রম রপ্তানির পথ ছোট হয়ে আসছে। হু হু করে পৃথিবীব্যাপী কর্মসংস্থান সংকুচিত হয়ে আসছে। এসব চিন্তা পরকিল্পনায় এনে আগামী নিবাির্চত সরকারকে কমর্সংস্থানের অধিক গুরুত্ব দিয়ে বাস্তবায়ন করতে হবে। শ্রমশক্তি বিদেশে রপ্তানি না করে নিজ দেশেই আত্মমর্যাদার সঙ্গে শিক্ষিত যুবশক্তিকে কাজে লাগাতে পারলইে দেশ আর কারো মুখাপেক্ষী হবে না। স্বাধীন বাংলাদেশ স্বাধীনভাবে মাথা উঁচু করে বিশ্বকে দেখাবে।

নানা ধরনের অনিশ্চয়তা ও আশঙ্কা থাকা সত্তে¡ও আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চনের আমেজ পাওয়া যাচ্ছে। অনেক হতাশার মধ্যেও জাতির সামনে এক উজ্জ্বল আলোর রেখা দেখা যাচ্ছে। এরই মধ্যে বাতাসে নানা গুঞ্জনও ভেসে বেড়াচ্ছে। জনগণ সেসব গুঞ্জনে কান দিতে চান না। হতাশার কোনো কারণ দেশের শান্তিপ্রিয় জনগণ দেখতে চান না, বুঝতে চান না। চলতি বছরের শেষ দিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নিবার্চন অনুষ্ঠিত হতে পারে। কিন্তু শুধুই সংবিধানের দোহাই এবং নিবার্চনের জন্য নিবার্চন হলে ভালো হবে কি? সাথর্ক নিবার্চনের জন্য দরকার সব দলের ও সব মতের লোকের অংশগ্রহণ। এ ব্যাপারে নিবার্চন কমিশনের ভূমিকাই মুখ্য, তবে সরকারকে অবশ্যই সহায়ক হতে হবে। মেয়াদপূণর্ হওয়ার পর নতুন মেয়াদে নতুন সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তরের জন্য নিবার্চন অপরিহাযর্। কিন্তু সেই নিবার্চন কীভাবে হবে? কারা করবে? নিবার্চন সুষ্ঠু হওয়ার নিশ্চয়তা থাকবে কি ? না আগামী নিবার্চনও ২০১৪ সালের মতো একতরফা হবে? এসব প্রশ্নের ‘হ্যঁা’ বা ‘না’ উত্তর দেয়ার সময় এখনো আসেনি। সব দলকে নিবার্চনে আনতে প্রথমে নিবার্চন কমিশনকে নিবার্চনের পরিবেশ তৈরি করতে হবে। সব নাগরিক যেন তাদের ভোট তাদের পছন্দের ব্যক্তিকে স্বাধীনভাবে দিতে পারে, নিবার্চন কমিশনকে যথাযথভাবে সেই দায়িত্ব¡ পালন করতে হবে। তাহলেই দেশে সুখ-শান্তি ফিরে আসবে এবং জনগণ তাদের প্রাপ্য অধিকার ভোগ করতে পারবে। একটি সুষ্ঠু ও অবাধ নিবার্চনের জন্য এই মুহূের্ত নিবার্চন কমিশনের দায়িত্ব¡ শান্তিপূণর্ রাজনৈতিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনা। নিবার্চনের জন্য আবশ্যিক শতর্, সবার জন্য মাঠ সমতল করা। এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষপে না নিলে শুধু মতবিনিময় সভা করে পরিস্থিতির উন্নতি হবে না। নিবার্চন কমিশনকে আগে থেকেই বাস্তবসম্মত কমর্পরিকল্পনা করে সুষ্ঠু ও সুস্থ রাজনৈতিক পরিবেশের বিষয়টিকে নিশ্চিত করতে হবে। আলোচনার মাধ্যমে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যকার আস্থার সংকট দূর করতে হবে। অন্যান্য দলকেও সহযোগিতা করার জন্য এগিয়ে আসতে হবে। তবে জনগণ পছন্দসই প্রাথীের্ক ভোট দেবে, সেই ক্ষেত্রটি তৈরি করার প্রধান দায়িত্ব¡ কিন্তু নিবার্চন কমিশনেরই।

গণতন্ত্রের পূবর্শতর্ সুষ্ঠু নিবার্চন। একটি সুষ্ঠু, সুন্দর ও নিরপেক্ষ নিবার্চন জাতিকে একটি সুন্দর সংসদ উপহার দিতে পারে। সব দল অংশ নিলে নিবার্চন নিয়ে প্রশ্ন উঠবে না। এ ক্ষেত্রের সরকারি দলের ভূমকিা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর বাইরে সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে সবর্জনগ্রাহ্য মতগুলো নিয়ে নিবার্চনের ব্যবস্থা করতে হবে নিবার্চন কমিশনকে। আগামী জাতীয় সংসদ নিবার্চন যদি বিতকির্ত হয়, তাহলে দেশ ভয়াবহ পরিণতির মুখে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা দেশবাসীর। মনে রাখতে হবে, রাজনীতিকদের কোনো অবিবেচক সিদ্ধান্ত বা ভুলের কারণে যদি দেশের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা বিপন্ন হয়ে পড়ে, নিবার্চন ভÐুল হয়ে যায়, তাহলে ইতিহাস কিন্তু ক্ষমা করবে না। গণতন্ত্র একটি রাষ্ট্রের প্রাণশক্তি ও উন্নয়নের পূবর্শতর্। বতর্মান সরকার সে গণতন্ত্রের প্রাণ বঁাচিয়ে রেখেই দেশের উন্নয়ন ঘটাচ্ছে। আর গণতন্ত্র মানে আত্মমযার্দা, ন্যায়বিচার, সুশাসন, মানবিক উন্নয়ন অথার্ৎ একে অপরের সঙ্গে সৌহাদর্্য, স¤প্রীতির বন্ধন তৈরি করা। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, আজও সেসব গণতান্ত্রিক চেতনা পুরোপুরি প্রতিষ্ঠিত হয়নি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে নিবার্চনের মাধ্যমে সরকার পরবিতর্ন হয়। নিবার্চনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে। আওয়ামী লীগ ও বিএনপিসহ বাংলাদেশে যে কয়টি রাজনৈতিক দল রয়েছে, বিশেষ করে বড় দুই দলের নেতারা যোগ্য ও অভিজ্ঞ তারা এ দেশেরই সন্তান এবং এ দেশের মাটিতেই জন্ম। এমনকি তাদের মধ্যে অনেকেই মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করে। এ দেশের মাটি ও মানুষের কাছে তাদের দায়বদ্ধতা রয়েছে। যদি তাই হয়ে থাকে, তাহলে কোনো কারণে যদি বড় দুই দলের মধ্যে নিবার্চনকে কেন্দ্র করে মতভেদ সৃষ্টি হয়, তাহলে নিজেরা বসে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করুন। রাজনীতিতে বিদেশিদের নাক গলানোর সুযোগ করে দেয়া মোটেই ঠিক নয়। তবে আশা করি, এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটবে না।

দেশ এখন উন্নয়নের পথে এগোচ্ছে। শহর, গ্রাম, স্কুল, কলজে, বিশ্ববিদ্যালয় পযর্ন্ত উন্নয়নের ছেঁায়া দেখা যাচ্ছে। উন্নয়ন রাষ্ট্রীয়ভাবে নিজস্ব গতিতে চলছে। বলতে গেলে উন্নয়নের একটা গতি শুরু হয়েছে। এ গতিকে কেউ ইচ্ছে করে থামাতে পারবে না। নতুন প্রজন্ম উন্নয়ন অগ্রগতিতে বিশ্বাসী। দৃশ্যমান উন্নয়ন অগ্রগতিকে তারা সাধুবাদ জানাচ্ছে। অফিস-আদালতে আগের মতো যুগ যুগ ধরে ফাইল আটকে থাকে না। যে কোনো ঘটনা দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে তদন্ত কমিটির রিপোটের্ বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থা অনেকটা নিয়মের মধ্যে এসেছে। ব্যবসা-বাণিজ্য সব প্রতিষ্ঠানের ইচ্ছেমাফিক ভোগান্তির দিন প্রায় শেষ। অন্যায়, অবিচার, জুলুম করলেই সঙ্গে সঙ্গে এখন তাদের বিচারের সম্মুখীন হতে হচ্ছে। যতই প্রভাবশালী আর ক্ষমতাধর হোক না কেন, বতর্মান সরকার নিজ দলের হলেও এ ক্ষেত্রে ছাড় দিচ্ছে না। এতে এ প্রজন্মের ভোটারের কাছে সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়ছে। উন্নয়ন এবং শৃঙ্খলায় দেশ যেভাবে সামনের দিকে এগোচ্ছে, এতে সরকারের সাফল্য ও প্রশংসা জনগণের কাছে বাড়ছে। শহর থেকে গ্রাম পযর্ন্ত তথ্যপ্রযুক্তি এবং কারিগরি শিক্ষার স¤প্রসারণে শিক্ষাথীর্রা ঘরে বসেই সরকারের সব ধরনের তথ্য বিজ্ঞপ্তি হাতের নাগালেই পেয়ে যাচ্ছে। ছাত্র আন্দোলন, রাজনৈতিক হানাহানি ও সহিংস কমর্সূচি নিয়ন্ত্রণে রাখছে। জনগণ তাদের কর্মযজ্ঞ চালিয়ে দিনযাপন করতে বাধা পাচ্ছে না। নিদ্বির্ধায় অসংকোচে জনগণের পথচলা নিবির্ঘœ হয়েছে। নিদির্ষ্ট শ্রেণি-পেশার মানুষ ছাড়া অন্য জনগণ প্রশাসন ও পুলিশের অতটা হয়রানির শিকার হচ্ছেন না। দোকান, মাকের্ট প্রতিষ্ঠানে এক সময় সন্ত্রাসী চঁাদাবাজদের ভয়ে ব্যবসা করতে পারতেন না। এখন সে ধরনের পরিবেশ খুব কমই পাওয়া যাবে। ব্যবসার সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত, তাদের বক্তব্য, তারা ভালোভাবে ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। ইচ্ছেমতো স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় মাসের পর মাস অবরোধ রেখে শিক্ষা কাযর্ক্রম বন্ধ রেখে শিক্ষাজীবন ধ্বংস করার কমর্সূচি এখন আর কেউ করতে পারে না। রাজনীতির নামে ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে আছে। সরকারি-বেসরকারি সবগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এখন তাদের নিজস্ব নিয়মনীতিতে সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালিত হচ্ছে। সন্ত্রাসী চঁাদাবাজ মাদক বেচাবিক্রি প্রায় নিয়ন্ত্রণের মধ্যে আছে। সরকারের কঠোর পদক্ষপে এবং আন্তরিকতার কারণে এসব সম্ভব হচ্ছে।

আমাদের দেশে নিবার্চন এলে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের নিবার্চনমুখী দৌড়ঝঁাপ শুরু হয়ে যায়। বড় বড় দলের নমিনেশন পেতে কোটি কোটি টাকা লেনদেন করতেও তারা পিছু হটেন না। নিবার্চনে একবার জয়ী হতে পারলেই দুই হাতে আয় করা সম্ভব। যাদের ন্যূনতম রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা, দূরদশির্তা, দেশপ্রেম ও মাতৃভূমির প্রতি দায়িত্ব¡শীলতার পরিচয় নেই, এমন ধরনের মানুষকেও নিবার্চনের প্রাথীর্ হতে দেখা যায়। যাদের হাতে অবৈধ টাকার পাহাড়, তারাই অথর্ দিয়ে বড় বড় দলের নীতিনিধার্রকদের বশ করে দলীয় মনোনয়ন পাচ্ছেন।

অতএব, একাদশ জাতীয় নিবার্চন দেশের স্বাধীনতার সাবের্ভৗমত্ব ও জনগণের জন্য অতীব গুরুত্বপূণ একটি নিবার্চন। অতীতের যে কোনো নিবার্চনের চেয়ে এ নিবার্চন অধিক গুরুত্ব বহন করে। তাই দেশ ও জনগণ সরকারের স্বাথের্ই দুনীির্তবাজ, কালো টাকার মালিক অসৎ শ্রেণির লোক ও দলকে বয়কট করার শপথ এখন থেকেই গ্রহণ করতে হবে। তাহলেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। দুনীির্তর শক্তি দুবর্ল হবে এবং মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারবে না। এ দায়িত্ব¡ সম্মিলিতভাবে দেশপ্রেমিক সব শ্রেণি -পেশার মানুষকে পালন করতে এগিয়ে আসতে হবে। তবেই নিবার্চন ও উন্নয়ন একই সঙ্গে জাতির জন্য সফলতা বয়ে আনবে।

ড. ফোরকান উদ্দিন আহাম্মদ: গবেষক ও কলামিস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<22542 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1