বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১
পাঠক মত

গ্রামীণ উন্নয়নই সাধারণ মানুষের সাবির্ক উন্নয়ন

নতুনধারা
  ১৫ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

দেশে শহরমুখী জনস্রোত ঠেকানোর কোনো উদ্যোগ নেই। ফলে প্রতিনিয়ত গ্রামাঞ্চলের খেটে খাওয়া মানুষ কাজের সন্ধানে শহরমুখী হচ্ছে। শহর ও শহরতলীতে জনস্রোত বাড়ছে। দেখা দিচ্ছে নানান ধরনের সমস্যা। জনসাধারণের দুভোের্গর শেষ নেই। সারাদেশের আয়তন হচ্ছে ১ লাখ ৪৭ হাজার বগির্কলোমিটারের বেশি এবং জনসংখ্যা ১৫ কোটি ৬২ লাখ। এর বিপরীতে ঢাকা মহানগরীর আয়তন মাত্র ৩৬০ বগির্কলোমিটার এবং জনসংখ্যা ১ কোটি ৬৪ লাখ। দেশে জনসংখ্যা বাড়ছে ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ হারে আর ঢাকা মহানগরীর জনসংখ্যা বাড়ছে ৪ দশমিক ১৬ শতাংশ হারে। আধুনিক মানুষ শহরমুখী। তবে বিশ্বের আর কোন দেশের একটি মাত্র শহরে মোট জনসংখ্যার প্রায় দশ ভাগ মানুষ বাস করে কিনা সেটা গবেষণার বিষয় হতে পারে।

এমন নয় যে, বাংলাদেশে শহর রয়েছে শুধু একটি। দেশে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, খুলনার মতো বড় বড় শহর রয়েছে। সিলেট, বরিশাল, বগুড়া, ময়মনসিংহ প্রভৃতির মতো অনেক সম্ভাবনাময় শহর রয়েছে। তারপরও মানুষ কেন ঢাকা শহরে ছুটে আসছে? স্রেফ শহুরে জীবনের টানে যে মানুষ ঢাকায় আসছে তা নয়। ঢাকা মহানগরীতে ১৮ লাখ গামের্ন্ট কমীর্, ১০ লাখ নিমার্ণ শ্রমিক ও পঁাচ লাখ রিকশাচালক রয়েছে। এরা নিশ্চিতভাবেই শহুরে জীবনযাপন করতে পারছে না। শুধু জীবিকার টানেই বিপুলসংখ্যক মানুষ ঢাকায় আসতে বাধ্য হচ্ছে। জীবন-জীবিকার মূল সংস্থানগুলোকে ঢাকার গÐির মধ্যে আবদ্ধ করে রাখা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, শিক্ষা, চিকিৎসা, প্রশাসনিক কমর্কা- প্রভৃতিও ঢাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ। পৃথিবীর উন্নত দেশগুলোতে বাণিজ্যিক নগরী, প্রশাসনিক নগর ভিন্ন ভিন্ন হয়। বাংলাদেশ এর ব্যতিক্রম।

এককালে মানুষ কাজের সন্ধানে স্থানান্তার ঘুরে বেড়াত। যেখানে পেত কাজ সেখানে বসবাস গড়ে তুলতো। বিশেষ করে বাসস্থান গড়ে উঠতো নদ-নদী, হাওর-বঁাওড় ছাড়াও কৃষি উৎপাদনশীল স্থানগুলোতে। অনেক সময় প্রাকৃতিক দুযোের্গ স্থান পরিবতর্ন করতে হতো। সময়ের ব্যবধানে চাকরি জীবিকার সন্ধানে মানুষ তার বসবাসের স্থান পরিবতর্ন করতো। যার স্থান পরিবতের্নর কারণ অব্যাহত রয়েছে। এখানো যেখানে কাজ সেখানে মানুষের বসবাস বৃদ্ধি পাচ্ছে

অনেকের মতে গ্রামাঞ্চল থেকে শহরমুখী জনস্রোত ঠেকাতে না পারলে গ্রামাঞ্চলে জন সংকট দেখা দিবে। গ্রামীণ কমর্কাÐে বিঘœনতার সৃষ্টি হবে। উৎপাদন কমর্কাÐ ব্যাহত হবে। গ্রামাঞ্চলে যে কোনো কাজে শ্রমিকের অভাবে কৃষি ও পল্লী শিল্পের লোকজনের অভাব দেখা দিবে। গ্রামাঞ্চলে উৎপাদন ক্ষমতা হ্রাস পাবে। অথৈর্নতি কমর্কাÐে মন্দা ভাব দেখা দিবে। যা বতর্মানে গ্রামাঞ্চলে উপলব্ধি করা যাচ্ছে। গ্রামীণ অবকাঠামো গড়ে তুলতে প্রয়োজন গ্রামাঞ্চলে গ্রামীণ শিল্প-কারখানার সাবির্ক উন্নয়ন। গ্রামে ক্ষুদ্র শিল্প-কারখানা গড়ে উঠলে গ্রামাঞ্চল থেকে শহরমুখী জনস্রোত হ্রাস পাবে। গ্রামীণ শিল্প কারখানায় কাজের সংস্থান হবে। গরিব-নিঃস্ব কাজের তাগিদে শহরের দিকে বেরুবে না। গ্রামে গড়ে উঠবে মানুষের কমর্সংস্থান।

বিশ্বের প্রতিটি উন্নয়নশীল দেশে পল্ল­ী অঞ্চলে কৃষি, ক্ষুদ্র শিল্পের সাবির্ক উন্নয়নের ফলে দেশের উন্নয়নে সক্ষম হয়েছে। আমাদের দেশে গ্রামীণ শিল্পের উন্নয়নে স্বাথর্কতা খুব কম থাকায় গ্রামে গরিব মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধির ফল হিসাবে শহরমুখী মানুষের স্রোত ঠেকানো সম্ভব হচ্ছে না। তাই গ্রামীণ উন্নয়ন হবে সাধারণ মানুষের সাবির্ক উন্নয়ন।

বিশেষজ্ঞদের মতে দেশের এক-তৃতীয়াংশ গরিব মানুষের সাবির্ক জীবিকা নিবাের্হর পথকে সুগম করতে প্রয়োজন গ্রামাঞ্চলের শিল্পের বিকাশ সাধন করা। গ্রামাঞ্চলে কুটির শিল্পসহ কৃষিজাত শিল্পের কল-কারখানা ¯’াপন করে বেকার মানুষের কমর্কাÐের ব্যবস্থাকল্পে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া খুবই জরুরিী দেশের সাবির্ক উন্নয়নে গ্রামীণ উন্নয়ন স্বাথর্ক হউক। এটা সকলের কাম্য।

আবদুর রহমান চৌধুরী

ঢাকা

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<32224 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1