শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

শেখ হাসিনা: রাজনৈতিক শব্দকারিগর

রাজনৈতিক সাহিত্যচচার্র সৃজনে যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে গবেষণালব্ধ সময়োপযোগী চিন্তা ও প্রয়োগের মানসিকতা বিদ্যমান তার উল্লিখিত চিন্তনশিল্পে। চিন্তাশীল কথায় কোনো জড়তার চাপ নেই। সহজ ও সাবলীলভাবে তিনি পরম যতেœ বলছেন, ঠিক রাজনীতিকের মতো। এভাবে তিনি হয়ে ওঠেন রাজনীতিক সাহিত্যিশিল্পী। মননশীল ভাষা স্পষ্ট, সাহসী, প্রতিবাদমুখর, ব্যক্তিত্বে মহীয়ান, মনে চিরসবুজ, নেতৃত্বগুণে অসাধারণ, দৃষ্টিভঙ্গি তীক্ষè।
শাহমুব জুয়েল
  ২৪ জানুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

রাজনীতিক সাহিত্যশিল্পী শেখ হাসিনা জন্ম: ২৮ সেপ্টেম্বর, ১৯৪৭ খ্রিস্টাব্দ টুঙ্গিপাড়া, গোপালগঞ্জ। বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। পিতার স্বপ্নের উত্তরসূরী বতর্মান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। চলমান উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন। বাংলাদেশের ভাগ্যোদয়ের ক্ষেত্রে সফলতার সঙ্গেও রয়েছেন। ভেদাভেদহীন বাঙালির নেতা হিসেবে প্রশংসাও রয়েছে। দেশে-বিদেশে সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে খ্যাতি উপাধি ও নানা পুরস্কার লাভ করেছেন। যিনি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ও সম্ভাবনাকে ধারণ করে গতিশীল সুখী, সমৃদ্ধ ও উন্নত বাংলাদেশ বিনিমাের্ণ নিরলস কাজ করছেন। রাজনীতিক ও বহুপ্রতিভার মানুষটি সাহিত্যেও অন্যতম। সময়ের কোরকে এঁকেছেন স্মৃতি, সমাজ, সমস্যা, মুক্তিযুদ্ধ, প্রকৃতিপ্রেম, স্বপ্নরশ্মি, আলোরেখা, পরিবারে বেড়ে ওঠা, অথর্নীতি, রাজনীতি শিক্ষা ব্যবস্থা, রাষ্ট্র ও সমাজ সমস্যা সমাধান বিষয়ে চূড়ান্ত মনোনিবেশ রয়েছে। একজন চিরায়ত সাহিত্যশিল্পীর মতো বিষয়গুলো বোধগম্যকরণের লক্ষ্যে পেশ করেছেন।

সংগ্রামী চিন্তাচেতনা ও রাজনৈতিক দশের্নর মাধ্যমে লেখকসত্তার পরিচয় দিয়েছেনÑ গ্রন্থাদি নিম্নরূপ: শেখ মুজিব আমার পিতা, সামরিকতন্ত্র বনাম গণতন্ত্র, বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম, বিপন্ন গণতন্ত্র, দারিদ্র্য দূরীকরণ : কিছু চিন্তাভাবনা, সবুজ মাঠ পেরিয়ে, রচনাসমগ্র-১, রচনাসমগ্র-২, শেখ রাসেল পিপল এন্ড ডেমোক্রেসি, লিভিং ইন টিয়ারস, সাদা-কালো, লাঞ্ছিত মানবতা, আমরা জনগণের কথা বলতে এসেছি, ওরা টোকাই কেন, সহেনা মানবতার অবমাননা, বৃহৎ জনগোষ্ঠীর জন্য উন্নয়ন এবং নিবাির্চত প্রবন্ধ ইত্যাদি।

সাহিত্যের তথ্যবহুল শাখা প্রবন্ধ। সে শাখায় তার বিচরণ চোখে পড়ার মতো। নিবাির্চত প্রবন্ধ গ্রন্থের প্রবন্ধগুলো পাঠককে জাগ্রত ও মনপুষ্ট করতে সহায়ক ভ‚মিকা রেখে চলছে। অনজির্ত রয়ে গেছে স্বপ্নপূরণ, সবার উপরে মানুষ সত্য, শিক্ষিত জনশক্তি অথৈর্নতিক উন্নয়নের পূবর্শতর্, স্মৃতি বড় মধুর, স্মৃতি বড় বেদনার, বৃহৎ জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন, সংগ্রামে আন্দোলনে গৌরবগাথায়, ভালোবাসি মাতৃভাষা, সত্যের জয়, প্লিজ সাদাকে সাদা, কালোকে কালো বলুন প্রভৃতি।

স্বপ্নের ভেতরে ডুবে থাকা মানুষটি বাস্তবায়নের চিন্তায় উন্মুখ ছিলেন সতত। সময়ের হেঁাচটে পিছপা হননি বা পড়ে যাননি। পরম শক্তি সাহস ও উদ্যমকে পুঁজি করে বীরবেশে হেঁটেছেন ও চলছেন। আসলেই কাজের সক্ষমতা খুঁজতে সাহসই বড় বিষয়। সেটি তিনি ভালোভাবে দেখিয়েছেন । চমকে যেতে হয় কোথা থেকে একটি দেশ কোথায় নিয়ে এলেন এটি সাধারণ কথা নয়। ভঙ্গুর, জীণর্, দারিদ্র্য উদ্যমহীন অলস ও পিছিয়ে পড়া জাতিকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখাচ্ছেন এভাবে দঁাড়াতে হয়। শত উপেক্ষা এভাবে মোকাবেলা করতে হয় বিবেকবান জাতি কখনো তাকে ভুলবে না। তার সমকক্ষ কাউকে দঁাড় করাবে না। বাঙালিকে সে কথাটি স্মরণ করিয়ে দেয়া বাঞ্চনীয়Ñ সময়ের কাজ সময়ে করতে হয় নচেৎ পস্তাতে হয়। মনে করি, সময়ের নেতা হিসেবে জননেত্রী বহুধায় খ্যাত শেখ হাসিনাকে সবর্স্তরের মানুষ চিনতে পেরেছে। তিনি শুধু নেতাই নন; গবেষক, সাহিত্যানুরাগী, সেবক, অনুকরণীয় সমকালের রাজসাক্ষী। শুধু সমথর্ন দিয়েই নয়, রক্তবিন্দু দিয়ে তাকে রক্ষা করা ও দেশের কল্যাণের সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়া প্রধান ও সবর্জনীন দায়বোধ।

‘অনজির্ত রয়ে গেছে স্বপ্নপূরণ’ শৈশবের স্বপ্নময়ী কিশোরীর কথা যেখানে উল্লেখ আছে সমাজবিদ্যা ও পৌরনীতি বিষয়। একদিকে সমাজবিদ্যা, পৌরনীতি অন্যদিকে গৃহে রাজনীতির চচার্। বাসার গৃহশিক্ষক মনযোগ দিয়ে পড়াতেন। ফলাফল দিল সব বিষয় ভালো করলেও পৌরনীতিতে ভালো মাকর্ মিলেনি কারণ হিসেবে হাসতে হাসতে স্যার উল্লেখ করেছেনÑ ‘খাতায় লেখা আছে, এই মেয়ে বড় বড় নেতাদের ভাষণ অনুসরণ করে, বইয়ের সঙ্গে সম্পকর্ রাখে না।’ বেশ তো তার সে অনুপ্রেরণা নেতৃত্বগুণে ও কথনে আজ দৃশ্যমান হচ্ছে, জনমনে স¦স্তির হাসি ফুটেছে।

তদানীন্তন রাষ্ট্রপতি আইয়ুব খান সম্পকের্ বইয়ে প্রশংসার বুলি তার মননকে ব্যাহত করে । যে কারণে পরীক্ষার খাতায় তা না লিখায় খাতাসহ বাতিল হয়েছে, কিন্তু তাতে দুঃখ ছিল না। বাবার আস্বস্ততা তাকে সাহসী ও উদ্যমী করে তুললো। বাসায় যখন রাজনীতি ও ছয় দফা নিয়ে আলাপ হতো খাওয়ার ফঁাকে একটি আঙুল উঁচে যেতÑ তার মানে এক দফা, এক দাবি; স্বাধীনতা। তার বাবা গঁা গেরামের খেটে খাওয়া কুলি-মজুর-শ্রমিকদের নিয়ে ভাবতেন নিজের কথা কখনো চিন্তা করেননি। সামরিক জান্তার বিরুদ্ধে তিনি সোচ্চার ছিলেন। মমত্ববোধে জাগ্রত হয়েই-তো জাদু আঙুল তুলেছিলেন। অঙুলি নিদেের্শ সমবেত হয়েছে বাঙালি জনতা, ভেঙেছিল সামরিক জান্তার শাসনভার।

নানান জায়গায় নানাভাবে তিনি সাহস সঞ্চয় করেছেন। ১৯৬১ সালে তিনি ও তার ভাই কামালসহ চট্টগ্রাম বেড়াতে গেলে, পাহাড়ের উচ্চতা তাকে ঊধ্বর্মুখী করেছে। মাস্টারদা সুযের্সনের কাহিনী মনে অনুপ্রাণন তৈরি করে। সমুদ্রের গজর্ন উজ্জীবিত করে। ঘুরতে গিয়ে আজিজ কাকা কালুরঘাটকে দেখিয়ে বলেছিলেন। এখান থেকেই স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হবে। কিন্তু আজিজ কাকা স্বাধীনতা দেখে যেতে পারেননি। ১৯৬৯ সালে হাটের্ফল করে মারা যান। হান্নান সাহেব, জহুর চৌধুরী, মানিক চৌধুরী কেউ বেঁচে ছিল না। বারবার তাকে শুনিয়েছেন স্বাধীনতার কথা। এ দেশের মানুষ একদিন পাকিস্তানের হাত থেকে রক্ষা পাবে, স্বাধীনতা পাবে। সফলতার বীজ বুনন করা মানুষটিকে ১৫ আগস্ট, ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দ্র সপরিবার হত্যা করা হয়। প্রকাশ এ রকমÑ ‘আজ আমাদের জন্য স্বাধীনতা শব্দটাই শুধু আছে। অনজির্ত রয়ে গেছে আব্বার স্বপ্নপূরণ।’ সত্যিই ভাগ্যবিড়ম্ভিত জাতি বাঙালিকে যে পথ দেখালো স্বপ্ন শিখালো মানচিত্রের রূপরেখা দিল তাকেই কেড়ে নিল বড় নিদর্য় সময় নিমর্মতার চাদরে আবৃত হলো, শোক মাতম করবে প্রজন্মান্তর। শুধু তার উদ্যমতায় ভর করে হঁাটবে বাঙালি। যে অনুপ্রেরণায় স্বপ্নবাজের মতো রাষ্ট্রের ক্রান্তিকালীন সময়ে সৎসাহস নিয়ে হঁাটছেন সামনের দিকে। সফলতার শীষর্ভাগে পেঁৗছার পথ বেশি বাকি নেই। শুধু চোখ মেলতে যতটুকু সময়ের প্রয়োজন। হিংসা নয়, বিদ্বেষ নয়, সুযোগ দিলেই এগিয়ে স্বপ্নের পাহাড় বেয়ে দূরদেশের চোখের কোটরে পৌঁছবে। তারা তো চমকে যাচ্ছে কী করে এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। আমরা বলি বঙ্গকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা যার নাম তিনিই স্বপ্নের বৈতরণীর আলোকবতির্কা।

‘সবার উপরে মানুষ সত্য’ সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ। চÐীদাসের ভাষ্যকে প্রাবন্ধিক চিন্তায় মানুষের রূপবৈচিত্র্য ও বহুগামিতা তুলে ধরেন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নানা স্তরে শ্রেণিভেদে বসবাস করছে মানুষ। মানুষই মানুষের কাছে মুক্তি খুঁজছে। যুদ্ধ বিগ্রহ, প্রাকৃতিক দুযোর্গ, বিপযর্য়, সামাজিক অনাচার প্রতিবন্ধকতা দিনদিন বেড়ে চলছে। রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস কেড়ে নিচ্ছে দেশদরদী নেতাদের। আমাদের দেশে ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়ার পর ২১ আগস্ট জননেত্রী শেখ হাসিনাও ববোর্রচিত হামলার শিকার হন। মানুষ হয়ে মানুষের ওপর হামলা ১৯৭১ খ্রিস্টাব্দ নিস্তব্ধ রাতে বাঙালির ওপর আক্রমণ, মানবাধিকার লঙ্ঘন, মুসলিম রাষ্ট্রে মুসলিম নারীদের ওপর ধষর্ণ ও নিযার্তন। এমনকি বাংলাদেশে ইসলাম ও বিসমিল্লাহ নিয়ে অপপ্রচার। মানবের এ দ্বৈতনীতি মেনে নিতে পারেননি। সঠিক বোধদ্বয়ের কথা চিন্তা করেছেন।

যুবসমাজ দেশের ভবিষৎ নিমার্তা। তারাই দেশের গতিপ্রবাহ সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু তাদের মধ্যে কিছু প্রবণতা থাকে তা হলোÑ ড্রাগ, হেরোইন, গঁাজা, ইয়াবা, ভায়োলেন্স বেকারত্বের ভয়াবহতা চরমভাবে তাদের দ্বিধাগ্রস্ত ও দিকহারা করে। এসব হতাশাব্যঞ্জক নেশাগ্রস্ত জীবন থেকে বঁাচাতে পারলে বড় ধরনের পরিবতর্ন সম্ভব। সে পরিবতের্নর জন্য প্রবন্ধে ভালোভাবে তুলে ধরেছেন এবং রাষ্ট্রীয় শাসনভার গ্রহণের পর এসব ক্ষেত্রে কড়া হাতে সেগুলোকে মোকাবেলা করেছেন। তার বড় চেলেঞ্জ মাদক, ইভটিজিং ও জঙ্গিবাদ। উত্তরণমুখী চিন্তা, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সুখী ও সমৃদ্ধ এবং উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তোলা। ইতোমধ্যে মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। সবর্জন শ্রদ্ধেয় মানুষটির পাশে বারবার দঁাড়ানো নৈতিক দায়িত্ব। এতে লাভবান হবে প্রজন্মান্তর।

স¤প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রাথমিক শিক্ষায় ব্যাপক পরিবতর্ন আনয়ন করেছেন। ৪০ হাজার প্রাথমিক স্কুল সরকারিকরণ, বেতনবৈষম্য দূরীকরণ, ভবন নিমার্ণ, টিফিন ব্যবস্থা চালুকরণ। উপজেলাভিত্তিক মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিক ও স্নাতক প্রতিষ্ঠান সরকারি করেছেন। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তকরণ বাকি প্রতিষ্ঠানগুলো এমপিওভুক্তকরণের জন্য তালিকা গ্রহণ করা হয়েছে, এলাকাভিত্তিক যাচাই-বাচাইয়ের মাধ্যমে এমপিওভুক্তকরণ কাযর্ক্রম চালু হলে শিক্ষাপ্রসারে ব্যাপক পরিবতর্ন আসবে। নন-এমপিওভুক্ত শিক্ষক কমর্চারীরা ইতোমধ্যে তাদের দাবিগুলো উপস্থাপন করেছেন। আশা করি, মাননীয় নেত্রী পরবতীর্ সরকার গঠনের পর বিষয়টি গুরুত্ব দেবেন। শিক্ষা বিস্তারে আইসিটি শেখ রাসেল ল্যাব স্থাপন সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত। যা সবর্স্তরের মানুষ সুবিধা পাচ্ছে ও পাবে। প্রতিটি দপ্তরে ডিজিটাল পদ্ধতিতে জনসেবামূলক কাযর্ক্রম পরিচালিত হচ্ছেÑ যা উন্নতরাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার যথাযথ উদ্যোগ।

তিনি প্রবন্ধে গড্ডালিকা শিক্ষার চেয়ে কারিগরি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। শিল্পায়ন ও কৃষি আধুনিকরণের ক্ষেত্রে বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি শিক্ষা প্রযুক্তি শিক্ষাকে গুরুত্ব দিয়েছেন। ১৯৯৪ খ্রিস্টাব্দে বিরোধীদলীয় নেতা হিসেবে থাকলেও সরকার গঠনের পর থেকে সে গবেষণাকে কাজে লাগিয়ে বিশ্ব প্রতিযোগিতায় দেশকে এগিয়ে নিতে নিরলস কাজ করছেন। মাঝে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলেও ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের পর থেকে অদ্যবদি শিক্ষাবান্ধব ও অথর্নীতিবান্ধব জনশক্তি নিমাের্ণ নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। তিনি মনে করেছেনÑ“অথৈর্নতিক উন্নয়ন ও দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রশ্নে বাংলাদেশের সাম্প্রতিক ব্যথর্তা আমাদের অনেকের মনেই স্থির বিশ্বাস জন্মেছে যে, শিক্ষাহীন নিরক্ষর জাতিকে নিয়ে আমরা বেশিদূর অগ্রসর হতে পারব না। শিল্পায়ন, কৃষি আধুনিকীকরণ, বৈজ্ঞানিক ও কারিগরি প্রযুক্তি আহরণ ও প্রয়োগ, রপ্তানি বৃদ্ধি, কমর্সংস্থান ও বেকারত্ব দূরীকরণÑ বস্তুত, জাতিগঠন ও অথৈর্নতিক প্রবৃদ্ধি দ্রæততর করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিটি বিষয়ে আমাদের বিশাল নিরক্ষর জনসংখ্যা ও শিক্ষার নিম্নমান একটা প্রতিবন্ধক হিসেবে দেখা দিয়েছে।” উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশ চীন ও পাশ্বর্বতীর্ দেশে ভারতের শিক্ষাব্যবস্থা ও অগ্রসরমান অবস্থা তাকে তাড়িত করেছে।

শিক্ষা শুধু পাঠগ্রহণই নয়। তিনি গুরুত্ব দিয়েছেন সৃজনশীল শিক্ষার প্রতি। লেখাপড়ার পাশাপাশি শিল্প সংস্কৃতি, খেলাধুলা এবং কারিগরি শিক্ষা বতর্মানে প্রযুক্তি শিক্ষা সহায়ক শিক্ষা হিসেবে গুরুত্ব বহন করছে। এ শিক্ষার মাধ্যমে কোমলমতি শিক্ষাথীর্র মাঝে শারীরিক ও মানসিক উৎকষর্ সাধিত হয়। এতেই সীমাবদ্ধ নয়, সঙ্গে সঙ্গে মেধার মূল্যায়ন করাÑ নচেৎ গুরুত্ব ব্যাহত হবে। সে লক্ষ্যে তিনি বাষির্কভাবে সৃজনশীল মেধা অন্বেষণ প্রতিযোগিতা চালু করেছেন। বিশ্বাস নিয়েই বলতে হয়, তিনি গবেষক হিসেবে চেলেঞ্জিং মনোভাব নিয়ে চমৎকার নীতি গ্রহণের মাধ্যমে ফলপ্রসূ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছেন। রাষ্ট্র বিনিমাের্ণ এমন সময়োচিত বিজ্ঞানমনষ্ক নেতা পাওয়া পরম ভাগ্যের ব্যাপার।

মননশীল চিন্তায় তিনি যে বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে উপস্থাপন করেন তা হলোÑ সমকালীন রাজনীতি, জনশক্তি, মানবাধিকার, ধমের্র অপব্যাখ্যা, স্বপ্নপূরণ, বিপন্ন গণতন্ত্র, স্মৃতি, ভাষাপ্রীতি, সংগ্রাম আন্দোলনের গৌরব, চেতনার পরিচয়, অধিকার প্রতিষ্ঠা, সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সমাধান তীব্র প্রতিবাদ স্পষ্টবাদিতার মতো তুলে ধরেছেন তা অবণর্নীয়।

বাবা ও পরিবার হারানোর গহীন বেদনা ও কষ্ট চেপে জীবনের নিশ্চয়তা না ভেবে কাজ করছেন, ভাবছেন লিখছেন শাসকের ভ‚মিকায় অসাধারণ কৃতিত্ব বজায় রাখছেন। সত্যিই অসাধারণ ও নিভীর্ক তিনি। তাই বলতে হয়Ñ

যতদিন রবে শেখ হাসিনার হাতে দেশ/পথ হারাবে না বাংলাদেশ।

তিনি হলেন রাজনৈতিক শব্দকারিগর। রাজনৈতিক ভাষায় সমস্যা চিহ্নিতকরণ তার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। রাজনীতিও যে সাহিত্যের মৌলিক উপকরণ তা অন্যান্য সাহিত্যিকদের কাছ থেকে জানা গেলেও স্পষ্টতা পায় তার মননশীলতায়। যাতে পাঠক রাজনীতি বিষয়ানুক্রমিক হিসেবে সহজেই দৈনন্দিন সমস্যা সম্পকের্ অবগত হতে পারে এবং লক্ষ্য সম্পকের্ পায় ধারণাশক্তি। তিনি সাহিত্যিকের চেয়েও ক্ষমতাধর প্রভাবশালী রাষ্ট্রপ্রধান। তাই বিশ্ব থেকে কৃতিত্ব হিসেবে নানা উপাধিতে ভ‚ষিত হয়েছেন। ধরিত্রীর কন্যার পাশাপাশি বাংলা সাহিত্যের রাজকন্যাও বলা যেতে পারে। রাজনৈতিক সাহিত্যচচার্র সৃজনে যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে গবেষণালব্ধ সময়োপযোগী চিন্তা ও প্রয়োগের মানসিকতা বিদ্যমান তার উল্লিখিত চিন্তনশিল্পে। চিন্তাশীল কথায় কোনো জড়তার চাপ নেই। সহজ ও সাবলীলভাবে তিনি পরম যতেœ বলছেন, ঠিক রাজনীতিকের মতো। এভাবে তিনি হয়ে ওঠেন রাজনীতিক সাহিত্যিশিল্পী। মননশীল ভাষা স্পষ্ট, সাহসী, প্রতিবাদমুখর, ব্যক্তিত্বে মহীয়ান, মনে চিরসবুজ, নেতৃত্বগুণে অসাধারণ, দৃষ্টিভঙ্গি তীক্ষè। এ সবই নৈতিক দায়িত্বের প্রধান বিষয়। যুক্তিবিধি হলো তিনি হলেন সবর্প্রাণবাদ বাংলাদেশের নিমার্তা।

শাহমুব জুয়েল: কবি, গল্পকার ও প্রাবন্ধিক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<33528 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1