শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিনিয়োগে স্থবিরতা

কাযর্কর পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

একটি দেশের সামগ্রিক অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে এবং দেশকে সমৃদ্ধির ধারায় এগিয়ে নিতে হলে বিনিয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূণর্ বিষয় যা বলার অপেক্ষা রাখে না। এ ক্ষেত্রে এটিও বলা দরকার যে, বিনিয়োগে স্থবিরতা তৈরি হলে তা ইতিবাচক নয়। সঙ্গত কারণেই এরূপ পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে তা পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, অথর্বছরের প্রথমাধের্ কলকারখানা স্থাপনের জন্য প্রয়োজনীয় মূলধনী যন্ত্রপাতি (ক্যাপিটাল মেশিনারি) আমদানির প্রবণতা কমেছে। বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহও আগের চেয়ে কমে এসেছে। ফলে বিনিয়োগে স্থবিরতা কাটছে না এমনটি জানা যাচ্ছে। লক্ষণীয় যে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সবের্শষ তথ্য বলছে, চলতি ২০১৮-১৯ অথর্বছরের জুলাই-ডিসেম্বর সময়ে বিভিন্ন দেশ থেকে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ২৩৮ কোটি ৬০ লাখ ডলারের এলসি (ঋণপত্র) খুলেছেন বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা। ২০১৭-১৮ অথর্বছরের একই সময়ে এলসি খোলার পরিমাণ ছিল ৩২৯ কোটি ৪৭ লাখ ডলার। এ হিসাবে ছয় মাসে মূলধনী যন্ত্রপাতির জন্য এলসি খোলার পরিমাণ কমেছে ২৭ দশমিক ৫৮ শতাংশ। অথচ গত অথর্বছরের একই সময়ে শিল্প খাতের বিকাশের জন্য মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য এলসি খোলার পরিমাণ ৩৫ শতাংশ বেড়েছিল।

আমরা মনে করি, যখন উন্নয়নের ডামাডোলের মধ্যেও মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি কমার খবরে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিদের শীষর্ সংগঠন এফবিসিসিআইর সভাপতিও এবং তিনি বলেছেন, অনেক দিকে বাংলাদেশ এগিয়ে গেলেও বিনিয়োগ সহায়ক পরিবেশ এখনো ‘অনুপস্থিত’। তখন বিষয়টি আমলে নেয়া সমীচীন বলেই প্রতীয়মান হয়। আমরা মনে করি, সংশ্লিষ্টদের কতর্ব্য হওয়া দরকার বিনিয়োগ সহায়ক পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলে এর কারণ কীÑ সেটি চিহ্নিত করা এবং সেই মোতাবেক প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা। কেননা এটা মনে রাখতে হবে, বিনিয়োগ সহায়ক পরিস্থিতি যদি অনুপস্থিত থাকে তবে এর নেতিবাচক প্রভাব এড়ানো যাবে না। বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং বিনিয়োগকারীদের উদ্বুদ্ধ করতে বিনিয়োগ সহায়ক পরিস্থিতি সৃষ্টির কোনো বিকল্প থাকতে পারে না। আমলে নেয়া দরকার, অথর্বছরের প্রথমাধের্ মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৮ শতাংশ। কিন্তু ডিসেম্বর শেষে দেখা যায়, প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৩ দশমিক ২ শতাংশ, যা লক্ষ্যের চেয়ে অনেক কম। সঙ্গত কারণেই আমরা বলতে চাই, সাবির্ক এই বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টদের করণীয় নিধার্রণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করা জরুরি।

উল্লেখ করা দরকার, গত ৩০ জানুয়ারি জানুয়ারি-জুন সময়ের মুদ্রানীতির ঘোষণায় বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ কমার সম্ভাব্য একটি ব্যাখ্যা দিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভনর্র, তিনি বলেছেন, গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নিবার্চন ঘিরে ব্যবসায়ীদের ‘অনিশ্চয়তার শঙ্কা’ এর একটি কারণ হয়ে থাকতে পারে। তবে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেছেন, জাতীয় নিবার্চন মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি বা বিনিয়োগ কমার ‘মূল কারণ নয়’। আমরা বলতে চাই যে, যখন এমন বিষয়ও উঠে এসেছে, বিনিয়োগের অনুক‚ল পরিবেশ নিশ্চিত করতে না পারাই বিনিয়োগ স্থবিরতার কারণÑ তখন সামগ্রিক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ করতে হবে সংশ্লিষ্টদের এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কাযর্কর পদক্ষেপও নিশ্চিত করতে হবে। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতা গ্রহণের সময় বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) প্রবৃদ্ধি ছিল ৫-এর ঘরে, সেই প্রবৃদ্ধি এই দশ বছরে বেড়ে ৭ দশমিক ৮৬ শতাংশ হয়েছে। কিন্তু ২০১৮ সালের বাংলাদেশ অথৈর্নতিক সমীক্ষা বলছে, গত সাত বছরে দেশে বিনিয়োগের পরিমাণ জিডিপির আনুপাতিক হারে বেড়েছে সামান্যই। আমরা বলতে চাই, জিডিপির আনুপাতিক হারে যদি বিনিয়োগের পরিমাণ সামান্য বাড়ে তবে বিষয়টি এড়ানো যাবে না, এটি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।

সবোর্পরি আমরা বলতে চাই, বিনিয়োগ স্থবিরতা কাটানোর লক্ষ্যে সামগ্রিক পরিস্থিতি পযের্বক্ষণ সাপেক্ষে যত দ্রæত সম্ভব যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের পরও বিনিয়োগ না বাড়ার কারণ হিসেবে যে বিষয়গুলো আলোচনায় আসছে সেগুলো খতিয়ে দেখতে হবে। বিনিয়োগ স্থবিরতা দূর করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিশ্চিত হোক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<36109 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1