শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

বাংলাদেশের সাফল্যের প্রশংসায় পাকিস্তান

উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকুক
নতুনধারা
  ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, ০০:০০

বিশ্বের নানান দেশ এবং অথৈর্নতিক বিশ্লেষকদের পর নীরব দশের্কর ভ‚মিকা পালন করা প্রতিবেশী রাষ্ট্র পাকিস্তানের একজন পদাথির্বদ বাংলাদেশের উন্নয়ন-সাফল্যের ভ‚য়সী প্রশংসা করে একটি নিবন্ধ প্রকাশ করেছেন। ‘কেন পাকিস্তানের চেয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে’ শীষর্ক নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে গত শনিবার দেশটির শীষর্ গণমাধ্যম ‘ডন’-এ। নিবন্ধকার পারভেজ হুদভয় তার প্রবন্ধে লিখেছেন, ‘দুবর্ল গণতান্ত্রিক’ শাসন ব্যবস্থা সত্তে¡ও ‘লাইফ সাপোটের্ থাকা দেশ’-এর অবস্থান থেকে নিজেকে বের করে আনতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ। এখন অনেক অথৈর্নতিক বিশ্লেষক বাংলাদেশকে পরবতীর্ এশিয়ান টাইগার হিসেবে বিবেচনা করেন। গত বছর বাংলাদেশের অথৈর্নতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৭ দশমিক ৮ শতাংশ, যেখানে ভারতের ছিল ৮ শতাংশ এবং পাকিস্তানের মাত্র ৫ দশমিক ৮ শতাংশ। মাথাপিছু বৈদেশিক ঋণের পরিমাণও পাকিস্তানের অধের্ক। আর বৈদেশিক মুদ্রা রিজাভের্র পরিমাণ পাকিস্তানের চেয়ে চারগুণ বেশি। বাংলাদেশের অন্যান্য ক্ষেত্রের উন্নয়নগুলোকেও তিনি বিস্ময়কর বলে উল্লেখ করেছেন নিবন্ধে। বলার অপেক্ষা রাখে না, কয়েক বছর ধরেই উন্নয়নের নানান বৈশ্বিক সূচকে পাকিস্তানকে পেছনে ফেলে বাংলাদেশে উঠে এসেছে অনেক ওপরে। বাংলাদেশের এই এগিয়ে যাওয়াকে পাকিস্তানের জন্য শিক্ষণীয় হিসেবে উল্লেখ করেছেন ওই পদাথির্বদ। পাকিস্তানের পক্ষ থেকে প্রশংসা পাওয়া আমাদের জন্য স্বস্তিকর একটি দিক বলেই আমরা বিবেচনা করতে চাই।

তথ্য মতে, নিবন্ধকার উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির বেশিরভাগই রপ্তানি নিভর্রÑ যা ১৯৭১ সালে শূন্যের কোটা থেকে ২০১৮ সালে এসে দঁাড়িয়েছে বছরে সাড়ে তিন হাজার কোটি মাকির্ন ডলারেরও বেশি। সেখানে পাকিস্তানের বাৎসরিক রপ্তানি আয় আড়াই হাজার কোটি ডলারের কিছু কম। এ ছাড়া তিনি উল্লেখ করেছেন, বাংলাদেশে তুলা উৎপন্ন হয় না, কিন্তু পাকিস্তানে হয় এবং বস্ত্রশিল্প খাতে প্রচুর সুবিধা দেয়া সত্তে¡ও মাথা তুলে দঁাড়াতে পারেনি পাকিস্তানের বস্ত্রশিল্প খাত। এভাবে বাংলাদেশের সব খাতের উন্নয়নের বিশ্লেষণ করে তিনি মন্তব্য করেছেন, ২০২০ সাল নাগাদ কাগজে-কলমে বাংলাদেশিরা পাকিস্তানিদের তুলনায় সম্পদশালী হয়ে উঠবে। হুদভয় মনে করেন, উন্নয়নে নজর না দিয়ে ভারতকে টেক্কা দিতে গিয়েই নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান। তবে দেশটির পদাথির্বদের এই পযের্বক্ষণের বিষয়টি বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক বলেই আমরা মনে করি।

তবে এটা ইতিহাস স্বীকৃত যে, পাকিস্তানের সঙ্গে একীভ‚ত থাকাকালীন সময় দেশটি যেমন পূবর্ পাকিস্তান তথা পূবর্বাংলার জনগণের ওপর শাসন-শোষণ চালিয়েছে; তেমনইভাবে পৃথক রাষ্ট্র হিসেবে স্বাধীনতা লাভের পরও পাকিস্তান নানানভাবে সাবের্ভৗম বাংলাদেশের যাতে উন্নয়ন না ঘটে সে চেষ্টাও অব্যাহত রেখেছে। আবার নিকট অতীতে একাত্তরের স্বাধীনতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার চলাকালে তাদের বঁাচাতে পাকিস্তানের অপতৎপরতার বিষয়টি আন্তজাির্তক গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়। এখনো সুযোগ পেলে বাংলাদেশের নানান সমালোচনা করে দেশটি। সম্প্রতি বাংলাদেশ ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে দেশটির সরকারি একটি ওয়েবেসাইটে কুরুচিপূণর্ মন্তব্য প্রকাশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত দূতকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করেও তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। বিস্ময়ের ব্যাপার যে, পাকিস্তান একদিকে বাংলাদেশের উন্নয়নের ভ‚য়সী প্রশংসা করছে, পাশাপাশি দেশ ও জাতির পিতাকে নিয়ে কুরুচিপূণর্ মন্তব্য করছে। পাকিস্তানের এই বিপরীতমুখী অবস্থানের মধ্যে অন্য কোনো ষড়যন্ত্র নেই তোÑ ঘুরে ফিরে এমন প্রশ্নও উঠে এসেছে আলোচনায়। আমরা মনে করি, নীতিনিধার্রকদের কতর্ব্য হওয়া দরকার পাকিস্তানের এহেন কমর্কাÐের ওপর যথাযথ নজর রাখা এবং সে অনুযায়ী কাযর্কর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা।

সবোর্পরি বলতে চাই, ‘বাংলাদেশের সাফল্যের অন্যতম কারণ হলো, দেশটি অনেক প্রতিবন্ধকতার পরও উন্নয়ন থেকে দৃষ্টি সরায়নি’ পদাথির্বদ পারভেজ হুদভয়ের এই পযের্বক্ষণ অবশ্যই প্রশংসার দাবি রাখে। অস্বীকারের সুযোগ নেই যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদশীর্ নেতৃত্বে দেশ উন্নয়নের মহাসোপানের দিকে এগিয়ে চলেছে। শিক্ষা, চিকিৎসা, অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, অথর্নীতি, মাথাপিছু আয়বৃদ্ধি, নারী স্বাধীনতা, বৈষম্যবিলোপ, দারিদ্র্য বিমোচনসহ এমন কোনো ক্ষেত্রে নেই যেখানে উন্নয়নের ছেঁায়া লাগেনি। প্রত্যাশা থাকবে, সরকার তথা সংশ্লিষ্টরা দেশের উন্নয়নের এ ধারা অব্যাহত রাখতে আরো আন্তরিক হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<36522 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1