বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

ভারতের নির্বাচনী চালচিত্র

কলকাতাসহ বিভিন্ন প্রদেশে প্রায় সবাই মোদির প্রত্যাবর্তনের কথা বলছে। যেমন অটল বিহারীর সময়ে বলেছিল, 'ওহফরধ ংযরহরহম', কিন্তু অটল বিহারীর মতো অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদও সে নির্বাচনে চরমভাবে পরাজয় বরণ করেছিলেন। বর্তমান নির্বাচনে মোদির ফ্রন্ট পরাজিত হলে আমি অবাক হবো না।
মোনায়েম সরকার
  ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

সম্প্রতি আমি ভারতে গিয়েছিলাম চিকিৎসা ও নির্বাচনী চালচিত্র দেখার জন্য। আমার মনে হয়েছে বিশ্ব রাজনীতি যে পরিবর্তিত হয়েছে তার ঢেউ ভারতেও দৃশ্যমান- যেমন ধনবাদ ও সমাজতন্ত্রের লড়াই এখন নেই। এখনকার লড়াই হচ্ছে পুঁজিপ্রিয় প্রতিক্রিয়াশীল ও মৌলবাদীদের মধ্যে। অর্থাৎ পুঁজিবাদ ও ধর্মান্ধ মৌলবাদের মধ্যে।

ভারতের সপ্তদশ লোকসভার নির্বাচন শুরু হয়েছে ১১ এপ্রিল, চলবে ১৯ মে পর্যন্ত। লোকসভার ৫৪৩টি আসনের ফলাফল কী হবে তা অবশ্য জানা যাবে ২৩ মে। নির্বাচনে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ গোষ্ঠী, অন্যদিকে কংগ্রেসের ইউপিএ এবং আঞ্চলিক দলগুলো। বন্ধুরাষ্ট্র ভারতের এই নির্বাচন সম্পর্কে প্রতিবেশী রাষ্ট্র বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের আগ্রহ থাকাই স্বাভাবিক। বিগত ২০১৪ ষোড়শ লোকসভা নির্বাচনে ভারতীয় জনতা পার্টি বা বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ ব্যাপক গরিষ্ঠতা পায়। বিজেপি একাই পেয়েছিল ২৮২ এবং কংগ্রেস পায় ৪৪টি আসন। বিজেপি কিন্তু ভোটের শতকরা হিসেবে ৩১.৩৪ ভাগ ভোট পেয়ে এই আসন দখল করেছিল। আর কংগ্রেস শতকরা ১৯.৫২ ভাগ ভোট পেয়ে এই আসন দাঁড়িয়েছিল ৪৪। আর বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএর শরিক হিসেবে শতকরা ৩.৩১ ভাগ ভোট পেয়ে এআইএডিএমকে আসন পেয়েছিল ৩৭টি। আর বামপন্থিরা সম্মিলিতভাবে আসন পায় ৭টি। নেমে আসে শতকরা ২ ভাগের চেয়েও কম। অথচ ভারতের প্রথম নির্বাচনেও বামপন্থীদের আসন ছিল ১৬ এবং ২০১৪ সালে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের আসনে ভারতের বামপন্থীরা আসন পেয়েছিল ৬৩টি।

এবারের নির্বাচনে মোদি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোটবদ্ধ হয়েছে ১৮টি রাজ্যে। এনডিএতে বিজেপি ছাড়াও এআইডিএমকে, অসম গণপরিষদ, আকালি দল, শিবসেনা, নীতিশ কুমারের জনতা পার্টি, তেলেঙ্গানার ওয়াইএমআর রেড্ডির দল প্রভৃতি রয়েছে। কংগ্রেস সারা ভারতে ছয়টি রাজ্যে অন্যান্য আঞ্চলিক দলগুলোর সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। সেই দলগুলো হলো ন্যাশনাল কংগ্রেস পার্টি, জনতা (এম), ডিএমকে, রাষ্ট্রীয় জনতা দল। বাকি অঞ্চলে তারা এককভাবে লড়ছে। নির্বাচনের আরেকটি লক্ষণীয় দিক হলো আঞ্চলিক দলগুলোর প্রভাব বৃদ্ধি যেমন উত্তরপ্রদেশে বহুজন সমাজবাদী পার্টি, সমাজবাদী পার্টি, পশ্চিম বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেস, ওড়িশায় বিজু জনতা, অন্ধ্রে তেলগু দেশম। নির্বাচনে এনডিএ কিংবা কংগ্রেসের ইউপিএ একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পেলে এই আঞ্চলিক দলগুলো যেদিকে যাবে ভারতের ভাগ্য তাদের হাতেই নির্ভর করবে। এই নির্বাচনে সবচেয়ে করুণ অবস্থা বামপন্থিদের। নির্বাচনের কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ এবং বিভিন্ন আঞ্চলিক দলগুলোর অভিযোগ নরেন্দ্র মোদির সরকার দেশের সংবিধানের চরিত্র বদলাতে চাইছে দেশের উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্রীয় সংস্থার বুনিয়াদকে ধ্বংস করে ভারতের ১৪টি পুঁজিপতি পরিবার করপোরেটে পুঁজি সেবা করছে। বিজেপি তাই কর্মকৌশলে উন্নয়নের কথা বললেও রামমন্দির নির্মাণ, এনআরসি, কাশ্মীর ৩৭০ ধারা প্রয়োগ প্রভৃতির কথা বলছে। বামপন্থিরা সমাজ প্রগতির কথা বললেও তাদের অবস্থা ক্ষীয়মাণ- তারা বিজেপি সরকারকে ফ্যাসিস্ট সরকার বলে আখ্যা দিলেও ওর বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ সংগ্রামের রাস্তায় হাঁটেনি। এই নির্বাচনে বাংলাদেশের জনসাধারণের পশ্চিম বাংলার নির্বাচন সম্পর্কেও আগ্রহ থাকা স্বাভাবিক।

পশ্চিমবঙ্গে এই নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস ৪২টি আসনেই তার প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করেছে। তৃণমূল নেতৃত্ব ঘোষণা করেছে তারা এই রাজ্যের ৪২টি আসনেই জয়লাভ করতে চায়। রাজ্য বিজেপি দল ঘোষণা করেছে তারাও এই রাজ্যে ৪২টি আসনে প্রার্থী দেবে। তারা আশা করছে ৪২টি আসনের মধ্যে অবশ্যই তারা অধিকাংশ আসনে জয়ী হবে। রাজ্যে বামফ্রন্ট এবং জাতীয় কংগ্রেস দলের মধ্যে আসন সমঝোতা হওয়ার জন্য দীর্ঘ আলাপ-আলোচনা হলেও শেষ পর্যন্ত এই আসন সমঝোতা হয়নি। বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস দল এই নির্বাচনে কতগুলো আসন পাবে- তা অবশ্য এই দলগুলোর নেতারা এখন পর্যন্ত ব্যক্ত করেননি। তবে তারা আসন বণ্টন নিয়ে ঐকমত্যে আসতে পারেননি বলেই নির্বাচনী সমঝোতা হয়নি। অর্থাৎ রাজনৈতিক অথবা অর্থনৈতিক কারণে বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেসের আসন সমঝোতা ভেঙে গিয়েছে তা নয়। সমঝোতা ভেঙেছে কার ঝুলিতে কয়টি আসন থাকবে সে বিষয়ে বিতর্ক করে।

গত লোকসভা নির্বাচনে অর্থাৎ ২০১৪ সালের নির্বাচনে বিজেপি দল মাত্র শতকরা ৩১ ভাগ ভোট পেয়ে দেশের শাসন ক্ষমতা দখল করেছিল। আরএসএসের রাজনৈতিক শাখা সাবেক জনসংঘ বর্তমানে বিজেপি একটি সংগঠিত দল। এই দলের প্রধান হিসেবে নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছিলেন দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়বেন। 'আচ্ছে দিন আয়েগা'। বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবেন। কালো টাকা উদ্ধার করে প্রতিটি নাগরিককে ১৫ লক্ষ টাকা করে জমা দেবেন। গণতন্ত্রের প্রসার ঘটাবেন। কিন্তু এর বাস্তব প্রতিফলন কী হয়েছে তা অনেকেই উপলব্ধি করেছেন। দুর্নীতি বেড়েছে। ব্যাংকের টাকা কার্যত লুঠ করে বিজয় মালিয়া, নীরব মোদিরা পালিয়েছে। নোট বদলের নামে লক্ষ লক্ষ টাকা নয়ছয় করা হয়েছে। বেকার সংখ্যা বৃদ্ধি হয়েছে, গণতান্ত্রিক অধিকার ক্ষুণ্ন হয়েছে। সরকারি শিল্পকে ভেঙে কার্যত তা বেসরকারি হাতে তুলে দেয়া হয়েছে। দেশের সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্য সংবিধানের ঘোষিত নীতি গণতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষ, সমাজতন্ত্রের রাস্তা থেকে সরিয়ে এনে সংবিধানের চরিত্রকে বদলানোর চেষ্টা হচ্ছে। ভারতে স্বাধীনতা আন্দোলনের যে মূল বৈশিষ্ট্য অর্থাৎ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতা থেকে সরিয়ে আনতে চাইছে। ব্যাংক থেকে পরিবহন, তেল কোম্পানি, ডাক-তার প্রভৃতি শিল্পকে বেসরকারিকরণের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। এমনকি সেনাবাহিনীকে নিয়েও রাজনীতি করা হচ্ছে। স্বায়ত্তশাসিত সংগঠনগুলোর অধিকার ভঙ্গ করা হয়েছে।

বিংশ শতাব্দীর তিন দশকে ইউরোপে নাৎসি ও ফ্যাসিবাদের উদ্ভব হয়েছিল এভাবেই। দরিদ্র মানুষের ক্ষোভকে পুঁজি করে কমিউনিস্ট সোশ্যালিস্ট 'ডেমোক্রেটিক'দের বিরোধের সুযোগ নিয়ে মাত্র ৩১ ভাগ ভোট সম্বল করে গণতান্ত্রিকভাবে হিটলার ক্ষমতায় আসীন হয়েছিলেন। এরপর সমস্ত সংবাদমাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে, গণতন্ত্রের সব সোপানকে ভেঙে ফ্যাসিস্টরা ধর্মান্ধতা আর উগ্রজাতীয়তাবাদকে পুঁজি করে ফিন্যান্স পুঁজি আর সেনাবাহিনীকে কাজে লাগিয়ে সারা বিশ্বে যে মানবিকতাবিরোধী আলোড়ন সৃষ্টি করেছিল তা ইতিহাসের ছাত্রমাত্রই জানে। ভারতের আরএসএস দলের নায়ক ছিল একদা 'হিটলার' এ কথাও হয়তো ইতিহাসের ছাত্ররা জানে। বিজেপি দল বর্তমানে যে কর্মসূচি নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে তা ফ্যাসিবাদেরই লক্ষণ। এর বিরুদ্ধে এই রাজ্যে তৃণমূল কংগ্রেস, বামফ্রন্ট এবং কংগ্রেস নেতারা সবাই বলছেন। কিন্তু এ শক্তিকে পরাস্ত করার জন্য ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিগুলোর মধ্যে যে ঐক্য হওয়া প্রয়োজন ছিল তা হয়নি। আর ফ্যাসিবাদী শক্তিকে শুধু ভোটে পরাস্ত নয়, এই মানসিকতাকে পরাস্ত করার জন্য যে দৃঢ় ঐক্য ও সাংস্কৃতিক প্রয়াস প্রয়োজন তার ঐক্যবদ্ধ উদ্যোগ দেখা যায়নি।

সতীদাহ প্রথা রদ, বিধবা বিবাহের জন্য সোচ্চারের সময় থেকে পশ্চিমবাংলায় নবজাগরণের যুগ শুরু হয়েছিল। এই যুগ ক্রমান্বয় অগ্রসর হয়েছে। স্বাধীনতা-উত্তর ভারতবর্ষে রাজনৈতিক মতবিরোধ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যাই থাকুক না কেন সংস্কৃতির ক্ষেত্রে পশ্চিম বাংলায় দক্ষিণপন্থার দিকে যাওয়া অথবা পেছনে যাওয়ার প্রবণতা ছিল না, আমরা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে দেখেছি, কিন্তু এখন তাই পরিলক্ষিত হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে রাজ্যের প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো অর্থাৎ তৃণমূল কংগ্রেস, জাতীয় কংগ্রেস কিংবা বামফ্রন্ট কথা বলছে। কিন্তু এ লড়াইয়ে এরা কতটা আন্তরিক- সে বিষয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর নেতা ও কর্মীদের মধ্যেও এক অদ্ভুত ধরনের নীতিহীনতা ও সুবিধাবাদ লক্ষ্য করেছি।

বিগত নির্বাচনে কংগ্রেস দলের হয়ে যারা নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন তাদের মধ্যে ১৩ জন বিধায়ক গিয়েছেন তৃণমূল কংগ্রেসের দলে। আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূলে গিয়েও কেউ কৌশল নিয়ে বিধানসভায় সদস্যপদ রাখার জন্য নিজেদের কংগ্রেস বলেন। সবশেষ দেখা গেল সিপিএম বিধায়ক বিজেপিতে গিয়েছেন। আবার তৃণমূলের দুজন সংসদ সদস্য এবং একাধিক বিধায়ক যোগ দিয়েছেন বিজেপিতে। তেমনি বামফ্রন্টের সিপিআই, ফরওয়ার্ড বস্নক, আরএসপি থেকে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদানের ঘটনা রয়েছে। অর্থাৎ রাজনৈতিক নীতিহীনতা স্পষ্ট। রাজনৈতিক নেতারা এটি করছেন কেন? অনেক সময়ই পদের লোভ, যশের লোভ আবার শাসকদলের চাপেও অনেকে এই দল বদল করে।

বিজেপির বিপদ সম্পর্কে কংগ্রেস দলের সর্বভারতীয় নেতৃত্ব বিশেষ করে ওই দলের সভাপতি রাহুল গান্ধী ভারতব্যাপী সোচ্চার প্রচার করছেন। বিজেপি সরকারের ভয়ঙ্কর আগ্রাসী নীতি সম্পর্কে সবাইকে সজাগ করছেন। রাফায়েল নিয়ে দুর্নীতি, আম্বানি-আদভানিদের স্বার্থে দেশের অর্থনীতি কর্মকান্ড তুলে ধরেছেন। আম্বানি, আদভানি এবং একচেটিয়া পুঁজি এবং করপোরেট হাউসের বিরুদ্ধে সর্বভারতীয় কংগ্রেস নেতৃত্ব ইতিপূর্বে এমনভাবে কখনো সোচ্চার হননি। বিজেপির বিরুদ্ধে সর্বাঙ্গীন ঐক্য সৃষ্টিতে বাধা বিভিন্ন আঞ্চলিক দলগুলোর মধ্যেও রয়েছে, তেমনি রয়েছে কিছু বামপন্থি ও কংগ্রেস নেতা ও কর্মীদের মধ্যে। সিপিআই (এম) নেতা প্রকাশ কারাত যেমন বিজেপির মধ্যে ফ্যাসিস্ট মনোভাব দেখেন আবার কংগ্রেসের সঙ্গে জোটেও তার আপত্তি। কিছু কিছু রাজ্যে কংগ্রেস নেতাদের মধ্যেও এটি আছে। এর পিছনে প্রধান শাসক দলের কিছু নেতার শাসন কিংবা আম্বানি-আদভানির আর্থিক যোগসহ অন্য যোগ থাকতে পারে বলেও অনেকে মনে করেন। অথচ জাতীয় কংগ্রেস নেতারা কর্নাটকের বিধানসভায় অধিকাংশ আসন পাওয়া সত্ত্বেও জেডিএস দলকে মুখ্যমন্ত্রী পদ ছেড়ে দিয়েছেন। উত্তর প্রদেশে ঐক্য না হলেও মায়াবতীর বিএসপি এবং অখিলেশ যাদবের সমাজবাদী পার্টিকে কংগ্রেস সাতটি আসন ছেড়ে দেয়ার কথা ঘোষণা করেছেন।

এ প্রসঙ্গে কমিউনিস্ট ও বামপন্থিদের কাছে কিছু অতীত ইতিহাসের উলেস্নখ হয়তো প্রয়োজন। রুশ বিপস্নবের পর দেশের অর্থনৈতিক সুস্থিতি ফিরিয়ে আনতে শান্তির প্রয়োজন ছিল। লেনিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ট্রটস্কিকে নির্দেশ দিয়েছিলেন জার্মানির সঙ্গে শান্তি আলোচনায়। তিনি বলেছিলেন এর জন্য প্রয়োজনে পেটিকোট পরেও যেতে পার।

ফ্যাসিবাদের যখন উত্থান হয়, তখন জার্মানিতে কমিউনিস্ট আর সোশ্যালিস্ট এবং ডেমোক্রেটরা ঐক্যবদ্ধ হয়নি। এর সুযোগ নিয়েছিল হিটলার। আবার প্যারিসেও এই ঘটনা ঘটেছিল। প্যারিসের সংবাদপত্র এবং বৃহৎ পুঁজি কমিউনিস্ট আর সোশ্যালিস্টদের মধ্যে বিরোধ লাগিয়েছিল ফ্যাসিস্টদের স্বার্থে। ইলিয়া এরেনবুর্গের ফল অব প্যারিতে এর চমৎকার বিবরণ রয়েছে। আবার ফ্যাসিস্টদের পরাস্ত করতে স্বয়ং স্টালিন রুজভেল্ট, চার্চিল, দ্য গল-এর সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন। মাও সে তুং হাত মিলিয়েছেন চিয়াং কাইশেকের সঙ্গে। বিজেপিকে পরাস্ত করাটা আপাতত যদি মূল লক্ষ্য হয় তবে কংগ্রেসে, কমিউনিস্ট ও বামপন্থিরা কোন পথে যাবে? তারা কি কয়েকটি আসনের জন্য দেশের স্বার্থ এবং শ্রেণিস্বার্থ বিসর্জন দেবে? প্রশ্ন এখানেই।

কলকাতাসহ বিভিন্ন প্রদেশে প্রায় সবাই মোদির প্রত্যাবর্তনের কথা বলছে। যেমন অটল বিহারীর সময়ে বলেছিল, 'ওহফরধ ংযরহরহম', কিন্তু অটল বিহারীর মতো অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদও সে নির্বাচনে চরমভাবে পরাজয় বরণ করেছিলেন। বর্তমান নির্বাচনে মোদির ফ্রন্ট পরাজিত হলে আমি অবাক হবো না।

মোনায়েম সরকার : রাজনীতিবিদ ও কলামিস্ট

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<46666 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1