বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

পদ্মা সেতুর ১৬৫০ মিটার দৃশ্যমান

যথাসময়ে কাজ শেষ হোক
নতুনধারা
  ২৫ এপ্রিল ২০১৯, ০০:০০

স্বপ্নের পদ্মা সেতু আর স্বপ্নে নেই। সেতুটির নির্মাণকাজ ক্রমাগত এগিয়ে চলেছে। আর পদ্মা সেতুর মধ্য দিয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়নের গতি আরও ত্বরান্বিত হওয়ার যে স্বপ্ন দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষ লালন করে আসছে, তা সম্প্রতি আরেক ধাপ এগিয়ে গেল বলে জানা যাচ্ছে। কেননা, পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, একাদশ স্প্যান বসানো হয়েছে আর এর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর ১৬৫০ মিটার অংশ দৃশ্যমান হলো।

তথ্য মতে, মঙ্গলবার সকাল ৯টায় পদ্মা সেতুর জাজিরা প্রান্তের ৩৩ ও ৩৪ নম্বর পিলারের ওপর স্প্যানটি বসানো হয়। সেতু বিভাগের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মাওয়ার মুন্সীগঞ্জের কুমারভোগের বিশেষায়িত জেডি থেকে ১১তম স্প্যান নিয়ে একটি শক্তিশালী ক্রেন সোমবার সকালে রওনা হয়ে বিকালে জাজিরা নাওডোবা এলাকায় পৌঁছায়। সকাল ৯টার দিকে পিলারের ওপর বসানোর জন্য স্প্যানটি তোলা হয়। উলেস্নখ্য যে, এ নিয়ে জাজিরা প্রান্তে নয়টি এবং মাওয়া প্রান্তে দুটি স্প্যান বসল। ইতোমধ্যে সেতুর প্রায় ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে সেতু বিভাগের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মো. হুমায়ুন কবীর জানিয়েছেন, 'এপ্রিল মাসে দুটি স্প্যান বসানো হয়েছে। মে মাসে আরও দুটি এবং চলতি বছরের মধ্যে সব কয়টি স্প্যান বসিয়ে সেতুটি দৃশ্যমান করে তুলব বলে আশা করছি।' বলা দরকার, ২০১৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর পদ্মা সেতুর প্রথম স্প্যান, ২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি দ্বিতীয়, ১০ মার্চ তৃতীয়, ১৩ এপ্রিল চতুর্থ, ২৯ জুন পঞ্চম স্প্যান বাসানো হয়। এরপর ২০১৯ সালে ২৩ জানুয়ারি ষষ্ঠ, ২০ ফেব্রম্নয়ারি সপ্তম, ২০ মার্চ অষ্টম ও ১৮ এপ্রিল নবম স্প্যান বসানো হয়। আর মুন্সীগঞ্জের মাওয়া পয়েন্টের ৪ ও ৫ নম্বর পিলারে গত বছর এবং চলতি বছরের ১৮ এপ্রিল ১৩ ও ১৪ পিলারের ওপর দশ নম্বর স্প্যানটি বসানো হয়েছিল।

আমরা বলতে চাই, ১১তম স্প্যানটি বসানোর মধ্য দিয়ে পদ্মা সেতুর কাজ আর একধাপ এগিয়ে গেল। সব বাধা উপেক্ষা করে সেতুর কাজ এগিয়ে চলছে, যা স্পষ্ট। ফলে সামগ্রিক এই পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে বলতে চাই, নানা ধরনের অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হলেও আজ আর এই সেতু স্বপ্নে আটকে নেই। এখন পর্যন্ত সেতুর সাড়ে ৭৫ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। যা অত্যন্ত সুখকর বলেই আমরা মনে করি। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, যথাসময়েই সেতুর কাজ যেন শেষ করা সম্ভব হয় সেই প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, সংশ্লিষ্টদের এটাও মনে রাখা সমীচীন, বিভিন্ন সময়েই নানা ধরনের প্রকল্পেই ধীরগতি নিয়ে অভিযোগ উঠেছে। যথা সময়ে শেষ করতে না পারার দরুন ব্যয় বৃদ্ধিসহ নানা ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে- যা প্রত্যাশিত ছিল না। ফলে সঠিক ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে নির্দিষ্ট সময়েই পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হোক এমনটি কাম্য।

সর্বোপরি সরকার সংশ্লিষ্টদের বলতে চাই, পদ্মা সেতুর যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সামগ্রিক পদক্ষেপ অব্যাহত রাখুন। ১১তম স্প্যান বসানোর সংবাদে পদ্মা পাড়ের মানুষ আনন্দ প্রকাশ করেছেন। কেননা, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলার প্রায় সাত কোটি মানুষের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে এ সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে। এটা আমলে নেয়া জরুরি যে, এই সেতু হলে ঢাকার সঙ্গে সরাসরি সড়কপথে যুক্ত হবে দক্ষিণাঞ্চল। চলবে ট্রেনও। এশিয়ান হাইওয়ের পথ হিসেবেও সেতুটি ব্যবহৃত হবে। আর অর্থনীতিবিদরাও মনে করছেন, পদ্মা সেতু চালু হলে দেশের আর্থিক প্রবৃদ্ধিও বাড়বে। ফলে যথাযথ সময়ের মধ্যেই পদ্মা সেতুর কাজ শেষ হবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<46670 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1