বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

বিজেপির নিরঙ্কুশ জয়

আমাদের অভিনন্দন
নতুনধারা
  ২৫ মে ২০১৯, ০০:০০

বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট এবারও ভারতের লোকসভা নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়েছে। আর প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদি টানা দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করতে যাচ্ছেন। বিশ্বের বৃহত্তম গণতান্ত্রিক এই দেশটিতে ক্ষমতাসীনদের পক্ষেই ভারতীয় জনগণ আবারও তাদের রায় দিয়েছেন। এ পর্যন্ত পাওয়া ফলাফলে লোকসভার ৫শ আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ৩০২টি আসন। এছাড়া আরও ২০টি আসনে এগিয়ে রয়েছে। এবারও নির্বাচনী প্রচারণায় বিজেপি মিডিয়া ও করপোরেট হাউসগুলোর ব্যাপক সমর্থন পেয়েছিল। তবে জনগণের সিদ্ধান্তই নির্বাচনে নিয়ামক ভূমিকা পালন করে, এ সত্য মানতে হবে। ভারতীয় জনগণের রায়ের প্রতি সম্মান দেখিয়ে আমরাও নির্বাচনে বিজয়ী বিজেপিসহ এনডিএ জোটকে অভিনন্দন জানাই।

তথ্য মতে, কয়েক মাস আগে ভারতের কয়েকটি রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপিকে হারিয়ে ক্ষমতায় এসেছে কংগ্রেস। তাই ধারণা করা হচ্ছিল, এবার লোকসভা নির্বাচনে বড় প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলবে দলটি। কিন্তু বাস্তবে তেমন কিছু ঘটেনি। কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট ইউপিএ ২০১৪ সালের নির্বাচনের তুলনায় এবার বেশি আসন পেলেও এনডিএ জোটের সঙ্গে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বিতাই গড়ে তুলতে পারেনি। এবারের নির্বাচনে ভারতজুড়ে দক্ষিণপন্থী হিন্দুত্ববাদীদের উত্থান লক্ষ করা গেছে। এমনকি পশ্চিমবঙ্গে মমতার তৃণমূল এগিয়ে থাকলেও বিজেপির সঙ্গে লড়াই হয়েছে হাড্ডাহাড্ডি। গণমাধ্যমের খবরে জানা যায়, বিজেপির নিরঙ্কুশ বিজয়ে ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নরেন্দ্র মোদিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। অপরদিকে প্রতিবেশী ভারতের জন্য বাংলাদেশ ও বিএনপি সবসময় বন্ধু ছিল; পানিবণ্টন বা সীমান্ত হত্যার মতো বিতর্কিত বিষয়গুলো দ্বিপক্ষীয় আলোচনা ও উভয় দেশের মধ্যে উপযুক্ত সমঝোতার মাধ্যমে সবসময় সমাধান সম্ভব উলেস্নখ করে এক বার্তায় বিএনপির পক্ষ থেকেও বিজেপিকে অনুরূপ অভিনন্দন জানানো হয়েছে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, ভারতের মতো একটি ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক দেশের রাজনীতিতে হিন্দুত্ববাদী প্রবণতা দেশটির ভেতরে-বাইরে বড় ধরনের প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে। বহু মত, পথ, ভাষা, ধর্ম, জাতি ও সংস্কৃতির মেলবন্ধনের ওপর ভিত্তি করে যে বৃহত্তম ভারত রাষ্ট্রটি দাঁড়িয়ে আছে- সেই আদর্শের বিরুদ্ধপন্থিদের উত্থান দেশটিকে কোথায় নিয়ে যাবে- এমন প্রশ্ন দেখা দেয়াও অযৌক্তিক নয়। তবে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, ভারতে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বধীন বিজেপি সরকার গঠন করলেও ভারত তার মূলনীতি থেকে সরে আসবে না। ভারত আমাদের প্রতিবেশি রাষ্ট্র আর প্রতিবেশীদের সঙ্গে সুসম্পর্কের ক্ষেত্রেও এ কথা প্রযোজ্য। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক নানা বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। ভারতে সাম্প্রদায়িকতাপ্রসূত কোনো অঘটন ঘটলে বাংলাদেশেও তার প্রতিক্রিয়া হয়। এছাড়া ভৌগোলিকভাবে বাংলাদেশের তিন দিকেই ভারতের অবস্থান হওয়ায় দেশটির সঙ্গে আমাদের রয়েছে বিশাল সীমান্ত এলাকা। বাংলাদেশের সঙ্গে রয়েছে ভারতের অভিন্ন নদীব্যবস্থা, যা সরাসরি দুই দেশের সম্পর্ক নির্ধারণ করে। এর বাইরেও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ নানা বিষয় বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে প্রভাবিত করে থাকে। সঙ্গত কারণে ভারতেও নির্বাচনও বাংলাদেশের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

স্মর্তব্য যে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পারস্পরিক সম্পর্ক আরও উষ্ণ হয়েছে। প্রসার ঘটেছে বাণিজ্যসহ সহযোগিতার অন্যান্য ক্ষেত্র। ভারতে মোদি সরকার আসার পর দু'দেশের মধ্যে সীমান্ত সমস্যার সমাধান হয়েছে। তবে দুর্ভাগ্যজনক হলেও সত্য যে, তিস্তার পানি বণ্টন সমস্যার সমাধান আজও হয়নি। এমনকি মোদি সরকার বার বার প্রতিশ্রম্নতি দেয়া সত্ত্বেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। এছাড়া বন্ধ হয়নি সীমান্তহত্যা। নির্বাচনের যখন ফল প্রকাশ হচ্ছে তখন ভারতীয় বিএসএফ রোহিঙ্গাদের পুশব্যাক করেছে। এসব দিক বিবেচনায় আমাদের প্রত্যাশা থাকবে, নরেন্দ্র মোদির এবারের শাসনামলে এ বাংলাদেশের সমস্যাগুলো সমাধান হবে। ভারতে যে দলই ক্ষমতায় থাকুক না কেন, ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায় এ বাংলাদেশের মানুষ। অমীমাংসিত সমস্যাগুলোর সমাধানের মাধ্যমেই তা সম্ভব হতে পারে।

সর্বোপরি বলতে চাই, বিগত শাসনামলে বাংলাদেশের সমস্যা সমাধানে আমরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আন্তরিকতা লক্ষ করেছি। এবারও এর ব্যত্যয় ঘটবে না বলেও আমরা আশাবাদী। আমরা চাই, ভারত বাংলাদেশকে দেয়া তাদের প্রতিশ্রম্নতির বাস্তবায়ন ঘটাতে আরও আন্তরিক হবে। নরেন্দ্র মোদির নতুন মেয়াদে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের বন্ধুসুলভ সম্পর্ক আরও প্রসারিত হোক- এটাই দেশের জনগণের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<51006 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1