মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ুদূষণ

রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
নতুনধারা
  ১৯ জুন ২০১৯, ০০:০০

বায়ুদূষণ এখন রীতিমতো নাগরিক বিড়ম্বনা ও আপদ হিসেবে দেখা দিয়েছে। বায়ুদূষণ মানবজীবনের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। বায়ুদূষণের ফলে একদিকে পরিবেশ যেমন বিনষ্ট হয় তেমনি প্রতিটি মানুষের স্বাস্থ্যঝুঁকিও বেড়ে যায়। বায়ুদূষণ থেকে রক্ষার জন্য অনেকেই মাক্স ব্যবহার করে থাকেন। কিন্তু এটাই একমাত্র সমাধান নয়। মূলত বায়ুদূষণ রোধ করতে হবে। বায়ুদূষণের ফলে মানবদেহে জন্ম নেয় অনিরাময়যোগ্য নানা রোগ। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন, বায়ুদূষণের ফলে মানুষের শ্বাসযন্ত্র, হৃদরোগ, ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস বৃদ্ধির ঝুঁকি তৈরি হয়। এ ছাড়া বায়ুদূষণ মাতৃগর্ভে ভ্রূণের ক্ষতিসাধনসহ শিশুর বুদ্ধিমত্তা বিকাশ ব্যাহত করে।

এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, মেগাসিটি রাজধানী ঢাকা শহরের চেয়ে সাভারের বায়ু বেশি দূষিত। ঢাকা শহরে এয়ার কোয়ালিটি ইনডেক্স (বায়ুমান মানমাত্রা) ১১৫ হলেও সাভারে এর পরিমাণ ১৩৫। ঢাকার চেয়ে আরও বেশি বায়ুদূষণকারী শহর রংপুর। এ শহরে বায়ুমান মানমাত্রা ১২৮। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও শনিবার (১৫ জুন) পরিবেশ অধিদপ্তরের বায়ুমান মানমাত্রা মনিটরিং স্টেশন সূত্রে এ তথ্য বেরিয়ে এসেছে। বাতাসে কার্বন ডাইঅক্সাইড, লেড, নাইট্রোজেন অক্সাইড ও প্রলম্বিত বস্তু কণার কারণে বায়ুদূষিত হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরে তথ্যানুযায়ী, বিভিন্ন শহরের মধ্যে বায়ুমান মানমাত্রা চট্টগ্রামে ৩৫, গাজীপুর ৮৩, নারায়ণগঞ্জ ৮৫, সিলেট ৩৯, বরিশাল ৩৯, ময়মনসিংহ ও কুমিলস্না ২৭। দূষক প্যারামিটার পিএম ২ দশমিক ৫ ধরে এ হিসাব করা হয়। পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, নিয়মিত বায়ুমান মনিটরিংয়ের জন্য রাজধানীসহ সারা দেশে তাদের ১৬টি স্টেশন চালু রয়েছে। তার মধ্যে ঢাকায় ৪টি (ফার্মগেট, সংসদ ভবন, দারুস সালাম ও সাভার), চট্টগ্রামে ২টি; খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, বরিশাল, ময়মনসিংহ, রংপুর, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, কুমিলস্না ও নরসিংদীতে ১টি করে সার্বক্ষণিক বায়ু মনিটরিং স্টেশন রয়েছে।

বায়ু মনিটরিংয়ের তথ্য অনুযায়ী বায়ুমানের হিসাবে রাজধানী ঢাকা, সাভার এবং রংপুর শহরে স্বাস্থ্যগত উদ্বেগের স্থান সাবধানতা বা সতর্কীকরণ লেবেলে রয়েছে। নারায়ণগঞ্জ ও গাজীপুরে স্বাস্থ্যগত উদ্বেগ মধ্যম। স্বাস্থ্য উদ্বেগ সবচেয়ে কম কুমিলস্না ও ময়মনসিংহ। এ ছাড়া স্বাস্থ্যগত উদ্বেগ কমের শহরের মধ্যে চট্টগ্রাম, সিলেট ও বরিশাল। মনে রাখতে হবে, যানবাহনের কালো ধোঁয়া, মিল-কারখানা ইটভাটার কালো ধোঁয়া বায়ুদূষণের প্রধান নিয়ামক। কীভাবে এসব বন্ধ করা যায় এবং মানুষ মুক্ত বায়ু সেবন করতে পারে সেদিকে বিশেষ নজর দিতে হবে। অনেক সময় ধুলো নোংরা আবর্জনাও বায়ুদূষণের জন্য দায়ী। পরিবেশ সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের। রাষ্ট্র যদি এদিকে বিশেষ মনোযোগী না হয় তা হলে জনগণের স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাবে এটাই স্বাভাবিক। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষার দায়িত্ব রাষ্ট্রের, সরকারও এর দায় এড়াতে পারে না। যারা বায়ুদূষণের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

আমরা মনে করি যেসব কারণে অতিরিক্ত বায়ুদূষণ হচ্ছে সেসব কারণগুলো চিহ্নিত করে দ্রম্নত কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। একুশ শতকে বায়ুদূষণ জনস্বাস্থ্যের জন্য বিরাট এক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। এখনই যদি যথাযথ পদক্ষেপ না নেয়া যায় তা হলে ভবিষ্যতের জন্য বড় ধরনের বিপদ হিসেবে দেখা দেবে। সুতরাং সময় থাকতেই সাবধান হওয়া সমীচীন এবং এর কোনো বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<54204 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1