শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৭ কোটি মানুষ বাস্তুচু্যত

বিশ্ব নেতৃত্বকে উদ্যোগী হতে হবে
নতুনধারা
  ২১ জুন ২০১৯, ০০:০০

সারা বিশ্বে বিজ্ঞানের অগ্রগতির কথা অজানা নয়, তথ্য ও প্রযুক্তিরও জয়জয়কার, যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন এবং ইন্টারনেটের মাধ্যমে সারা বিশ্ব যেন আজ হাতের মুঠোয়। জীবন যাত্রার মান উন্নত ও সহজ হচ্ছে, বলা হচ্ছে আমরা বাস করছি সভ্য যুগে, তবু যুদ্ধ, নিপীড়ন থেমে নেই। চলছে সংঘর্ষ, মানুষের হিংস্রতার খবরও সামনে আসছে- যা সন্দেহাতীতভাবেই ভয়াবহ পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে। সম্প্রতি জানা গেল যুদ্ধ, নিপীড়ন এবং সংঘাতের কারণে বিশ্বজুড়ে বাস্তুচু্যত হওয়া মানুষের সংখ্যা গত বছর সাত কোটি ছাড়িয়ে গেছে। প্রায় ৭০ বছরের মধ্যে এ সংখ্যা সর্বোচ্চ।

আমরা বলতে চাই, এত উন্নয়ন আর অগ্রগতির পরেও যদি ৭ কোটির বেশি মানুষ বাস্তুচু্যত হয় তবে এর চেয়ে বেদনাদায়ক ঘটনা আর কিবা হতে পারে! আমরা মনে করি, সভ্যতার এই অগ্রগতির কালে বিশ্ব নেতৃত্বকে বাস্তুচু্যত হওয়ার বিষয়টি আমলে নিয়ে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। মানুষ শিক্ষিত হচ্ছে, নিত্য নতুন উদ্ভাবন জীবনকে সহজ করে তুলছে- অথচ বিশ্বায়নের এই যুগে বিপুলসংখ্যক মানুষ তার মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হবে এটা কাম্য হতে পারে না। প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর বুধবার তাদের এক বার্ষিক প্রতিবেদনে বিশ্বজুড়ে বাস্তুচু্যত হওয়া মানুষের সংখ্যা গত বছর সাত কোটি ছাড়িয়ে গেছে বলে জানিয়েছে। এই তথ্য পর্যবেক্ষণ আরো বেশি ভয়াবহ যে বিষয়টি সামনে আসছে তা হলো, বিশ্বে বাস্তুচু্যত হওয়া এ মানুষদের অর্ধেকই শিশু! আর ধনী পশ্চিমা দেশগুলো নয়; বরং উন্নয়নশীল দেশগুলোই এ বিপুলসংখ্যক শরণার্থীর বোঝা বহন করছে।

সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেয়া জরুরি- জেনেভায় 'গেস্নাবাল ট্রেন্ড' শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপো গ্র্যান্ডি বলেছেন, 'দুর্ভাগ্যজনকভাবে বৈশ্বিক প্রবণতা ভুল দিকেই যাচ্ছে. নতুন করে যুদ্ধ আর সংঘাত বাড়ছে এবং তৈরি করছে নতুন নতুন শরণার্থী যারা আগের শরণার্থীদের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছেন, অথচ পূর্ববর্তীদের সমস্যার কোনো কিনারা হয়নি।' আমরা মনে করি, সৃষ্ট পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় বের করতে হবে এবং সুষ্ঠুভাবে তা বাস্তবায়ন করতে হবে। কেননা, এই পরিস্থিতির উন্নয়ন না হলে বিশ্ব আরো গভীর সংকটের দিকেই যাবে। আর যেখানে বাস্তুচু্যত মানুষের অর্ধেকই শিশু- সেখানে তাদের ভবিষ্যৎ হবে অন্ধকারাচ্ছন্ন এমন আশঙ্কা অমূলক নয়। মনে রাখা দরকার, প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৮ সালে গৃহহীন মানুষের সংখ্যা সাত কোটি ৮০ লাখে পৌঁছেছে। যা ২০১৭ সালের চেয়ে সংখ্যায় দুই কোটি ৩০ লাখ বেশি। প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন গড়ে ৩৭ হাজার মানুষ বাড়িঘর ছাড়তে বাধ্য হচ্ছে। এ সংখ্যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার তুলনায় বাস্তুচু্যত হওয়া মানুষের সংখ্যা দ্রম্নতগতিতে বাড়ার কথাও বলছে। সঙ্গত কারণেই এর ভয়াবহতা আমলে নেয়া এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা জরুরি।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, ২০১৮ সালে বাস্তুচু্যত মানুষের সংখ্যা ৭ কোটি ছাড়ালেও প্রকৃত সংখ্যাটা আরো বেশি হবে বলেই জানিয়েছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা। এ ছাড়া আমলে নেয়া দরকার, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে কারণ ভেদে গৃহহীনদের তিনটি প্রধান দলে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম দলে যুদ্ধ, সংঘাত বা নির্যাতন থেকে বাঁচতে বাড়িঘর ছেড়ে পালানো মানুষদের রাখা হয়েছে। দ্বিতীয় দলে আছে আশ্রয় প্রার্থীরা। তৃতীয় দলে আছেন ওই সব গৃহহীন মানুষ যারা বাস্তুচু্যত হয়ে নিজ নিজ দেশের ভেতরই আশ্রয় নিয়ে আছেন। আমরা মনে করি, বাস্তুচু্যত সংক্রান্ত সামগ্রিক পরিস্থিতি উদ্বেগজনক- ফলে যত দ্রম্নত সম্ভব এই উদ্বেগ নিরসনে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি প্রত্যাশিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<54539 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1