বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বায়ু দূষণ

রোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ২৫ জুন ২০১৯, ০০:০০

বায়ু দূষণ সংক্রান্ত যে তথ্য সামনে আসছে তা নেতিবাচ বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে। বায়ু দূষণের কারণে মানুষের মৃতু্য হচ্ছে এই বিষয়টি শুধু দুঃখজনকই নয়, বরং অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলেই আমরা মনে করি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, বায়ু দূষণের কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজার মানুষের মৃতু্য। আর এশিয়ায় এ সংখ্যা প্রায় ২৬ লাখ। বিশ্বজুড়ে প্রতি ৮ জনের মধ্যে ১ জনের মৃতু্যর কারণ এই বায়ু দূষণ। এ ছাড়াও যে ১০টি রোগের কারণে বাংলাদেশে বেশি মানুষের মৃতু্য হয়, তার মধ্যে পাঁচটিই বায়ু দূষণজনিত রোগ। সঙ্গত কারণেই বায়ু দূষণের কবল থেকে মুক্তি পেতে করণীয় নির্ধারণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়নে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার কোনো বিকল্প নেই বলেই প্রতীয়মান হয়।

প্রসঙ্গত, বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে শনিবার আয়োজিত এক সেমিনারে পরিবেশ আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বায়ু দূষণের এসব তথ্য জানিয়েছেন। 'আসুন, বায়ু দূষণ রোধ করি' স্স্নোগানে পরিবেশ অধিদপ্তর মিলনায়তনে 'বায়ু দূষণ ও করণীয়' শীর্ষক একটি সেমিনারের আয়োজন করা হয়। আমরা বলতে চাই, বায়ু দূষণের কারণে বাংলাদেশে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজার মানুষের মৃতু্য হয়- এই বিষয় এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, বায়ু দূষণের ভয়াবহতা অনুধাবন করে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা। মনে রাখতে হবে, বায়ু দূষণের প্রশ্নে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে থাকেন শহুরে জনগণ এবং শিশু, দারিদ্র্য এবং বয়স্ক নাগরিকরা।

বলার অপেক্ষা রাখে না যে, রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বায়ু দূষণ পরিস্থিতিতে এর আগে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছিল- ইটভাটা ছাড়াও রাস্তায় দীর্ঘ যানজটে আটকে থেকে জ্বালানি পুড়ছে গাড়িতে- তা থেকে বাতাসে উচ্চমাত্রায় ছড়িয়ে পড়ছে সালফার। বায়ু দূষণের জন্য নির্মাণকাজকে বড় ধরনের দূষণের নিয়ামক হিসেবেও চিহ্নিত করা হয়েছিল। এ ছাড়া ফিটনেসবিহীন যানবাহনও বায়ু দূষণের জন্য দায়ী। বিশেষজ্ঞরা বারবারই বলছেন, এ পরিস্থিতি খুবই গুরুতর। বায়ু দূষণের শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। নানা অসুখে-বিসুখে ভুগছেন নগরবাসী। চিকিৎসকদের মতে, বায়ু দূষণের কারণে অনেক দূরারোগ্য ব্যাধির জন্ম হতে পারে মানবদেহে। ফলে পরিস্থিতি কতটা আশঙ্কাজনক হতে পারে তা আমলে নেয়া অপরিহার্য।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হক বলেছেন, পরিবেশ রক্ষার দায় সবচেয়ে বেশি সরকারের। কারণ ব্যক্তি পর্যায় থেকে সরকারের পদক্ষেপে অথবা দূষণকারী ব্যক্তি পর্যায়ের কর্মকান্ডে সরকারের নির্লিপ্ততার জন্যই পরিবেশ দূষিত হচ্ছে। এ ছাড়া এমনটিও আলোচনায় এসেছে যে, উন্নয়ন করতে গিয়ে পরিবেশকে দূষিত করে ফেলা হচ্ছে। তবে এটা ইতিবাচক- পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক পরিবেশ সুরক্ষায় নিজ অধিদপ্তরের নানান পদক্ষেপ তুলে ধরেছেন, যেখানে জানা যাচ্ছে, পরিবেশ ও বায়ু দূষণের বিভিন্ন সোর্স চিহ্নিত করে সেগুলোকে আইনের আওতায় আনা হয়েছে। আগে বায়ু দূষণের সবচেয়ে বড় সোর্স ছিল ইটভাটা। এখন সেটি নেই। তিনি বলেছেন 'প্রায় ৭১ শতাংশ ইটভাটাকে আমরা পরিবেশবান্ধব করেছি অথবা কম দূষণের তালিকায় নামিয়ে আনতে পেরেছি। দেশের ৩৩টি জেলায় এখন পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যালয় আছে, প্রতিটি জেলায় পরিবেশ আদালত আছে। তবে এটা ঠিক যে, আমাদের আরও কাজ করার আছে।'

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, সার্বিক অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সতর্ক হতে হবে এখনই। বায়ু দূষণের অন্যতম উৎসগুলো চিহ্নিত করতে হবে এবং সেই মোতাবেক উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। উন্নয়ন আর শিল্পায়ন অবিচ্ছেদ্য। শিল্পায়ন থাকলে দূষণ থাকবে, এ কথাও সত্য। তবে দূষণকে রাখতে হবে নির্দিষ্ট সহনীয় মাত্রায়। বায়ু দূষণ রোধে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ নিশ্চিত হোক এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<55180 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1