মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিক্ষার্থী নির্যাতন

উচ্চ আদালতের নির্দেশ উপেক্ষিত
নতুনধারা
  ২৬ জুন ২০১৯, ০০:০০

উচ্চ আদালত কর্তৃক দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব ধরনের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি নিষিদ্ধ ঘোষণা এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক এতদসংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করে নির্দেশ প্রদানের পরও থেমে নেই শিক্ষার্থী নির্যাতন। প্রায়ই এই ধরনের ঘটনা ঘটছে। ঠুনকো কারণে শিক্ষকরা শিক্ষার্থীদের অমানুষিক নির্যাতন করে থাকে। যা অমানবিকতা ও বর্বরতার শামিল। শিক্ষকরা আগের সেই আদর্শিক জায়গায় নেই। তারা নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে। তারা ছাত্রীকে ধর্ষণ পর্যন্ত করছে। তারা জড়িয়ে পড়েছে চুরি দুর্নীতিতে। তাদের নৈতিক স্খলন ঘটেছে। শিক্ষকরা এখন বিতর্কিত এবং ধীরে ধীরে সমাজে অগ্রহণযোগ্য হয়ে উঠছে।

\হএক প্রতিবেদনে প্রকাশ, কিশোরগঞ্জের পাকুন্দিয়ায় এক মাদ্রাসা শিক্ষকের ছোড়া বেতের আঘাতে ইমরান (১১) নামের এক শিক্ষার্থীর ডান চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম হাফেজ মাহমুদ। অন্যদিকে পড়া না পারায় জোড়া বেত দিয়ে পিটিয়ে ছাত্রী সাদিয়া আক্তারের হাত ভেঙে দিয়েছেন এক শিক্ষিকা। ঘটনার পর থেকে শিক্ষিকা জোহরা মোস্তারি মেরী মাদ্রাসায় অনুপস্থিত রয়েছেন। পরপর দুটি ঘটনা অত্যন্ত অমানবিক ও বেদনাদায়ক। গত বছর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৭১ শিক্ষার্থী নির্যাতনের শিকার হয়েছে। যার মধ্যে দুই শিক্ষার্থী নির্যাতনের পর আত্মহত্যা করেছে। এই ধরনের সংবাদ অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

উলেস্নখ্য, ২০১১ সালে জনস্বাস্থ্য রক্ষা করা এক মামলার সূত্র ধরে উচ্চ আদালত দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সব ধরনের শারীরিক ও মানসিক শাস্তি নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। এরপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় এতদসংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করে। পরিপত্রে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এই নির্দেশ মেনে চলার জন্য বলা হয়। তা সত্ত্বেও নিয়মিতভাবে শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। এটা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে উচ্চ আদালত ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ শিক্ষকরা পরোয়া করছে না। তারা চলছে তাদের মতো করে। এটা এক ধরনের ধৃষ্টতা।

সরকার দেশের শিক্ষার উন্নয়নে যথেষ্ট আন্তরিক হলেও অঘটন শামাল দিতে পারছে না। মূলত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নির্লিপ্ত মনোভাবের কারণেই শিক্ষার্থী নির্যাতন বাড়ছে। এ ব্যাপারে মন্ত্রণালয়ের অধিক মনোযোগী হওয়া উচিত। গ্রহণ করা উচিত কঠোর পদক্ষেপ।

মনে রাখা দরকার, শিক্ষা খাত নিয়ে কোনো ধরনের সংকট তৈরি হওয়ার অর্থ হতে পারে ভবিষ্যৎ নাগরিকদের অন্ধকারের পথে ঠেলে দেয়া। বছরের প্রথম দিনে শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনামূল্যে বই বিতরণ করা সরকারের এক বড় সাফল্য। এ কার্যক্রমের জন্য প্রধানমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী ধন্যবাদ পাওয়ার যোগ্য। তবে এ কার্যক্রম ম্স্নান হয়ে যাচ্ছে এই সব অঘটনের কারণে।

আমাদের প্রত্যাশা ও দাবি, যে বা যারা এই অমার্জনীয় অপরাধের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। না হলে এটা জাতির জন্য কলঙ্ক হিসেবে থেকে যাবে। শিক্ষার্থীরা যদি সুষ্ঠু পরিবেশে সঠিক শিক্ষায় শিক্ষা লাভ করতে না পারে তা হলে তারা সুনাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে কী করে। তাই সরকারের উচিত শিক্ষা খাতের দিকে বিশেষ মনোযোগ দেয়া এবং শিক্ষার্থী নির্যাতন বন্ধ করা। শিক্ষা ক্ষেত্রে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য এর কোনো বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<55257 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1