বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আওয়ামী লীগের গৌরবময় পথচলার ৭০ বছর প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি

বহু ঘাত-প্রতিঘাত চড়াই-উতরাইয়ে আওয়ামী লীগ আজ বর্তমান অবস্থানে এসেছে। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র হয়েছে। সবকিছু রুখে দিয়ে আওয়ামী লীগ জনগণের দল হিসেবে আজ প্রতিষ্ঠিত। আওয়ামী লীগ মাটি ও মানুষের দল। স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতির ক্রান্তিকালে আলোকবর্তিকা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ শক্ত হাতে দলের হাল ধরেছেন। শেখ হাসিনা নেতৃত্বে আছেন বলেই দেশ ও জাতি নিরাপদ রয়েছে।
ডা. এস এ মালেক
  ০৬ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

প্রাচীন ও প্রবীণতম রাজনৈতিক দল বলতে এ দেশে আওয়ামী লীগকেই বোঝায়। পাকিস্তানের ২৩ বছর আর বাংলাদেশের ৪৭ বছর এই ৭০ বছর ধরেই এ দেশে আওয়ামী লীগ গণমানুষের রাজনৈতিক দল হিসেবে সুপরিচিত। যদিও ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন রোজ গার্ডেনে আওয়ামী মুসলীম লীগ নামে এর জন্ম হয়। জন্মের আগের রাজনৈতিক শর্তগুলো কিন্তু দেশ বিভাগের সময় কলকাতাতেই বিদ্যমান ছিল। প্রকৃত আওয়ামী লীগের নেতারা দ্বি-জাতিতত্ত্বের ভিত্তিতে ভারত বিভাগকে মেনে নিতে পারেননি। বঙ্গবন্ধু তো কলকাতার বেকার হোস্টেলে তার বন্ধুদের বলেছিলেন, 'পাকিস্তান সৃষ্টির পরই উপলব্ধি করেছি, এই পাকিস্তান বাঙালিদের জন্য হয়নি। একদিন বাঙালির ভাগ্য নিয়ন্তা বাঙালিদের হতে হবে। সেই লক্ষ্য সামনে নিয়েই ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা করেছি'।

শুধু বঙ্গবন্ধু নন, কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা এরূপ দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েই পাকিস্তানে প্রবেশ করেছিলেন। অন্যদের কথা বিবেচনায় না নিলেও বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে বলা যেতে পারে. ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্র পাকিস্তান মুসলমানদের জন্য সৃষ্টি হলো, খাঁটি বাঙালি বঙ্গবন্ধু তাকে বাঙালি জাতিসত্তার প্রতি হুমকি হিসেবে দেখেছিলেন। তাই বাঙালি জাতিসত্তা যাতে পাকিস্তানি জাতিসত্তায় বিলীন হয়ে না যায়, সচেতনভাবেই তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। তার এই অনুভূতির অভিব্যক্তি ঘটেছিল পাকিস্তান সরকার যখন বাংলা ভাষার ওপর আগ্রাসন চালালো। পাকিস্তানের জন্মের পর হতেই পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ব বাংলাকে শোষণের চারণভূমি হিসেবে গণ্য করেন। সেই ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৭১ পর্যন্ত পাকিস্তানি শাসন ও শোষকদের নির্মম শোষণের ক্ষেত্র ছিল তৎকালীন পূর্ব বাংলা ও বাঙালি। বাঙালি মুসলমানদের তারা দ্বিতীয় শ্রেণির নাগরিক ও বাঙালি হিন্দুদের ভারতের চর বলে আখ্যায়িত করেছিলেন। পাকিস্তানি শাসকরা ভালো করে জানতেন, যে বাস্তবতার নিরীখে পাকিস্তানের জন্ম হলো, পাকিস্তান একক রাষ্ট্র হিসেবে টিকতে পারে না। পূর্ব বাংলা একদিন পাকিস্তান থেকে পৃথক হবেই। তাই তারা যে রাজনৈতিক কূটকৌশল অবলম্বন করে তার লক্ষ্য ছিল যতদূর সম্ভব পূর্ব বাংলার সম্পদে পশ্চিম পাকিস্তানের সমৃদ্ধি ও উন্নয়ন। এই কারণে পাকিস্তানের দুই অঞ্চলের মধ্যে অর্থনৈতিক বৈষম্য দ্রম্নত বৃদ্ধি পায়। যে মহান নেতা এই ষড়যন্ত্র বুঝতে পেরে এর বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নিলেন. তিনি হলেন শেখ মুজিব, মুজিবভাই, শেখ সাহেব, বঙ্গবন্ধু, জাতির পিতা ও সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। এত বড় বাঙালি জাতিসত্তায়ই আর কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না। বাঙালিত্ব সত্তা বজায় রাখতে তাকে এত বড় নেতাই পরিণত করেছে।

একথা ঠিক যুক্ত ভারতে মুসলিম লীগ ছিল মুসলমানদের রাজনৈতিক সংগঠন। এটা ছিল নবাব, খান বাহাদুর, জমিদার ও আভিজাত্য শ্রেণির মানুষের সংগঠন। গরিব, দুঃখী মানুষের সঙ্গে এই দলের কোনো সম্পর্কই ছিল না। মুসলিম লীগের সময়ে পাকিস্তান আন্দোলন হয়েছে। শেখ মুজিব একজন তরুণ নেতা হিসেবে এই আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাবের ভিত্তিতে স্বাধীনতা অর্জন, তা ষড়যন্ত্রের কারণে ব্যর্থ হওয়ায়, খাঁটি বাঙালি যারা ছিলেন, তারা পাকিস্তান নামক ধর্ম রাষ্ট্রকে মনেপ্রাণে গ্রহণ করতে পারেননি। সাম্প্রদায়িকতা পুষ্ট ধর্মভিত্তিক দল মুসলিম লীগ, স্বাধীন পাকিস্তান রাষ্ট্রটি ধর্ম রাষ্ট্রে রূপান্তরিত করার লক্ষ্য নিয়ে অগ্রসর হয়। এখান থেকেই বিরোধের সূত্রপাত। বাঙালি ভাষা, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও আচার-আচরণভিত্তিক জাতিসত্তায় যারা বিশ্বাসী, তারা বাঙালি জাতিসত্তার পুনর্জাগরণের জন্য দৃঢ় সংকল্পবদ্ধ হলেন। এই কারণেই সাম্প্রদায়িক মুসলিম লীগ হতে অপেক্ষাকৃত কম সাম্প্রদায়িক আওয়ামী মুসলিম লীগের জন্ম হয়। পরে সাম্প্রদায়িকতা দূর করার জন্য মুসলিম শব্দটি বাদ দিয়ে ধর্ম নিরপেক্ষ দল হিসেবে আওয়ামী লীগ সৃষ্টি হয়। সুতরাং জন্মলগ্ন থেকেই আওয়ামী লীগ একটি আদর্শিক রাজনৈতিক দল। পাকিস্তানপন্থিদের থেকে আওয়ামী লীগের পার্থক্য হচ্ছে- আওয়ামী লীগ ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থায় বিশ্বাসী নন। দলটি কখনো মনে করে না ধর্ম রাষ্ট্রব্যবস্থার নিয়ন্ত্রক হোক। কেননা রাষ্ট্রে সব ধর্ম ও বর্ণের মানুষ বসবাস করে। তাই কোনো এক বিশেষ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর রাষ্ট্রব্যবস্থা গড়ে উঠলে, তা অন্য ধর্মের মানুষের মেনে নেয়া সম্ভব নয়। সাম্প্রদায়িতার বিষবাষ্প এখান থেকেই উদ্ভব। স্বাধীন বাংলাদেশ এমন একটা রাষ্ট্রব্যবস্থা যা ছিল সব ধর্মের মানুষের মিলনস্থল। এখানে সব মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে, রাষ্ট্র কোনো বিশেষ ধর্মের মানুষের পৃষ্ঠপোষকতা করবে না। অর্থাৎ সামগ্রিক অর্থে বাঙালিরা সম্মিলিতভাবে তাদের প্রয়োজনে দেশটি স্বাধীন করেছে। তাই সবার রাজনৈতিকভাবে মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ এবং সংবিধানে সব মানুষের সম্মান ও মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করা হয়েছে।

বাংলাদেশ নামক স্বাধীন রাষ্ট্রটি ১৯৭১ সালে ২৬ মার্চ গঠিত হয়েছে। সে রাষ্ট্রের মূল অঙ্গীকার- অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্ম নিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র এবং সামাজিক ন্যায়-বিচার। প্রায় হাজার বছর ধরে বাঙালি এসব মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার জন্য সংগ্রাম করেছে। যে অর্থে বাংলাদেশ আজ স্বাধীন. সে অর্থে বাংলাদেশ এর আগে আর কখনো স্বাধীন ছিল না। তাই বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর বাঙালি জাতির পিতা যে মূল্যবোধের জন্য বাঙালি সহস্র বছর সংগ্রাম করেছে, সেই মূল্যবোধগুলো বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের শাসন মূলে অন্তর্ভুক্ত করার যে পরিকল্পনা নিয়ে ছিলেন, তার স্বার্থকরূপ দিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। তাই দল হিসেবে আওয়ামী লীগের গুণগত অবস্থান আর কাউকে বুঝিয়ে বলার অবকাশ নেই। বাস্তবতা হচ্ছে- একটা রাজনৈতিক দলের আদর্শই যথেষ্ট নয়, সেই আদর্শ বাস্তবায়নের জন্য যোগ্য নেতৃত্ব, সংগ্রাম, আত্মত্যাগ, সঠিক সময়ে বাস্তবতার উপলব্ধি ও সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে তার বাস্তবায়ন প্রয়োজন। সবচেয়ে বড় প্রয়োজন নেতৃত্ব। এই কথা র্নির্দ্বিধায় বলা যায় ওই ক্রান্তিকালে বঙ্গবন্ধুর মতো সঠিক নেতৃত্ব যদি বাঙালি জাতি না পেত, স্বাধীন বাংলাদেশ আমরা কখনো পেতাম না। আপনারা দেখেছেন সেই প্রথম থেকেই দলে বড় বড় অনেক নেতা ছিলেন। ১৯৫৪ সালে অধিকাংশ নেতাই ঐক্যবদ্ধ ছিলেন। তার পর থেকে আন্দোলন-সংগ্রামের ধারাবাহিকতাই টিকে থাকতে না পেরে অনেক নেতাই ঝরে গেছেন, আপস করেছেন, আত্মসর্ম্পণ করেছেন ও প্রতিপক্ষে যোগ দিয়েছেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানই একমাত্র নেতা, বাংলাদেশ ও বাঙালি স্বার্থের ক্ষেত্রে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একের পর এক সংগ্রাম করে বিজয়ী হয়েছেন। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে দল হিসেবে আওয়ামী লীগের সফলতার মূল কারণ হচ্ছে- আপসহীন সংগ্রাম, নেতৃত্বে দূরদর্শিতা, জনগণের মনোভাব উপলব্ধিকরণ, অত্যাচার নিপীড়ন সহ্য করে ও চরম শোষণের শিকার হয়েও সংগঠন থেকে আদর্শচু্যত না হওয়ায়। ধৈর্য ও সাহসিকতার সঙ্গে সব কিছু মোকাবেলা করা। এটাই বঙ্গবন্ধু ও দলের চরম সফলতার পিছনে শক্তি জুগিয়েছে। আওয়ামী লীগ একটা প্রগতিশীল, উদার গণতান্ত্রিক ও মানবতাবাদী দল। এটা সব সময়ই সামনে এগিয়ে চলেছে। পশ্চাৎপদতা অনুসরণ করেনি। তাই আওয়ামী লীগের জন্য গণতন্ত্র অত্যন্ত প্রয়োজন, তবে শেষ কথা নয়। যে গণতন্ত্র সাধারণ মানুষের আশা পূরণ করে না, তা বঙ্গবন্ধুর নিকট গ্রহণযোগ্য ছিল না এবং ছিল না বলেই তিনি দেশ স্বাধীন হওয়ার তিন বছর পর আওয়ামী লীগ পরিবর্তন করে সংবিধান পরিবর্তন করে ও নতুন আইন পাস করে ১৯৭৫ সালের ২৫ জানুয়ারি মহান সংসদে। বাকশাল প্রতিষ্ঠা ছিল একটি দর্শন। এটা কোনো একনায়কতন্ত্র ছিল না। বাকশাল প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু অর্থনৈতিক মুক্তি সংগ্রামের ডাক দেন এবং দ্বিতীয় বিপস্নবের কর্মসূচি ঘোষণা করেন। এই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্য বৃহৎ জাতি ঐকমত্যের প্রতীক বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ (বাকশাল) জাতীয় দল গঠন করেন। বঙ্গবন্ধু ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণে তিনি শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের মুক্তির জন্য যে দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন, সেই কর্মসূচি বাস্তবায়নের জন্যই তিনি এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলেন। বঙ্গবন্ধু আওয়ামী লীগের আন্দোলনের কর্মসূচি ছিল মেহনিত মানুষের মুক্তি। জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সেই লক্ষ্য নিয়েই কাজ করেছেন। বঙ্গবন্ধুর চিন্তাধারাই কোনো রাজনৈতিক দল নির্দিষ্ট সীমারেখায়ই আবদ্ধ থাকতে পারে না। জনগণের প্রয়োজনে রাজনৈতিক দলে দাবি-প্রকৃতি ভিন্নতর হতে পারে। বঙ্গবন্ধু ভালো করেই জানতেন দেশ স্বাধীন হলে বাঙালি উচ্চবিত্ত ও ধনী শ্রেণি পাকিস্তানি শাসকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হবে। বাস্তবে তা-ই ঘটেছে। তখনকার ২৩ পরিবারের বিপরীতে ২৩ হাজার কোটি পরিবার গঠিত হয়েছে। রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় কৃষক শ্রমিকের নিয়ন্ত্রণের জন্য তিনি আওয়ামী লীগের নাম পরিবর্তন করে বাকশাল করেছিলেন। রাষ্ট্র, রাজনীতি ও সমাজ ক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু যেসব নিয়ম পদ্ধতি প্রবর্তন করেন, তার মূল উদ্দেশ্য ছিল সমাজের দুর্বল শ্রেণির নির্যাতন চিরতরে বন্ধ করা। আর এই রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে শুধু খুনি মুশতাক ও ফারুক চক্রই নয়, এ দেশে পুঁজিবাদদের ধারক ও বাহকরা সম্মিলিতভাবে সাম্রাজ্যবাদের সহযোগিতায় বঙ্গবন্ধুকে অত্যন্ত নির্মমভাবে হত্যা করে। আওয়ামী লীগের সত্যিকারের ইতিহাস মূল্যায়নের দার্শনিকভাবে বিচার বিশ্লেষণ না করে, শুধু ঘটনার বিশ্লেষণ যথার্থ নয়। আসছে জাতির পিতার শততম জন্মবার্ষিকী। এ দেশের প্রকৃত বাঙালি বুদ্ধিজীবীরা যেন সচেতনভাবে লক্ষ্য রাখেন। বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে তারই সুযোগ্য কন্যা দেশরত্ন শেখ হাসিনা দেশ পরিচালনা করছেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ সমাপ্তকরণে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। বিশ্বে বাংলাদেশ আজ উন্নয়নের রোল মডেল। জননেত্রী শেখ হাসিনা যে পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন, তা সফল হলে বাংলাদেশ অবশ্যই উন্নতসমৃদ্ধ দেশ হবে। তবেই বঙ্গবন্ধুর যে আদর্শকে সামনে রেখে দেশ গঠন করতে চেয়েছিলেন তার বাস্তবায়নে শেখ হাসিনাকে আরও কঠোর ও কৌশলী হতে হবে। তিনি একজন সৎ, প্রাজ্ঞ, যোগ্য নেত্রী। কিন্তু বিপরীতমুখী স্রোতধারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শের অবস্থান নিয়েছেন, তারা বাংলাদেশকে পুঁজিবাদী রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। তাদের বিরুদ্ধে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে দেশ ও জাতির স্বার্থে এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রকৃত বাস্তবায়ন করতে হলে অবশ্যই কঠোর হওয়া প্রয়োজন। শেখ হাসিনা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ পিতার আদর্শ বাস্তবায়ন করতে চান। তার ওপর জনগণের আস্থা রয়েছে। সেই আস্থা যাতে স্থিতিশীল সদূরপ্রসারী হয়, সেই জন্য কাজ করতে হবে। তিনি একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক। তার হারাবার কিছু নেই। সহস্র বছরে একজন বঙ্গবন্ধু জন্ম হয়েছে, শেখ হাসিনাও শত বছরের এক মহীয়সী নারী।

বহু ঘাত-প্রতিঘাত চড়াই-উতরাইয়ে আওয়ামী লীগ আজ বর্তমান অবস্থানে এসেছে। আওয়ামী লীগকে নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র হয়েছে। সবকিছু রুখে দিয়ে আওয়ামী লীগ জনগণের দল হিসেবে আজ প্রতিষ্ঠিত। আওয়ামী লীগ মাটি ও মানুষের দল। স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী রাজনৈতিক দল হিসেবে জাতির ক্রান্তিকালে আলোকবর্তিকা হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা আজ শক্ত হাতে দলের হাল ধরেছেন। শেখ হাসিনা নেতৃত্বে আছেন বলেই দেশ ও জাতি নিরাপদ রয়েছে।

জাতির পিতা দুইটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতি করেছেন। একটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা, আর একটি অর্থনৈতিক মুক্তি। তিনি আমাদের স্বাধীনতা দিয়েছেন কিন্তু অর্থনৈতিক মুক্তি দিয়ে যেতে পারেননি। সেই কাজ দক্ষতা, নিষ্ঠা ও সততার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা করে চলেছেন। বাঙালির ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ এবং আওয়ামী লীগ শব্দ তিনটি সমর্থক শব্দ। ৭১তম বর্ষে পদার্পণে সংগঠনের সাফল্য কামনা করছি এবং যাদের অবদান ও ত্যাগের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আজ সমৃদ্ধ হয়েছে, তাদের সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে লেখা শেষ করছি।

ডা. এস এ মালেক: রাজনীতিক ও কলাম লেখক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<56831 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1