শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বজ্রপাতে মৃতু্য সঠিক পদক্ষেপ নিন

নতুনধারা
  ০৮ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

সাম্প্রতিক সময়ে যেন বজ্রপাত এক ধরনের দুর্যোগ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। আর এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, বজ্রপাতের কারণে মৃতু্যর সংখ্যাও বাড়ছে ক্রমাগত। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা যাচ্ছে, মে ও জুন মাসে বজ্রপাতে সারা দেশে ১২৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এ ছাড়া এ দুই মাসে বজ্রাঘাতে আহত হয়েছেন ৫৩ জন। নিহতদের মধ্যে ২১ জন নারী ও সাতজন শিশু। সবচেয়ে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে কিশোরগঞ্জে। এ জেলায় গত দুই মাসে বজ্রাঘাতে নিহত হয়েছেন ১৬ জন। এ ছাড়া সাতক্ষীরা, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, নওগাঁ, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও টাঙ্গাইল জেলায় বজ্রপাতে বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। উলেস্নখ্য, শনিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে সেভ দ্য সোসাইটি অ্যান্ড থান্ডারস্টর্ম অ্যাওয়ারনেস ফোরাম। মূলত ১০টি জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক পত্রিকা, কয়েকটি অনলাইন নিউজ পোর্টাল ও টেলিভিশনের স্ক্রল থেকে বজ্রপাতে হতাহতের সব তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।

লক্ষণীয় যে, এমন বিষয়ও সামনে এসেছে- ধানকাটার সময় ও বৃষ্টিতে মাছ ধরার সময় বজ্রপাতের ঘটনা বেশি ঘটেছে। এ ছাড়া মাঠে গরু আনতে গিয়ে এবং টিন ও খড়ের ঘরে অবস্থান ও ঘুমানোর সময় বজ্রাঘাতে বেশি মানুষ মারা গেছেন। বৃষ্টি ও বজ্রপাতের সময় অজ্ঞতাবশত লম্বা গাছের নিচে আশ্রয় নেয়ার সময় গাছে বজ্রপাত হওয়ায় মৃতু্যর ঘটনাও ঘটেছে। আমরা মনে করি, এই পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে এবং যত দ্রম্নত সম্ভব সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে আবহাওয়ার পরিবর্তন, লম্বা গাছের সংখ্যা কমে যাওয়া, আকাশে কালো মেঘের পরিমাণ ও মেঘে মেঘে ঘর্ষণের সংখ্যা বেড়ে যাওয়া, যত্রতত্র মোবাইল ফোনের টাওয়ার বসানো এবং বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণেই অস্বাভাবিকহারে বজ্রপাত বাড়ছে এমনটি আলোচনায় এসেছে। আমরা মনে করি, সৃষ্ট পরিস্থিতিতে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার বজ্রপাতের ভয়াবহতাকে আমলে নেয়া এবং জনসাধারণের মধ্যে এর পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় সম্পর্কিত প্রচার-প্রচারণা চালানো। যারা ঘরের বাইরে ক্ষেত-খামারে কাজ করেন তারা বেশি ঝুঁকিতে থাকে। যে স্থান বা বস্তু যত উঁচু সে জায়গা মেঘের তত কাছাকাছি থাকায় সেখানে বজ্রপাতের আশঙ্কা তত বেশি থাকে, এ ছাড়া মৌসুমে ঘনকালো মেঘ দেখলেই সাবধান হতে হবে এবং বৃষ্টি শুরুর আগে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে হবে। মাঠের মধ্যে ফাঁকা জায়গা থাকলে যদি বজ্রপাত হওয়ার অবস্থা তৈরি হয় তাহলে কানে আঙুল দিয়ে নিচু হয়ে বসে থাকতে হবে। গাড়িতে থাকা অবস্থায় বজ্রপাতের পরিস্থিতি তৈরি হলে গাড়ির মধ্যে থাকা নিরাপদ। এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে মানুষকে সচেতন করতে হবে। বলার অপেক্ষা রাখে না, যেভাবে বজ্রপাতের ভয়াবহতা বাড়ছে তাতে দ্রম্নত এই বিষয়ে উদ্যোগী না হলে ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে থাকবে, যা কাম্য হতে পারে না।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, বজ্রপাত থেকে রক্ষা পেতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা জরুরি। এর অংশ হিসেবে তালগাছের চারা রোপণে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা থেকে শুরু করে প্রয়োজনীয় প্রচার-প্রচারণা অপরিহার্য। মনে রাখা দরকার, দুর্যোগকে এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই- কিন্তু যথাযথ উদ্যোগ নিলে ক্ষয়ক্ষতি কমানো সম্ভব। বজ্রপাতজনিত বিপদ মোকাবেলায় মানুষকে মানসিকভাবে প্রস্তুত রাখাসহ বজ্রপাতের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা ও সচেতনতার বিকল্প নেই। সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে সংশ্লিষ্টরা দ্রম্নত বজ্রপাতের ভয়াবহতাকে সামনে রেখে সব ধরনের উদ্যোগ গ্রহণ ও সুষ্ঠু বাস্তবায়নে কাজ করবে এমনটি আমাদের প্রত্যাশা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<57156 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1