মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

ডেঙ্গুর ভয়াবহতা

সচেতন ও সতর্ক হতে হবে
নতুনধারা
  ১৭ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

যতই দিন যাচ্ছে রাজধানীতে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা আশঙ্কাজনকহারে বাড়ছে। ডেঙ্গু ঢাকার বাইরেও ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে সারা দেশের মানুষ এক মহাতঙ্কের মধ্যে রয়েছে। এবার বর্ষা মৌসুম শুরু হওয়ার আগেই ডেঙ্গুর আগ্রাসন দেখা দিয়েছে। সরকারি হিসাবে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা ৪ হাজারের বেশি। চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনের হিসাবে দেখা যাচ্ছে দৈনিক গড়ে ১৪৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছে। এ বছরের জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। থেমে থেমে বৃষ্টির কারণে এডিস মশাবাহিত ডেঙ্গু জ্বরের প্রকোপ ক্রমেই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ২১৪ জন রাজধানীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ হিসাবে প্রতি ৭ মিনিটে কমপক্ষে একজন ডেঙ্গু জ্বরের রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। বর্তমানে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে মোট ভর্তি রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৭৫। এ ছাড়া হাসপাতালে ভর্তি না হয়ে চিকিৎসকের পরামর্শে অসংখ্য ডেঙ্গু জ্বরের রোগী বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ বছর ডেঙ্গুর ধরন পাল্টে গেছে। আগে যেমন তীব্র জ্বরের সঙ্গে গায়ে রেশ ওঠা, ঠোঁট ফেটে রক্ত বের হওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যেত, এবার সেসব লক্ষণ ছাড়াও অনেক রোগীই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন। ফলে জ্বর হলে ঘরে বসে চিকিৎসা না নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব দ্রম্নত বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কিংবা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত। অন্য এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, চলতি মাসের প্রথম ১৫ দিনেই এ মৌসুমের সর্বোচ্চ ২ হাজার ৪৬৬ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। তার মধ্যে জুন মাসে সর্বোচ্চ আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ১ হাজার ৭৫৯ জন। এ বিষয়ে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র সাঈদ খোকন বলেছেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় এরই মধ্যে ৬৭টি মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে। ৪৭৬টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যুক্ত করা হয়েছে। এরা ডেঙ্গুর বিষয়ে নাগরিকদের সচেতন করে তুলছে। আমরা মনে করি, মশার বংশ বাড়তে না দেয়ার জন্য সিটি করপোরেশনেরও বিশেষ দায়িত্ব রয়েছে। রাজধানীতে ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাবের জন্য মশা নিধনের ব্যর্থতাকে দায়ী করা হচ্ছে। দুই সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে মশা নিধনের ওষুধ ছিটানো হলেও তা পর্যাপ্ত নয়। অভিযোগ উঠেছে ভেজাল ওষুধের ব্যাপারেও। এ ব্যাপারে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কার্যকর উদ্যোগ নেয়ার জন্য উচ্চ আদালতের নির্দেশনাও রয়েছে।

এটা সত্য, শুধু রাজধানী নয়- বাইরেও ডেঙ্গুর থাবা বিস্তৃত হওয়ায় বাড়তি উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আশা করব, ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব রোধে মশা নিধনের বাড়তি ব্যবস্থা নেয়া হবে। গড়ে তোলা হবে নাগরিক সচেতনতা। এটা সবাই জানে, ডেঙ্গুর জন্য দায়ী এডিস মশা। বর্ষা মৌসুমে ছাদে বা ফুলের টবে পানি জমে থাকলে তা এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এডিস মশা দিনের বেলায় কামড়ায়। ফলে দিনের বেলায় যাদের ঘুমানোর অভ্যাস তাদের জন্য এডিস মশার শিকার হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে। চলতি বছর ডেঙ্গুর আগ্রাসন আরও বাড়তে পারে বলে ব্যাপকভাবে আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ বর্ষা মৌসুমের শুরুতে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা অন্য বছরগুলোর চেয়ে অনেক বেশি। পরিকল্পিত কার্যকর উদ্যোগই কেবল পারে ডেঙ্গুর ভয়াবহতা থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে। তবে এ ক্ষেত্রে নাগরিক সচেতনতা ও সতর্কতার বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<58522 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1