শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার ফল

মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করতে হবে
নতুনধারা
  ১৮ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

২০১৯ সালের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয়েছে। এতে দেশের সবগুলো শিক্ষা বোর্ডে গড় পাসের হার ৭৩.৯৩ শতাংশ। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেছে, ২০১৯ সালে আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে শুধু উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৭১ দশমিক ৮৫ শতাংশ। এর মধ্যে ফলের সর্বোচ্চ সূচক জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪১ হাজার ৮০৭ জন। অর্থাৎ, ১০ বোর্ডে যতজন জিপিএ-৫ পেয়েছেন, এর বেশির ভাগই এইচএসসি পরীক্ষার্থী। এ ছাড়া মাদ্রাসা ও কারিগরি মিলিয়ে এবার মোট জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৪৭ হাজার ২৮৬ জন।

প্রসঙ্গত উলেস্নখ্য যে, বুধবার সকাল ১০টায় গণভবনে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি ও সব বোর্ডের চেয়ারম্যানরা নিজ নিজ বোর্ডের ফলাফল প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। উলেস্নখ্য যে, চলতি বছরের উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট (এইচএসসি) ও সমমানের ফল নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এবারের ফল যথেষ্ট গ্রহণযোগ্য ও ভালো। তিনি বলেছেন, 'আমি মনে করি, শিক্ষার্থীরা সঠিকভাবে মনোযোগ দিলে তাদের ফল আরও ভালো হবে।' এ ছাড়া উন্নত ও সমৃদ্ধ জাতি বিনির্মাণে এবং ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত দেশ গড়তে শিক্ষা হলো সবচেয়ে প্রয়োজনীয় উপাদান এবং একটি শিক্ষিত জাতি একটি উন্নত, সমৃদ্ধ, দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত দেশ গড়ে তুলতে পারে- তার এমন বিশ্বাসের কথাও তুলে ধরেন। এ ছাড়া নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরীক্ষার ফল প্রকাশ করায় শিক্ষকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী।

আমলে নেয়া দরকার, গতবার আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ডের অধীনে গড় পাসের হার ছিল ৬৪ দশমিক ৫৫ শতাংশ। এইচএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েছিলেন ২৫ হাজার ৫৬২ জন। অর্থাৎ, এবার এইচএসসিতে পাসের হার ও জিপিএ-৫ দুটোই বেড়েছে। অন্যদিকে, এবার মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের অধীনে আলিম পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮৮ দশমিক ৫৬ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছেন ২ হাজার ২৪৩ জন। কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে এইচএসসি (বিএম) পরীক্ষায় গড় পাসের হার ৮২ দশমিক ৬২ শতাংশ এবং জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৩ হাজার ২৩৬ জন। আর আটটি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে ১০টি বোর্ডের অধীনে মোট পরীক্ষার্থী ছিলেন ১৩ লাখ ৩৬ হাজার ৬২৯ জন। এর মধ্যে উত্তীর্ণ হয়েছেন ৯ লাখ ৮৮ হাজার ১৭২ জন।

প্রসঙ্গত, আমরা বলতে চাই, শিক্ষার্থীরা ভালো ফলাফল করবে এটাই কাম্য। একইসঙ্গে মনে রাখতে হবে যে, কেবল ভালো ফল নয়, শিক্ষার্থীরা কতটুকু শিখছে, জীবন সম্পর্কে তাদের বোধ কতটুকু তৈরি হচ্ছে সেটা নিশ্চিত করাই শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। পাশাপাশি উত্তীর্ণদের উচ্চশিক্ষা নিশ্চিতের বিষয়েও যথাযথ গুরুত্ব দেয়া সমীচীন। স্মর্তব্য যে, একটি দেশের সামগ্রিক সমৃদ্ধি ও জনসাধারণের জীবন মান নিশ্চিত করতে সুশিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। বর্তমানে শিক্ষার অগ্রগতি হচ্ছে এবং নানাভাবে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। ফলে আজ যারা উত্তীর্ণ হচ্ছে এদের সুশিক্ষার আলোয় আলোকিত করতেও উদ্যোগ বজায় রাখতে হবে। শিক্ষার পরিবেশ নিশ্চিত করতে সামগ্রিক উদ্যোগ নিতে হবে। কেননা, অনেক ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাও ঘটে যা কাম্য নয়। যেমন উচ্চ বিদ্যাপীঠে অস্থিরতা কিংবা শিক্ষকরা বেতনের জন্য রাস্তায় আন্দোলন করেন, এর পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ শিক্ষাদানও কতটা ব্যাহত হয় সেটা বিবেচনায় নেয়া সঙ্গত। এ ছাড়া একদিকে হাজার হাজার স্নাত তৈরি হয়ে বেকার বসে থাকা, অন্যদিকে চাহিদামাফিক দক্ষ জনশক্তির জোগান দিতে না পারা- দ্বিমুখী জাতীয় ক্ষতি বলেই প্রতীয়মান হয়। ফলে উচ্চশিক্ষার বিষয়টিকে জাতীয় পরিকল্পনার অন্তভুর্ক্ত করার বিকল্প নেই। উত্তীর্ণরা যথাযথভাবে উচ্চশিক্ষা না পেলে তা কেবল ওই শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদেরই ক্ষতি নয়, রাষ্ট্র ও সমাজেরও বিরাট লোকসান।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, ভালো ফলাফলের দিকে যেমন গুরুত্ব দিতে হবে, তেমনি শিক্ষার্থীরা মানসম্মত শিক্ষা অর্জন করতে পারছে কী না তাও নিশ্চিত করতে হবে। এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না যে, আজকের শিক্ষার্থীদের হাতেই নির্ভর করবে দেশের আগামী দিনের ভবিষ্যৎ। সংশ্লিষ্টরা ভালো ফল অর্জনের পাশাপাশি সুশিক্ষা নিশ্চিত করার বিষয়টিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিক এটাই আমাদের প্রত্যাশা। এবার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হয়েছে, তাদের সবাইকে অভিনন্দন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<58636 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1