শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

বন্যায় রোগব্যাধি বাড়ছে

কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
নতুনধারা
  ২০ জুলাই ২০১৯, ০০:০০

কিছুদিন আগেই এমন আশঙ্কার বিষয় সামনে এসেছিল যে, এবার বন্যা ভয়াবহ রূপ নিতে পারে। আর বন্যা ভয়াবহ রূপ নিলে তার প্রভাব মানুষের জীবনে কতটা ভয়ঙ্করভাবে পড়তে পারে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। মনে রাখা দরকার, প্রাকৃতিক দুর্যোগকে এড়ানো না গেলেও উপযুক্ত পদক্ষেপ নিশ্চিত করার মধ্যদিয়ে ক্ষয়ক্ষতি অনেকটাই কমিয়ে আনা সম্ভব। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়ায় বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে বাড়ছে বানভাসির সংখ্যা। পস্নাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। অনেক স্থানে বাঁধ ভেঙে তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, ফসল ও পুকুরের মাছ। আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন বন্যাদুর্গতরা। আর খাবার ও বিশুদ্ধ পানির অভাবে কলেরা, ডায়রিয়াসহ ছড়িয়ে পড়ছে পানিবাহিত রোগ।

তথ্য মতে জানা গেছে, বন্যার পানির তোড়ে ভেসে যাচ্ছে বসতবাড়ি। বুধবার রাতে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুরের তাড়াই এলাকায় বাঁধ ভেঙে নতুন করে পস্নাবিত হয়েছে আরও ১০টি গ্রাম। পানিবন্দি ১১১ গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ। পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা না পেয়ে মানবেতর দিন যাপন করছেন তারা। এ ছাড়া কুড়িগ্রামে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীর পানি বেড়ে ৯ উপজেলার ৬ লাখ মানুষ বন্যার কবলে পড়েছেন। বেশির ভাগ বসতবাড়ি ডুবে গেছে। ঘরহারা মানুষ গবাদিপশু নিয়ে বাঁধ, রাস্তাঘাট, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও আশ্রয়কেন্দ্রগুলোতে ঠাঁই নিয়েছেন। যমুনা নদীর পানিও বেড়ে বিপদসীমার ১৬৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার খবর উঠে এসেছে। এতে জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ, ইসলামপুর, মাদারগঞ্জ ও মেলান্দ উপজেলাসহ ৬ উপজেলার ৫ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। ৩ শতাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। তলিয়ে গেছে ১৪ হাজার হেক্টর জমির ফসল। বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা, ধুনটে বন্যার পানি বেড়ে তলিয়ে গেছে ফসলি জমি ও পুকুরের মাছ। লাখো মানুষ নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। সিরাজগঞ্জের ৫ উপজেলার নিচু ও চর এলাকা ডুবে যাওয়ায় মানুষ বাঁধের উঁচু স্থানে অবস্থান নিয়েছে। শরীয়তপুরে পদ্মার পানি বেড়ে নতুন করে পস্নাবিত হয়েছে নড়িয়া উপজেলার ঘরিষার ও নশাশন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম। তলিয়ে গেছে মোক্তারচরের বেশির ভাগ রাস্তাঘাট।

আমরা বলতে চাই, সামগ্রিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় যত দ্রম্নত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। অনেক জায়গায় যেমন ত্রাণ পৌঁছায়নি, আবার বানভাসি মানুষের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ছড়িয়ে পড়ছে পানিবাহিত রোগ- সঙ্গত কারণেই এই বিষয়গুলোকে আমলে নিয়ে বন্যা কবলিত এলাকার দিকে দৃষ্টি দিয়ে সার্বিক পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। এটাও বিবেচনায় নেয়া প্রয়োজন, যেভাবে ভয়াবহ বন্যার আশঙ্কা করা হচ্ছে এবং যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে- তার পরিপ্রেক্ষিতে যথাযথ প্রস্তুতি না নিলে ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে থাকবে যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না। বলা দরকার, বন্যার সঙ্গে সঙ্গে পানিবাহিত রোগ-বালাই আসে। দেখা দেয় খাদ্য ও বিশুদ্ধ পানির সংকট। ফলে বর্তমানে যেভাবে পানিবাহিত রোগ ছড়ানোর খবর সামনে আসছে তার পরিপ্রেক্ষিতে করণীয় নির্ধারণ এবং যত দ্রম্নত সম্ভব সুষ্ঠু বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। সার্বিক বিষয়গুলো আমলে নিয়ে বন্যাকবলিত এলাকার মানুষের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ পৌঁছে দেয়া এবং খাদ্য ও নিরাপদ পানির ব্যবস্থা করা অপরিহার্য বলেই প্রতীয়মান হয়।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, যেভাবে বন্যার পানির তোড়ে ভেসে যাচ্ছে বসতবাড়ি এবং পর্যাপ্ত ত্রাণ সহায়তা না পেয়ে মানবেতর দিন যাপন করছে মানুষ এবং পানিবাহিত রোগ ছড়াচ্ছে- তার পরিপ্রেক্ষিতে দ্রম্নত পদক্ষেপ নিন। লাখো লাখো মানুষ নিদারুণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন- সামগ্রিক এই পরিস্থিতি মোকাবেলায় সর্বাত্মক উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক এমনটি প্রত্যাশিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<59064 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1