শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১
৫৪ নদীর পানিবণ্টন

তিস্তা চুক্তির বিষয়ে উদ্যোগ নিন

নতুনধারা
  ২২ আগস্ট ২০১৯, ০০:০০

৫৪ নদীর পানিবণ্টনে গ্রহণযোগ্য বিধি খুঁজছে দুই দেশ- এমন সংবাদ ইতিবাচক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে। আমরাও চাই দুই দেশ পানিবণ্টন সংক্রান্ত গ্রহণযোগ্য একটি সমাধানে পৌঁছাক আর তা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলেই প্রতীয়মান হয়। কিন্তু একইসঙ্গে এটাও আমলে নেয়া সমীচীন যে, তিস্তা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে বিদ্যমান সমস্যার সমাধান হচ্ছে না- যা দুঃখজনক বলেই আমরা মনে করি। যদিও তিস্তা নদীর পানিবণ্টন নিয়ে বিদ্যমান সমস্যা সমাধানে ভারত প্রতিশ্রম্নতিবদ্ধ সম্প্রতি এমনটি জানিয়েছেন প্রথমবারের মতো বাংলাদেশে সফরে আসা ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এস জয়শঙ্কর। প্রসঙ্গত উলেস্নখ করা দরকার, দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা তিস্তার পানিবণ্টন সমস্যার সমাধান সম্পর্কে ড. জয়শঙ্কর বলেছেন, 'আমাদের একটি অবস্থান আছে, আপনারা সবাই তা জানেন। এ অবস্থানে আমাদের একটি প্রতিশ্রম্নতি আছে এবং এ বিষয়ে কোনো পরিবর্তন নেই। আমাদের ৫৪ অভিন্ন নদীর পানিবণ্টনে পারস্পরিকভাবে গ্রহণযোগ্য বিধি খুঁজে পেতে অগ্রগতির অপেক্ষায় আছি আমরা।' এ ছাড়া তিস্তা নিয়ে কোনো পদক্ষেপ আছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, এটা চলমান প্রক্রিয়া। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ করা দরকার, গতকাল মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে ড. জয়শঙ্কর এসব কথা জানিয়েছেন।

আমরা উলেস্নখ করতে চাই যে, তিস্তা নদী রক্ষার লক্ষ্যে এবং সেচ প্রকল্পে ব্যবহারের জন্য পর্যাপ্ত পানি প্রবাহ নিশ্চিত করতে ভারতকে ন্যায়সঙ্গত পরিমাণ পানি ছাড়তে দিলিস্নকে দীর্ঘদিন থেকে অনুরোধ জানিয়ে আসছে ঢাকা। কেননা, তিস্তা চুক্তি এখন বাংলাদেশের এক বিস্তীর্ণ অঞ্চলের মানুষের জীবন-মরণের প্রশ্নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলেই প্রতীয়মান হয়। আমরা বলতে চাই, বাংলাদেশ ভারতের শুধু নিকট প্রতিবেশীই নয়, বরং দীর্ঘদিনের পরীক্ষিত অকৃত্রিম বন্ধু। দিলিস্ন বাংলাদেশের কাছে করিডর, ট্রান্সশিপমেন্ট, শুল্কমুক্ত পণ্য পরিবহন ও বাণিজ্য সুবিধাসহ বিভিন্ন সুবিধা পেয়েছে। এ ছাড়া ১৯৭১-এর মহান স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে ভারতের স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন ও সহযোগিতা সর্বদাই স্মরণ করা হয়। কিন্তু তিস্তা চুক্তির বিষয়ে একটি সমাধান না হওয়া নিশ্চিতভাবেই দুঃখজনক বাস্তবতাকেই সামনে আনে। আমরা মনে করি, সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে উদ্যোগী হওয়া অপরিহার্য।

এ প্রসঙ্গে বলতে চাই, এর আগে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর ঢাকা সফরকালে তিস্তা চুক্তির সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠেছিল। তবে শেষ মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি সফর বাতিল করায় তা আর হয়ে ওঠেনি। এ ক্ষেত্রে এমন অভিযোগও আছে যে, তিনি তিস্তা চুক্তির ব্যাপারে আদৌ আগ্রহী নন। আমরা মনে করি, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যকার অংশীদারত্ব যদি বৃদ্ধি পায় তবে তা দেশর জন্যই ইতিবাচক হবে। এ ছাড়া মনে রাখা দরকার, দুই দেশের সম্পর্ক অত্যন্ত গভীর ও বন্ধুত্বপূর্ণ। ফলে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে সমাধানে দ্রম্নত একটি গ্রহণযোগ্য উদ্যোগ নেয়া এবং তার যথাযথ বাস্তবায়ন কাম্য। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, তিস্তা নদীর পানিবণ্টন একটি বিশাল সমস্যা। ফলে বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে থাকা এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশকেও আরো বেশি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, কূটনৈতিক তৎপরতা বাড়াতে হবে। আমরা এটুকু বলতে চাই যে, তিস্তা চুক্তির বিষয়ে সদিচ্ছা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর প্রতিবেশী বন্ধু রাষ্ট্রের কাছে থেকে সেটি স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাশিত। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও তিস্তা চুক্তির বিষয়ে সমাধান না হওয়া নিশ্চিতভাবেই দুঃখজনক বাস্তবতাকেই সামনে আনে। আমরা মনে করি, বাংলাদেশের ন্যায়সঙ্গত দাবির বিষয়টি প্রতিবেশী দেশ ভারতকে বিবেচনা করতে হবে এবং দুই দেশ মিলে এর সমাধান নিশ্চিত করার বিকল্প নেই।

সর্বোপরি বলতে চাই, বাংলাদেশ এবং ভারত প্রতিবেশী বন্ধুত্বপূর্ণ দুই দেশ। ফলে দুই দেশের সুসম্পর্ক বিদ্যমান থাকলে তা সবারই জন্যই ইতিবাচক। এবারে ৫৪ নদীর পানিবণ্টনের যে গ্রহণযোগ্য বিধি খুঁজছে দুই দেশ তার অগ্রগতি নিশ্চত হোক এটি আমরা চাই, একইসঙ্গে তিস্তার ব্যাপারে ভারত পদক্ষেপ গ্রহণ করবে এটাও কাম্য। আমরা মনে করি, সামগ্রিক বিষয়গুলো আমলে নিয়ে দুই দেশের সুসম্পর্ককে আরো সুদৃঢ় করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখতে হবে- যা সবার জন্যই ইতিবাচক হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<63302 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1