শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

মশার সঙ্গে হুল ফোটালেন কাউন্সিলররা

মেয়রদ্বয়ের জন্যও সুনামহানির কারণ ঘটাচ্ছে বেপরোয়া মশা। নিজেদের সুনামের স্বার্থেই মশা নামের ভয়ংকর শত্রম্নকে ঠেকাতে হবে। মানুষ এখন মশার কাছে জিম্মি। এ মশা আপনাদের সুনামেই হুল ফোটাচ্ছে! হুল ফোটাবে।
মীর আব্দুল আলীম
  ০৩ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ডেঙ্গু প্রকোপ বেড়ে যাওয়া এবং মশার ওষুধ কার্যকরিতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় সুনামে হুল ফোটাচ্ছিল সিটি করপোরেশনের মেয়রদের গায়ে। এমন অবস্থায় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) বাজেট ঘোষণায় আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন করতেই সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হলেন সিটি কাউন্সিলররা। মশা নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমে ওয়ার্ড কাউন্সিলরদের সেভাবে সক্রিয় হতে দেখা যায় না কেন? এমন প্রশ্ন করতেই মেয়রের উপস্থিতিতেই সাংবাদিকের ওপর চড়াও হয়ে উঠেন কাউন্সিলররা। প্রশ্নকারী সাংবাদিক এবং অপরাপর সাংবাদিকদের প্রতি অসৌজন্যমূলক ও উদ্যত আচরণ করেন তারা। এ সময় সাংবাদিকরা কাউন্সিলরদের এমন আচরণের প্রতিবাদ করলে একপর্যায়ে বাকবিতন্ডা চরম আকার ধারণ করে। পরে মেয়রের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। এ বিষয়য়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও ভাইরাল হলে সারাদেশে সুনাম ক্ষুণ্ন্ন হয় ডিএসসিসির।

মশা মোটেও মশকরার জিনিস নয়। মশা বর্তমান মেয়র সাঈদ খোকনের পিতা অত্যন্ত জনপ্রিয় মেয়র হানিফসহ বিগত সব মেয়রদের গায়েও সুনামের হুল ফুটিয়েছে। মশাকে বশ করতে ব্যর্থ হয়েছেন সবাই। মশাকে তুচ্ছতাচ্ছিল্য করে অনেকেই বেকায়দায় পড়েছেন। আসলেই কি মশাকে বশ করা যায় না? ছোট প্রাণের হলেও অতি ক্ষমতাধর প্রাণী এই মশা! মশা ভেবে অনেকে এতে অবহেলা করেছেন। আছে দ্বায়িত্বহীনতার অভাব এবং দুর্নীতি। তাই মশা বস হবে কি করে? মশাকে বশে আনতে কামান দাগাতে হয়। কামানের গুলি যদি দুর্বল হয় মশারা বশে আসবে কি করে? তাই মশা গায়ে হুল ফুটাচ্ছে। ক্ষুদ্র এ প্রাণী আমাদের ঘুম হারাম করে দিচ্ছে। একদিকে মশার ভ্যানভ্যানানি আরেক দিকে প্রাণঘাতী মশাবাহী ডেঙ্গুর ভয়ে আমাদের ঘুম সত্যিই হারাম। জনগণের ঘুম হারাম হলেও সংশ্লিষ্ট কাউন্সিলর এবং করপোরেশনের অন্যরা কিন্তু নাকে তেল দিয়ে ঠিকই ঘুমাচ্ছেন। রাস্তা ঝাড়ু দেয়ার ফটোসেশন আর অকার্যকর ওষুধ ছিটিয়ে বিতর্কতো কম হয়নি। আর ওসব সাংবাদিকরা বললেই চটে যান কাউন্সিলররা। ভিডিওতে যা দেখলাম- মেয়র সাঈদ খোকন শান্ত না করলে হয়তো সাংবাদিকদের গায়েই হাত দিত।

মশা নিয়ে হৈচৈ কি কম হয়েছে? রীতিমতো হাইকোর্ট অতীত নিকটে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে এ পর্যন্ত কি পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন। সিটি করপোরেশনের মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাদের কাছে দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন চেয়েছে আদালত। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন সজাগ থাকলে হাইকোর্টের নাক গলানোর কোনো কারণই ছিল না। মশার প্রকোপ এবং ডেঙ্গু জ্বরের ব্যাপকতা বেড়ে যাওয়ায় দুই সিটির মালিক আর পাইক পেয়াদাদের নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গোটা ঢাকার মশা মারার ফগিং কার্যক্রম প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে ইতোমধ্যে। ওষুধের মান নিয়ে নগরবাসীর মধ্যে চলছে নানা গুঞ্জন। তা ছাড়া কার্যকর পদক্ষেপ এবং তার বাস্তবায়নও হচ্ছে প্রশ্নবিদ্ধ। দুই সিটি করপোরেশনের গাঁটের টাকা ঠিকই খসছে। মশা নিধনে ব্যাপক আয়োজন, প্রচার এবং কোটি টাকা ব্যয় হলেও কাজের কাজ কিছুই হয় না। তাই যা হওয়ার তাই হলো। শহরে ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়েছে। এ নিয়ে সর্বসাধারণের মধ্যে ডেঙ্গু আতঙ্ক বিরাজ করছে। ডেঙ্গু জ্বরে প্রতিদিন মানুষ মরছে। তাই তো এডিস মশা নিধনে হাইকোর্টকে মাথা ঘামাতে হলো।

এত কিছুর পরও খোদ রাজধানী ঢাকায় দাবড়ে বেড়াচ্ছে মশার দল। মশককুল রাজধানীতে রামরাজত্ব কায়েম করেছে। এ মশা দুই সিটি করপোরেশনের সুনামে হুল ফুটাচ্ছে বৈকি! যখন লিখছি তখন মশার দল হুল ফুটাচ্ছে পায়ে, মুখে ও গালে। মশার এ যাতনা উভয় সিটি করপোরেশনের জন্য মোটেও সুখকর নয়। এডিস মশা ডেঙ্গুর বাহক। শৌখিন ফুলের টবে, এসির জমে থাকা পানিতে, এমনকি ভালো বালতিতেও যদি কয়েকদিনের পানি থাকে সেখানেই চলে এডিস মশার জন্ম উৎসব। লার্ভা থেকে পাখা গজানোর সঙ্গে সঙ্গেই শুঁড় হানবে। আর ১৫ দিনের মধ্যেই আপনাকে পাঠাবে হাসপাতালে। তারপর অবর্ণনীয় কষ্ট আর ভোগান্তি। শেষ পরিণতি মৃতু্যও হতে পারে। এ মশার কামড়ে এরই মধ্যে বহু লোকের প্রাণ গেছে। এ বছর রাজধানীতে অন্যান্য বছরের তুলনায় মশার উৎপাত একটু বেশিই। এলাকার বাসিন্দারা এ জন্য ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের (উত্তর ও দক্ষিণ) অবহেলাকে দায়ী করেন। আমরা মনে করি, বিরক্তিকর এবং আতঙ্কজনক মশা নিধনে সিটি করপোরেশনের কার্যকর পদক্ষেপই যথেষ্ট। সিটি করপোরেশন সচেষ্ট হলে সহসাই মশা প্রকোপ কমে আসবে বলে আমরা মনে করি।

রাজধানী ঢাকার রাজনীতিতে মশা সব সময়ই একটি বড় ইস্যু। ঢাকার অন্তত ৪ জন মেয়রের জন্য বিড়ম্বনা ডেকে এনেছে এই ক্ষুদ্র অথচ ভয়ঙ্কর কীট। সাবেক মেয়র সাদেক হোসেন খোকার জন্যও সুনামহানির কারণ হয় বেপরোয়া মশা। সাঈদ খোকন এমনকি প্রয়াত জনপ্রিয় মেয়র আনিসুল হকও মশা নিয়ে বিড়ম্বনায় পড়েন। খুদে এ কীটের বিড়ম্বনা কিন্তু অনেক। বিপদ না চাইলে দুই ডিসিসির মেয়রসহ সিটি করপোরেশনের কর্তাব্যক্তিদের কুম্ভকর্ণের ঘুম থেকে জাগতে হবে। নিজেদের সুনামের স্বার্থেই মশা নামের ভয়ঙ্কর শত্রম্নকে এখনই ঠেকাতে হবে। মানুষ এখন মশার কাছে জিম্মি। দোহাই আপনাদের মশা ঠেকান! এখানে ব্যর্থ হলে জনগণ তার জবাব দেয়ই দেয়। বিগত ইতিহাস থেকে তাই শিখেছি আমরা। আজকাল মশা যেভাবে কামড়াচ্ছে তাতে নির্বাচনের সময় কামড়ের জ্বালা বোধ করি সিটি মেয়ররা টের পাবেন। মশা অতি ক্ষুদ্র এক কীট হলেও ক্ষমতার গদি নড়বড়ে করতে এর জুড়ি নেই। মশা নিধনে ব্যর্থ হয়ে অনেকে পড়েছেন বিপাকে। এর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক থাকার কথা নয়। তারপরও ঢাকার রাজনীতিতে মশা বরাবরই একটি বড় ইস্যু।

প্রশ্ন হলো- মশা নির্মূলে কি করছে দুই সিটি করপোরেশন? ডিসিসি উত্তর ও দক্ষিণে মশা নিধনের জন্য এক হাজারের ওপর মশক শ্রমিক কর্মরত আছে। নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ডে ৫-৬ জন কর্মী আছে বলে পত্রিকায় জেনেছি। যাদের কাজ শুধু মশার ওষুধ ছিটানো। প্রতি বছর মশা নির্মূলে প্রায় ৫০ কোটি টাকারও বেশি বরাদ্দ পায় দুই সিটি করপোরেশন। এত কিছুর পরও রাজধানীতে দিন দিন মশার প্রকোপ বেড়েছে কেন? এই বিপুল জনবল আর বিপুল পরিমাণ অর্থের সঠিক ব্যবহার হলে তো নগরীতে এভাবে মশা থাকার কথা নয়?

সমস্যা আছে অনেক। জেনেছি, লোকবল আছে, ওষুধ আছে- তবে সে ওষুধ ঠিকঠাকমতো ছিটায় কি না তার মনিটরিং নেই। এত লোক সারা বছর কাজ করলে, এত অর্থ ব্যয় করলে তো নগরীতে মশা জন্মানোর কথা না। মূল কথা হলো যেখানে মশার জন্ম হয়, সেখানে ওষুধ পড়েই না। কর্মীরা নাকে তেল দিয়ে ঘুমালে মশা তো বাড়বেই। পত্রিকায় মশা বাড়ার খবর ছাপা হলে কিছুটা দৌড়ঝাঁপ দেখা যায়। এভাবে নগরীর মশা নিধন হবে না। মশারা আয়েশেই হুল ফুটাবে সবার গায়ে। মশা নিধনের জন্য অর্থ জনবলের পাশাপাশি মনিটরিং দরকার। মশা নিধন করা না গেলে, এই মশার মাধ্যমে মারাত্মক রোগ ছড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে। এডিস মশাসহ অন্যদের প্রজনন নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে তা ভয়াবহ যন্ত্রণার কারণ হবে বৈকি!। সুতরাং মশা নিধনে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণে ন্যূনতম গাফিলতি চলবে না। আমরা এও মনে করি, সিটি করপোরেশনদ্বয়ের পক্ষে এ কাজ করা খুব সহজসাধ্য হবে না যদি না নগরবাসীর কাছ থেকে যথাযথ সহায়তা আসে। নগরবাসীর উচিত, নগর বসবাসযোগ্য, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও স্বাস্থ্যসম্মত রাখার ক্ষেত্রে সক্রিয় ভূমিকা রাখা। কর্তৃপক্ষীয় উদ্যোগ ও ব্যবস্থার পাশাপাশি নাগরিক সচেতনতা ও নাগরিক দায়িত্ববোধই পারে এই নগরকে মশামুক্ত রাখতে।

ঢাকা সিটি করপোরেশন মশা নিধনের ব্যাপারে বড় বড় কথা বললেও বাস্তবে নগরবাসীকে মশা থেকে রক্ষার সুনির্দিষ্ট কোনো পরিকল্পনা তাদের নেই। অভিজাত ও গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি এলাকা ছাড়া মশক নিধন কর্মীদের নগরীর অন্য কোথাও দায়িত্ব পালন করতে খুব একটা দেখা যায় না। যদিও ডিসিসি কর্তৃপক্ষ বলছেন, লিকুইড ইনসেক্টিসাইড নামক কীটনাশক দিয়ে নগরীতে উড়ন্ত মশা নিধনের বিশেষ ক্রাশ প্রোগ্রাম শুরু হয়েছে। কিন্তু মানুষ এখনো তার বাস্তবায়ন পরখ করতে পারছে না। বরং দিন দিন পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে। আবদ্ধ ডোবানালা ও ড্রেনগুলোয় মশার বিস্তার ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলেছে। কর্মসূচি বাস্তবায়নে ডিসিসিকে আরও জোরালো ভূমিকা গ্রহণ করা উচিত।

বলার অপেক্ষা রাখে না, মশা নিধনের ক্ষেত্রে উপযুক্ত পরিকল্পনা ও চিন্তাভাবনার অভাব যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছে জবাবদিহিতা ও মনিটরিংয়ের অভাবও। কোথাও কোথাও ওষুধ ছিটিয়ে কিংবা ফগার মেশিন চালিয়ে মশা দমন আদৌ সম্ভব নয়। মশা দমন ও নিধন করতে হলে মশার প্রজনন ক্ষেত্রের দিকে সর্বাগ্রে দৃষ্টি দিতে হবে। গোটা শহর কার্যত ময়লা-আবর্জনায় ভাগাড় হয়ে আছে। রয়েছে মাইলের পর মাইল খোলা নর্দমা। দুই সিটি কপোরেশন এলাকায় প্রায় তিন হাজার বিঘা ময়লা ফেলার জায়গা রয়েছে। এসব জায়গায় ফেলা ময়লা ঠিকমতো পরিষ্কার করা হয় না। ময়লা ফেলার স্থানগুলো মশা প্রজননের একেকটা 'উৎকৃষ্ট' ক্ষেত্র। খোলা নর্দমাগুলোও যথাসময়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয় না। মশার বংশবিস্তারে নর্দমাগুলোর বড় রকমের ভূমিকা রয়েছে। শুধু তাই নয়, দুই সিটি করপোরেশন এলাকায় প্রায় তিন হাজার বিঘা জলাশয় রয়েছে এবং প্রায় প্রতিটি জলাশয়ই ময়লা-আবর্জনার স্তূপে পূর্ণ। এগুলোও মশার উৎস হিসেবে কাজ করছে। মশার প্রজননস্থলগুলো অবারিত ও উন্মুক্ত রেখে মশা দমন ও নিধনে সফল হওয়া কোনোভাবেই সম্ভব হতে পারে না।

এ বছর রাজধানীতে অন্যান্য বছরের তুলনায় মশার উৎপাত বেশি। এলাকার বাসিন্দারা এ জন্য ঢাকা সিটি করপোরেশনের (ডিসিসি) অবহেলাকে দায়ী করেন। তাদের মতে, বছরের নির্দিষ্ট সময় ডিসিসি মশার প্রজনন ক্ষেত্রগুলোতে ওষুধ ছিটানো হয়। এতে মশার বংশবৃদ্ধি কম হয়। কিন্তু এ বছর তা করা হয়নি। নাগরিকদের এ অভিযোগের সত্যতা মিলল নগর কর্তৃপক্ষের কথায়ও। তারা বলছে, ওষুধ সংকটের কারণে মশা নিধনে নিয়মিত কর্মসূচি এবার চালাতে পারেনি তারা। ঘরে-বাইরে সব জায়গায় মশার অত্যাচার। চায়ের দোকানে বসলেই মশা কামড়াতে শুরু করে। এলাকার নর্দমাগুলোতে আবর্জনা জমে থাকে। ডিসিসি আবর্জনা নিয়মিত পরিষ্কার করে না। এলাকাবাসীও নিজের বাড়ির আঙ্গিনা পরিষ্কার রাখে না। তাই, মশা রাতেও কামড়ায়, দিনেও কামড়ায়। আগে দিনের বেলা এরা আন্ডারগ্রাউন্ডে অর্থাৎ ম্যানহোলে আত্মগোপন করে থাকত। রাতে বেরিয়ে আসত। এখন দিনরাত সবসময়ই এদের সমান আনাগোনা। রাতে বরং এদের আনাগোনা থেকে বাঁচার জন্য মশারির ভেতর আশ্রয় নেয়া যায় কিন্তু দিনের বেলায় মানুষের দিবানিদ্রার অরক্ষিত অবস্থার সুযোগ নিয়ে দিব্যি হুল ফুটিয়ে দেয় মশা। অবাধে চুষে নেয় তাজা রক্ত। এরা কানের কাছে ভোঁ ভোঁ শব্দ করে মানুষের ঘুমের বারোটা বাজায়।

লক্ষ্য করা গেছে, সুনির্দিষ্ট কিছু অভিজাত এলাকা ছাড়া কোথাও ক্রাশ প্রোগ্রামের বাস্তবায়ন কম। যা অত্যন্ত দুঃখজনক। কারণ প্রায় দেড় কোটি জনসংখ্যা অধ্যুষিত মহানগরীতে নাগরিকদের সব সুযোগ-সুবিধার প্রাপ্তি একই মানদন্ডে বিচার্য হলেও অন্তত সার্বিক বিচারে কিছু কিছু বিষয়ে সব নাগরিকের প্রাপ্তিতে সমতা থাকা উচিত। কারণ দিনভর পরিশ্রম করে একটি নির্বিঘ্ন ও সুখকর রাত সবাই প্রত্যাশা করে। আমাদের মনে রাখা উচিত, বিশাল বিশাল অট্টালিকার বাইরেও এ মহানগরীতে প্রায় চলিস্নশ লাখ লোক বস্তিতে বসবাস করে। সামর্থ্যহীন এ লোকগুলোর জীবন-জীবিকার দায়ভার বহন করাই যখন কষ্টসাধ্য, সে ক্ষেত্রে মশার উপদ্রব থেকে নিজেকে রক্ষার বিকল্প তাদের আর কি-ই বা থাকতে পারে। এ নগরীর রক্ষাকর্তারা কি তা কোনোদিন ভেবে দেখেছেন?

মশা ক্ষুদ্র কীট। কিন্তু তার বিধ্বংসী ক্ষমতা ক্ষুদ্র নয়। বলা হয়, রাজা নমরুদকে জব্দ করতে আলস্নাহ পৃথিবীতে মশা পাঠিয়েছিলেন। মশার কামড়ে ধ্বংস হয়ে যায় নমরুদ বাহিনী। আত্মগর্বি রাজার জন্যও মৃতু্য ডেকে আনে এই ক্ষুদ্র কীট। আগেই বলেছি, রাজধানী ঢাকার রাজনীতিতে মশা সব সময়ই একটি বড় ইস্যু। ঢাকার অন্তত ৪ জন মেয়রের জন্য বিড়ম্বনা ডেকে এনেছে এই ক্ষুদ্র অথচ ভয়ঙ্কর কীট।

মেয়রদ্বয়ের জন্যও সুনামহানির কারণ ঘটাচ্ছে বেপরোয়া মশা। নিজেদের সুনামের স্বার্থেই মশা নামের ভয়ংকর শত্রম্নকে ঠেকাতে হবে। মানুষ এখন মশার কাছে জিম্মি। এ মশা আপনাদের সুনামেই হুল ফোটাচ্ছে! হুল ফোটাবে।

মীর আব্দুল আলীম: সাংবাদিক, কলামিস্ট ও গবেষক

ব-সধরষ-হবংিংঃড়ৎবসরৎ@মসধরষ.পড়স

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<65103 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1