শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অ্যানথ্রাক্স নিয়ে উদ্বেগ

কার্যকর পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

যে কোনো রোগ ছড়িয়ে পড়লে তা স্বাভাবিকভাবেই উদ্বেগজনক পরিস্থিতিকে স্পষ্ট করে। সম্প্রতি জানা গেছে দেশের কয়েকটি জেলায় অ্যানথ্রাক্স রোগ ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় সেসব এলাকার মানুষের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। আমরা মনে করি, এই বিষয়টি আমলে নিয়ে যত দ্রম্নত সম্ভব কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ ও তার সুষ্ঠু বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে সংশ্লিষ্টদের। এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না, দেশে এমনিতেই চিকিৎসাসংক্রান্ত নানাবিধ সংকট বিদ্যমান। এছাড়া চিকিৎসকের সংখ্যাও প্রয়োজনের তুলনায় কম। ফলে কোনো রোগ ছড়িয়ে পড়লে দিশাহারা পরিস্থিতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে, এ ক্ষেত্রে করণীয় নির্ধারণ করে তার পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণের কোনো বিকল্প থাকতে পারে না।

প্রসঙ্গত বলা দরকার, মানুষের অ্যানথ্রাক্স মূলত দুই ধরনের হয়ে থাকে- এক ধরনের অ্যানথ্রাক্স হয় পরিপাকতন্ত্রে, আরেক ধরনের অ্যানথ্রাক্স শরীরের বাইরের অংশে সংক্রমণ ঘটায়। পরিপাকতন্ত্রে অ্যানথ্রাক্স জীবাণুর সংক্রমণ হলে সাধারণত হালকা জ্বর, মাংসপেশিতে ব্যথা, গলা ব্যথার মতো উপসর্গ দেখা দিতে পারে। তবে উলেস্নখ্য, বাংলাদেশে যে অ্যানথ্রাক্স দেখা যায় তা শরীরের বাইরের অংশে প্রভাব ফেলে। এ ধরনের অ্যানথ্রাক্সে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ফোঁড়া বা গোটা হয়ে থাকে। আর ফোঁড়া ঠিক হয়ে গেলে হাতে, মুখে বা কাঁধের চামড়ায় দাগ দেখা যেতে পারে। যেসব এলাকায় গবাদিপশু পালন করা হয় সেসব এলাকাতেই সাধারণত অ্যানথ্রাক্সের প্রকোপ বেশি দেখা যায়। আমরা বলতে চাই, যখন অ্যানথ্রাক্স রোগ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়টি সামনে আসছে তখন তা গুরুত্বসহকারে আমলে নিতে হবে সংশ্লিষ্টদেরই। বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (আইইডিসিআর) পরিচালক জানিয়েছেন, দেশে সাধারণত কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকাতেই অ্যানথ্রাক্স হয়ে থাকে। 'অ্যানথ্রাক্স গরু, ছাগল, মহিষ- এ ধরনের প্রাণীর মধ্যে প্রথম দেখা যায়। এসব প্রাণীর মাধ্যমেই অ্যানথ্রাক্স মানুষের মধ্যে ছড়ায়। আর মূলত অ্যানথ্রাক্স আক্রান্ত পশুর মাংস কাটার সময় মানুষের মধ্যে অ্যানথ্রাক্স ছড়ানোর সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে বলেও জানা গেছে।

আমরা মনে করি এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে মূলত দুই ধরনের পদক্ষেপ নেয়ার বিষয় সামনে এসেছে। প্রথমত, যাদের গরু, মহিষ, ছাগলের মতো গবাদিপশু রয়েছে, তারা যেন তাদের পশুকে নিয়মিত অ্যানথ্রাক্সের টিকা দেন, এবং তা নিশ্চিত করতে হবে। আর পশুর যদি অ্যানথ্রাক্স হয়েই যায়, সে ক্ষেত্রে পশুকে দ্রম্নত মাটির নিচে পুঁতে ফেলা প্রয়োজন। আমরা মনে করি, সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে করণীয় সম্পর্কে ব্যাপক প্রচারণাও জরুরি যেন মানুষ সচেতন হতে পারে। মনে রাখতে হবে, এভাবে রোগ ছড়িয়ে পড়লে তা অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, দেশে অ্যানথ্রাক্স রোগ নিয়ন্ত্রণের ধারণা ও পদক্ষেপ বাস্তবসম্মত নয়। ফলে এই বিষয়টিকে সামনে রেখে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে হবে। এছাড়া অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণের ব্যাপারে কিছু পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হলেও এই রোগ নির্মূলে দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ নাই এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছে। সঙ্গত কারণেই বিষয়টি অনুধাবন করে অ্যানথ্রাক্স নির্মূলে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের বিকল্প নেই। আর এটিও আমলে নেয়া সমীচীন- যেহেতু পশু থেকে মানুষের মধ্যে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ হলেও মানুষ থেকে অন্য মানুষের মধ্যে অ্যানথ্রাক্স সংক্রমণ হয় না বলে জানা যাচ্ছে, সে ক্ষেত্রে মানুষের অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণের জন্য পশুর অ্যানথ্রাক্স নিয়ন্ত্রণই যথেষ্ট। সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে অ্যানথ্রাক্স প্রতিরোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকুক এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<66132 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1